ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিন্ডিকেট নেই! বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ ৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঝিনাইদহে সবজির বাজারে আগুন। চরম বিপাকে পড়ে গুমরে গুমরে কাঁদছে স্বল্প আয়ের মানুষ। লাগামহীন সবজির বাজার থেকে খালি ব্যাগে ফিরছে অনেক ক্রেতা। বাজারে ঢুকলে দেখা মিলবে হরেক রকমের সবজি। কিন্তু পছন্দের সবজিতে কড়াই-খুন্তির মিলন ঘটাতে পারছে না অনেক ভোঁজন রাসিক। আর সবজি বাজারের আগুনের তাপ এখন ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলার হাজার হাজার কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান, রিকসা, ইজিবাইক চালকের পরিবারের পাশাপাশি চাকরিজীবী ও মধ্যবিত্ত পরিবারেও লেগেছে ।

নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষই যেন অসহায় অবস্থায় পড়েছে। আর সবজির বাজারে ঢুকলে সকলের যেন চাঁপা কাঁন্না করতে হচ্ছে। যা বুঝানোর ভাষা হারিয়ে ফেলছে। আসহায় মানুষের এমন চাঁপা কাঁন্না থামবে কবে?

জানা গেছে, এখানকার সবজির হাট-বাজারগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রিতিমত সবজির বাজারে আগুন জলছে। বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি শাক-সবজি আবাদ করা হলেও দাম যেন কমছেই না।

সরেজমিনে শহরের নতুন হাটখোলার কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজি বিক্রেতারা প্রতি কেজি মরিচ ৩২০, টমেটো ১৮০, বেগুন ১৫০, ঢেঁড়শ ১২০, উস্তে ১২০, পটল ১০০, মুলা ১০০, ফুলকপি ১৫০, পাতাকপি ৯০, আমড়া ১২০, শষা ৯০, গাজর ১০০, মুখিকচু ৮০, কাবিল কচু ৬০, বুনো কচু ৬০, মেটে আলু ৮০, কাকরোল ১৫০, পেঁপে ৬০, উষি ৮০, ধুন্দল ৭০, ঝিংগা ৮০, কচুরলতি ৭০, ওল ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৮০, লাউ ৭০, সিম ২৫০, পুইশাকের মেছরি ১৩০, বড়বটি ১০০, আলু ৬০, পিয়াজ ১৩০, রসুন ২৫০, আদা ১৬০ ও শুকনা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

এ ছাড়া প্রতি আঁটি লাল শাক ৩০, পুইশাক ৩০, কলমী শাক ২৫, শাপলা ফুলের লতি ৬০, কাবিল কচুর ডাটা ৩০, ডাটা ৪০, ধনিয়া পাতা শ ১০০ টাকা ও প্রতিহালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা এবং লেবু হালি ৪০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

মাত্র এক থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে সবজির দাম ডাবল হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সবজি চাষিদের কাছ থেকে স্বাভাবিক দামে পাইকারি সবজি ক্রয় করে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো ক্রেতাদের কাছ থেকে খুচরা দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন। তবে একাধিক সবজি বিক্রেতার দাবি, টানা একমাসের বৃষ্টিতে জেলার সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই সবজি সংকটের সৃষ্টি হওয়ায় হু হু করে দাম বাড়ছে। এখানে তাদের কিছু করার নেই।

তারা বলেন, বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। বেশি দামে সবজি ক্রয় করে, বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় আমরা নিজেরাও সবজি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি।

সবজি কিনতে আসা দিনমজুর জামিরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ গরীব। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষ কৃষিকাজ, শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান, রিকসা ও ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালায়। একজন দিনমজুর ও একজন ভ্যানচালক প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা উপার্জন করে। আর যদি বৃষ্টি-বাদল লেগেই থাকে তাহলে ঘরে বসে থেকে দেনা হয়ে সংসার চালাতে হয়। আবার অনেককে না খেয়েও থাকতে হয়। বর্তমানে তো বৃষ্টি নামছে পুরোদমে। যা দুই তিন দিন ধরে। এখন বেশিরভাগ গরিবরা বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছে।

এমন অবস্থায় বাজারে যদি অস্বাভাবিকভাবে ডিম, চাল-ডাল, মাছ-মাংস ও সবজির দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা কীভাবে বাঁচবো। আর কি খেয়েই বা বাঁচবো ?

বাবলু নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে গেলে বোঝা যায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কেমন মাত্রা যোগ হয়েছে। এক হাজার টাকার নোটে ৩/৪ আইটেম পণ্য নিলে ফুরিয়ে যায়। মানুষের জীবনযাপনে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যারা দিনমজুর নি¤œ আয়ের মানুষ তাদের অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। জবাবদিহিতা করার কেউ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন চোখে পড়ার মতো মনিটরিং করা হচ্ছে না।

আলমঙ্গীর হোসেন নামের দিনমুজুরী অন্য ক্রেতা বলেন, আমাদের মতো গরীব মানুষের সবচেয়ে বড় জ্বালা। যা ইনকাম করি তা দিয়ে কোন রকম ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকা যেন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। মাছ ও মাংস তো মাসে ১দিন কিনতে হিমসিম খাই। ঘরে ছোট তিন ছেলে-মেয়ে তারাও নিয়মিত ডাল দিয়ে খেতে চাই না। তারা মাছ ও মাংসের জন্য বায়না ধরে। সেকারণে অনেক কষ্ট করে হলেও সাধ্য অনুযায়ী কেনার চেষ্টা করি। চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের মতো গরীবের হয়েছে যত জ্বালা যেন আমাদের দেখার কেউ নেই।

অনেকে ক্রেতা বলেন, এখন কেন সিন্ডিকেট হবে? এসব সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে। আয় অনুযায়ী ব্যয় বেড়েছে। বারবার সিন্ডিকেট দ্বারা দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করানো কথা বললে ও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ করলেই এসব সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্প্রতি বৃষ্টি ও খরার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তাদের মতে, এক মাসেরও বেশী লাগাতার বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির দাম বেড়েছে। মূলত অতিবৃষ্টি প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে।

ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ডিমের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগে ৪৮ টাকা হালি থাকলেও তা বেড়ে এখন ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির ফলে বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, আমরা সবজি বাজার মনিটরিং করছি। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সদর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল জানান, ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেলার ২০টি হাট বাজারের কাচাঁ বাজার মনিটরিং করেছেন। এটি চলমান থাকবে। সেই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সিন্ডিকেট নেই! বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

ঝিনাইদহে সবজির বাজারে আগুন। চরম বিপাকে পড়ে গুমরে গুমরে কাঁদছে স্বল্প আয়ের মানুষ। লাগামহীন সবজির বাজার থেকে খালি ব্যাগে ফিরছে অনেক ক্রেতা। বাজারে ঢুকলে দেখা মিলবে হরেক রকমের সবজি। কিন্তু পছন্দের সবজিতে কড়াই-খুন্তির মিলন ঘটাতে পারছে না অনেক ভোঁজন রাসিক। আর সবজি বাজারের আগুনের তাপ এখন ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলার হাজার হাজার কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান, রিকসা, ইজিবাইক চালকের পরিবারের পাশাপাশি চাকরিজীবী ও মধ্যবিত্ত পরিবারেও লেগেছে ।

নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষই যেন অসহায় অবস্থায় পড়েছে। আর সবজির বাজারে ঢুকলে সকলের যেন চাঁপা কাঁন্না করতে হচ্ছে। যা বুঝানোর ভাষা হারিয়ে ফেলছে। আসহায় মানুষের এমন চাঁপা কাঁন্না থামবে কবে?

জানা গেছে, এখানকার সবজির হাট-বাজারগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রিতিমত সবজির বাজারে আগুন জলছে। বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি শাক-সবজি আবাদ করা হলেও দাম যেন কমছেই না।

সরেজমিনে শহরের নতুন হাটখোলার কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজি বিক্রেতারা প্রতি কেজি মরিচ ৩২০, টমেটো ১৮০, বেগুন ১৫০, ঢেঁড়শ ১২০, উস্তে ১২০, পটল ১০০, মুলা ১০০, ফুলকপি ১৫০, পাতাকপি ৯০, আমড়া ১২০, শষা ৯০, গাজর ১০০, মুখিকচু ৮০, কাবিল কচু ৬০, বুনো কচু ৬০, মেটে আলু ৮০, কাকরোল ১৫০, পেঁপে ৬০, উষি ৮০, ধুন্দল ৭০, ঝিংগা ৮০, কচুরলতি ৭০, ওল ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৮০, লাউ ৭০, সিম ২৫০, পুইশাকের মেছরি ১৩০, বড়বটি ১০০, আলু ৬০, পিয়াজ ১৩০, রসুন ২৫০, আদা ১৬০ ও শুকনা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

এ ছাড়া প্রতি আঁটি লাল শাক ৩০, পুইশাক ৩০, কলমী শাক ২৫, শাপলা ফুলের লতি ৬০, কাবিল কচুর ডাটা ৩০, ডাটা ৪০, ধনিয়া পাতা শ ১০০ টাকা ও প্রতিহালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা এবং লেবু হালি ৪০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

মাত্র এক থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে সবজির দাম ডাবল হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সবজি চাষিদের কাছ থেকে স্বাভাবিক দামে পাইকারি সবজি ক্রয় করে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো ক্রেতাদের কাছ থেকে খুচরা দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন। তবে একাধিক সবজি বিক্রেতার দাবি, টানা একমাসের বৃষ্টিতে জেলার সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই সবজি সংকটের সৃষ্টি হওয়ায় হু হু করে দাম বাড়ছে। এখানে তাদের কিছু করার নেই।

তারা বলেন, বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। বেশি দামে সবজি ক্রয় করে, বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় আমরা নিজেরাও সবজি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি।

সবজি কিনতে আসা দিনমজুর জামিরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ গরীব। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষ কৃষিকাজ, শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান, রিকসা ও ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালায়। একজন দিনমজুর ও একজন ভ্যানচালক প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা উপার্জন করে। আর যদি বৃষ্টি-বাদল লেগেই থাকে তাহলে ঘরে বসে থেকে দেনা হয়ে সংসার চালাতে হয়। আবার অনেককে না খেয়েও থাকতে হয়। বর্তমানে তো বৃষ্টি নামছে পুরোদমে। যা দুই তিন দিন ধরে। এখন বেশিরভাগ গরিবরা বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছে।

এমন অবস্থায় বাজারে যদি অস্বাভাবিকভাবে ডিম, চাল-ডাল, মাছ-মাংস ও সবজির দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা কীভাবে বাঁচবো। আর কি খেয়েই বা বাঁচবো ?

বাবলু নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে গেলে বোঝা যায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কেমন মাত্রা যোগ হয়েছে। এক হাজার টাকার নোটে ৩/৪ আইটেম পণ্য নিলে ফুরিয়ে যায়। মানুষের জীবনযাপনে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যারা দিনমজুর নি¤œ আয়ের মানুষ তাদের অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। জবাবদিহিতা করার কেউ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন চোখে পড়ার মতো মনিটরিং করা হচ্ছে না।

আলমঙ্গীর হোসেন নামের দিনমুজুরী অন্য ক্রেতা বলেন, আমাদের মতো গরীব মানুষের সবচেয়ে বড় জ্বালা। যা ইনকাম করি তা দিয়ে কোন রকম ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকা যেন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। মাছ ও মাংস তো মাসে ১দিন কিনতে হিমসিম খাই। ঘরে ছোট তিন ছেলে-মেয়ে তারাও নিয়মিত ডাল দিয়ে খেতে চাই না। তারা মাছ ও মাংসের জন্য বায়না ধরে। সেকারণে অনেক কষ্ট করে হলেও সাধ্য অনুযায়ী কেনার চেষ্টা করি। চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের মতো গরীবের হয়েছে যত জ্বালা যেন আমাদের দেখার কেউ নেই।

অনেকে ক্রেতা বলেন, এখন কেন সিন্ডিকেট হবে? এসব সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে। আয় অনুযায়ী ব্যয় বেড়েছে। বারবার সিন্ডিকেট দ্বারা দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করানো কথা বললে ও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ করলেই এসব সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্প্রতি বৃষ্টি ও খরার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তাদের মতে, এক মাসেরও বেশী লাগাতার বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির দাম বেড়েছে। মূলত অতিবৃষ্টি প্রভাব পড়েছে সবজির বাজারে।

ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় ডিমের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগে ৪৮ টাকা হালি থাকলেও তা বেড়ে এখন ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির ফলে বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, আমরা সবজি বাজার মনিটরিং করছি। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সদর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল জানান, ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেলার ২০টি হাট বাজারের কাচাঁ বাজার মনিটরিং করেছেন। এটি চলমান থাকবে। সেই খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।