ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক্তারী পরিক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র পশু জবাই, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

সরকার লুৎফর রহমান,গাইবান্ধা
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে নির্দিষ্ট জবাইখানা না থাকায় দীর্ঘ বছর ধরে পশু জবাই হচ্ছে যত্রতত্র। ফলে উচ্ছিষ্ট ও রক্তের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার রাস্তার পাশে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। পশু রোগমুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করে জবাইয়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার হাট বাজারগুলোতে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও পৌরসভার সেনেটারী অফিসারের উপর নির্দেশ থাকলেও জনবলের অভাবে পশু জবাইয়ের পূর্ব পরীক্ষা করেন না।

এছাড়াও গরুর মাংশের গুনগত মান নির্ণয় এবং দাম নির্ধারণে কোন তদারকি না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রায়ই পুরনো ফ্রিজের বাসি মাংশ বিক্রি হয়। বিক্রেতারা দাম নির্ধারণ করে নিজেদের ইচ্ছেমতো। মাংস সামনে পাশরা সাজিয়ে ৬/৭ ঘন্টা পরেও বিক্রি করছে ব্যবসায়ীগণ নাই কোনো জবাবদিহিতা।

দীর্ঘদিন হতে মৌখিক অভিযোগ আসছে রোগাক্রান্ত, দুর্বল গরু, ছাগল জবাই করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এসব পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে বিক্রি হচ্ছে মাংস। যেন দেখার কেউ নেই। কসাইদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি উপজেলাবাসী। নিজেদের ইচ্ছেমত দাম বসিয়ে মাংস বিক্রি করছে কসাইরা।

উপজেলার অধিকাংশ মাংসের দোকানে পশু জবাই করার নেই কোনো জবাইখানা। এদিকে পৌরসভার কোন প্রকার জবাইখানা না থাকায়,বেশীর ভাগ পশু জবাই করা হয় মহাসড়কের পাশে। ফলে পশুর রক্ত, পাকস্থলীর গন্ধে সড়ক পথে যাতায়াত করতে প্রতিনিয়ত দুভোর্গে পড়তে হচ্ছে পথচারী, শিক্ষার্থী সহ সাধারণ জনগণকে। জবাইখানা ও পশুর শরীরের অতিরিক্ত অংশ পচানোর জন্য কোন সুদীর্ঘ গর্ত বা যন্ত্র না থাকার কারণে পশুর নাড়িবুড়ি পচে দূর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।

পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারী পরীক্ষা করেন কিনা জানতে চাইলে পলাশবাড়ী পৌরসভার জয়নাল আবেদীন নামক এক মাংস বিক্রেতা জানান, আমরা পশু জবাই করি ভোর রাত্রে তাছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া পশু জবাই করলেও প্রশাসনের লোকজন কখনো আমাদেরকে বাঁধা দেয়নি। আমরা সুস্থ পশুই সব সময় জবাই করে থাকি।

উপজেলার মাঠেরহাট বাজারের মাংস ক্রয় করতে আসা জাকির হোসেন জানান,পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল, তা-ও জানেন না তাঁরা। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরণের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া পশুর মাংস, নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই।আমি অনেকটা কসাইদের অন্ধ বিশ্বাস করে মাংস কিনে থাকি।একই কথা জানান একাধিক বাজারের একাধিক ক্রেতারা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোঃ হারুন অর রশীদ জানান, ডাক্তারী পরিক্ষার বিষয় টা পৌরসভার সেনেটারী অফিসারের এমন কথা বললে পৌরসভার বাহিরের বাজার গুলোতে কে দেখবেন বলে জানতে চাইলে পূনরায় বলেন আমরাও একেবারে দায় এড়াতে পারি না তবে আমাদের সক্ষমতা না থাকায় করতে পারি না।

তবে আমরা বছরে একবার হলেও বিভিন্ন বাজারের কশাইদের কে সমবেত করে ট্রেনিং দিয়েছি। পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রন আইন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি পাশাপাশি পশুদের যেসব ভাইরাস থাকলে জবাই করা যাবে না সেই বিষয়ে তাদের’কে সচেতন বৃদ্ধি করার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আল- ইয়াসা রহমান তাপাদার বলেন, পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অতি জরুরী একটি বিষয় যা দ্রুত কার্যকরের ব্যবস্থা নেয়া হবে, জবাইখানার বিষয়ে বলেন জায়গা খোঁজা হচ্ছে শীঘ্রই সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ফ্রিজে রাখা পচা মাংস ও বিক্রয়ের সময় বেশি মূল্য নিচ্ছে এই বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খবর নিয়ে দেখছি, যদি এমন কোনো বিষয় থাকে তাহলে অবশ্যই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ডাক্তারী পরিক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র পশু জবাই, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৪৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে নির্দিষ্ট জবাইখানা না থাকায় দীর্ঘ বছর ধরে পশু জবাই হচ্ছে যত্রতত্র। ফলে উচ্ছিষ্ট ও রক্তের কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার রাস্তার পাশে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। পশু রোগমুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করে জবাইয়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার হাট বাজারগুলোতে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও পৌরসভার সেনেটারী অফিসারের উপর নির্দেশ থাকলেও জনবলের অভাবে পশু জবাইয়ের পূর্ব পরীক্ষা করেন না।

এছাড়াও গরুর মাংশের গুনগত মান নির্ণয় এবং দাম নির্ধারণে কোন তদারকি না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রায়ই পুরনো ফ্রিজের বাসি মাংশ বিক্রি হয়। বিক্রেতারা দাম নির্ধারণ করে নিজেদের ইচ্ছেমতো। মাংস সামনে পাশরা সাজিয়ে ৬/৭ ঘন্টা পরেও বিক্রি করছে ব্যবসায়ীগণ নাই কোনো জবাবদিহিতা।

দীর্ঘদিন হতে মৌখিক অভিযোগ আসছে রোগাক্রান্ত, দুর্বল গরু, ছাগল জবাই করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এসব পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে বিক্রি হচ্ছে মাংস। যেন দেখার কেউ নেই। কসাইদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি উপজেলাবাসী। নিজেদের ইচ্ছেমত দাম বসিয়ে মাংস বিক্রি করছে কসাইরা।

উপজেলার অধিকাংশ মাংসের দোকানে পশু জবাই করার নেই কোনো জবাইখানা। এদিকে পৌরসভার কোন প্রকার জবাইখানা না থাকায়,বেশীর ভাগ পশু জবাই করা হয় মহাসড়কের পাশে। ফলে পশুর রক্ত, পাকস্থলীর গন্ধে সড়ক পথে যাতায়াত করতে প্রতিনিয়ত দুভোর্গে পড়তে হচ্ছে পথচারী, শিক্ষার্থী সহ সাধারণ জনগণকে। জবাইখানা ও পশুর শরীরের অতিরিক্ত অংশ পচানোর জন্য কোন সুদীর্ঘ গর্ত বা যন্ত্র না থাকার কারণে পশুর নাড়িবুড়ি পচে দূর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।

পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারী পরীক্ষা করেন কিনা জানতে চাইলে পলাশবাড়ী পৌরসভার জয়নাল আবেদীন নামক এক মাংস বিক্রেতা জানান, আমরা পশু জবাই করি ভোর রাত্রে তাছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া পশু জবাই করলেও প্রশাসনের লোকজন কখনো আমাদেরকে বাঁধা দেয়নি। আমরা সুস্থ পশুই সব সময় জবাই করে থাকি।

উপজেলার মাঠেরহাট বাজারের মাংস ক্রয় করতে আসা জাকির হোসেন জানান,পশু অসুস্থ নাকি সুস্থ ছিল, তা-ও জানেন না তাঁরা। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং পশুর শরীরে সিল দেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ধরণের তদারকি না থাকায় লোকজন মারা যাওয়া পশুর মাংস, নাকি রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার মাংস খাচ্ছে, তা বোঝার কোনো উপায় নেই।আমি অনেকটা কসাইদের অন্ধ বিশ্বাস করে মাংস কিনে থাকি।একই কথা জানান একাধিক বাজারের একাধিক ক্রেতারা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোঃ হারুন অর রশীদ জানান, ডাক্তারী পরিক্ষার বিষয় টা পৌরসভার সেনেটারী অফিসারের এমন কথা বললে পৌরসভার বাহিরের বাজার গুলোতে কে দেখবেন বলে জানতে চাইলে পূনরায় বলেন আমরাও একেবারে দায় এড়াতে পারি না তবে আমাদের সক্ষমতা না থাকায় করতে পারি না।

তবে আমরা বছরে একবার হলেও বিভিন্ন বাজারের কশাইদের কে সমবেত করে ট্রেনিং দিয়েছি। পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রন আইন সম্পর্কে ধারণা দিয়েছি পাশাপাশি পশুদের যেসব ভাইরাস থাকলে জবাই করা যাবে না সেই বিষয়ে তাদের’কে সচেতন বৃদ্ধি করার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আল- ইয়াসা রহমান তাপাদার বলেন, পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অতি জরুরী একটি বিষয় যা দ্রুত কার্যকরের ব্যবস্থা নেয়া হবে, জবাইখানার বিষয়ে বলেন জায়গা খোঁজা হচ্ছে শীঘ্রই সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ফ্রিজে রাখা পচা মাংস ও বিক্রয়ের সময় বেশি মূল্য নিচ্ছে এই বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খবর নিয়ে দেখছি, যদি এমন কোনো বিষয় থাকে তাহলে অবশ্যই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।