ঢাকা ০২:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস আজ

হযবরল অবস্থা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪ ২৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি


১২ সেপ্টেম্বর। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতীষ্ঠাবার্ষিকী। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও গত ১৬ বছরে অবকাঠামো উন্নয়ন সহ শিক্ষা, গবেষনা কোন কিছুর উন্নয়ন হয়নি। বরং অব্যাহত সেশনজট, শিক্ষক সংকট , ক্লাশ রুম সংকটসহ অনেকটা হযবরল অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই অভাগা, অসহায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় বলছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নানান বনাঢ়্য আয়োজনে প্রতীষ্ঠা দিবস উদযাপন করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকটি আধুনিক স্থাপত্য নকশায় তৈরী প্রধান গেট উদ্বোধন করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন সংযোগ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাজেট বরাদ্দে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে তারা। বাংলাদেশে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় যা কোন রাজনৈতিক সরকার প্রতীষ্ঠা করেনি। এটি ২০০৮ সালে প্রতীষ্ঠা করা হয় তখনকার তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন এর নাম ছিলো রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আকস্মিকভাবে নাম পরিবর্তন করে নাম দেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য নারী জাগরনের অগ্রদুত বেগম রোকেয়ার না আছে ম্যুরাল বা স্মৃতি স্তম্ভ। বেগম রোকেয়াকে নিয়ে কোন পাঠ্য সূচিও নেই। তার স্মৃতিকে ধরে রাখার মতো কোন কর্মকান্ড নেই।

শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘ ১৬ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন হয়নি। আছে শ্রেণী কক্ষের সংকট, ৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আছে মাত্র ৫শ শয্যার দুটি ছেলেদের হল ও একটি মেয়েদের। লাইব্রেরীতে প্রয়োজনীয় বই নেই , হলে রিডিং রুম নেই বললেই চলে। হলের খাবার খুবই নিম্নমানের। আছে শিক্ষক সংকট হয়না কোন গবেষনা। গত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে শত কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কোন কাজে আসেনি সেই অর্থ। বরং লুটপাট করে পকেট ভারী করা হয়েছে। বাজেট বরাদ্দেও চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

এ ব্যাপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একাউটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শিক্ষক বিশিষ্ট শিক্ষবিদ ওমর ফারুখ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই অভাগা অসহায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। যা শিক্ষক শিক্ষার্থী সকলকে এই বোঝা বহন করে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এখানে বরাদ্দ খুবই সিমীত আবার বরাদ্দ যতটুকু পাওয়া গেছে সেটুকু যথাযথ ব্যাবহার করা হয়নি। একই ভাবে উন্নয়ন বরাদ্দ যা পাওয়া গেছে সেগুলো ব্যাবহার করা যায়নি। উন্নয়ন প্রকল্প গুলো দীর্ঘদিন ধরে স্তব্ধ হয়ে আছে। না সেগুলো শুরু করা গেছে যারা এসবের জন্য দায়ি তাদের বিচারের আওতায় আনা গেছে এটা অত্যান্ত দুঃখজনক যারা শত কোটি টাকার প্রকল্প গুলো শেষ করতে গিয়ে দুর্নিতী করেছে তাদের আজো বিচারের আওতায় আনা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সীমাহিন কষ্টের মধ্যে অতিবাহিত করছে। এখানে শ্রেনী কক্ষের সংকট আছে, আবাসন ভয়াবহ সংকট আছে শিক্ষক সংকট আছে ফলে গবেষনা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিগত দিনে যারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলো তাদের প্রায় সকলেই এই দুরাবস্থা তৈরী করার জন্য দায়ি তাদের বিচারের আওতায় আনা জরুরী বলে তিনি দাবি করেন।

বেরোবির ছাত্র উপদেষ্টা ড, ইলিয়াছ প্রমানিক বলেন ২০০৮ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এর আগে ও পরে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে ভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে তার সিকি পরিমান উন্নয়ন বেরোবিতে হয়নি। এ জন্য আগে যারা উপাচার্য ছিলেন তাদের উদাসীনতাকেই দায়ি করেন তিনি। আগে যারা উপাচার্য ছিলেন তারা মাসে ৭দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেন না। অনেকে তো মাসের পর মাস আসেননাই। অনেকে আসলেও দুপুরে পর এসে বিকেলে চলে যেতেন। তবে আগষ্ঠ বিপ্লবের পর এবার যিনি উপাচার্য হয়ে এসেছেন অধ্যাপক ড, শওকত আলী সকাল ৯টা থেকে রাত অবধি অফিস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে সকলের সাথে মিটিং করছেন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমরা গবেষনার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি । নতুন উপাচার্য গবেষনার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি ড, ওয়াজেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে সচল করার উদ্যগ গ্রহন করেছেন। যাতে এখান থেকেই উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া যায়।

শিক্ষক আপেল মাহমুদ বলেন আবাসন , শিক্ষক সহ অনেক সংকট আছে। নয়া উপাচার্য যোগদান করার পর নিয়মিত ক্লাশ পরীক্ষা শুরু হয়েছে । আশা করা হচ্ছে আগামী এক বছরের মধ্যে সেশনজট পুরোপুরি দুর করা সম্ভব হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম সাইদা , রোকসানা জানালেন ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক নারী শিক্ষার্থী হলেও একটি মাত্র আবাসিক হল আমাদের বাইরে মেসে থেকে লেখা পড়া করতে হয় যাতায়াত, আর্থিক সহ নানান সমস্যা রয়েছে। এসব সমাধানের উদ্যেগ আমরা শুধু শুনি কিন্তু বাস্তবায়ন দেখিনা। অন্যদিকে শ্রেনী কক্ষ সংকট, শিক্ষক সংকট লাইব্রেরীতে পর্যাপ্ত বই নেই এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তারা।

শিক্ষার্থী আলী আজম , ওমর আফজাল , রাব্বি সহ অনেকে জানালো এর আগে শত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিলো মেয়েদের হল সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের। সেই অর্থ আরেগর উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লা তার ভাগ্নেকে নিয়ে লুটপাট করায় কাজই বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া এক বর্ষের ক্লাশ করলে অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয়। শ্রেনী ক্ষ সংকট, বই নেই , রিডিং রুম পড়াশোনার উপযোগী নয়, হলের ডাইনিং এ খাবার নি¤œ মানের বহুমুখি সমস্যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি চলছে।

শিক্ষার্থী সাবিউল ও মোন্তাসির বললেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদের হত্যাকারী ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করার কোন লক্ষন আমরা দেীছনা। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি তাদের।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বেরোবির নয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেনী কক্ষের তীব্র সংকট আছে সমাধানের জন্য বর্তমান ভবন গুলোর উর্ধমুখি সম্প্রসারন কাজ দ্রুত শুরু করা ছেলে ও মেয়েদের দুটি করে হল নির্মান সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার দ্রæতই সমাধানের উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নতুন সরকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেরোবি শিক্ষার্থী বীর যোদ্ধা আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে দৃষ্টি দেবার দাবী শিক্ষার্থীদের।

এদিকে প্রতীষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে একটি গেট নির্মান করা হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে দিনব্যাপি নানান বনাঢ়্য আয়োজন। প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য উপদেষ্ঠা নাহিদ ইসলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

১৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস আজ

হযবরল অবস্থা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪


১২ সেপ্টেম্বর। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতীষ্ঠাবার্ষিকী। রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও গত ১৬ বছরে অবকাঠামো উন্নয়ন সহ শিক্ষা, গবেষনা কোন কিছুর উন্নয়ন হয়নি। বরং অব্যাহত সেশনজট, শিক্ষক সংকট , ক্লাশ রুম সংকটসহ অনেকটা হযবরল অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই অভাগা, অসহায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় বলছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নানান বনাঢ়্য আয়োজনে প্রতীষ্ঠা দিবস উদযাপন করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকটি আধুনিক স্থাপত্য নকশায় তৈরী প্রধান গেট উদ্বোধন করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন সংযোগ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এদিকে, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাজেট বরাদ্দে চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে তারা। বাংলাদেশে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় যা কোন রাজনৈতিক সরকার প্রতীষ্ঠা করেনি। এটি ২০০৮ সালে প্রতীষ্ঠা করা হয় তখনকার তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন এর নাম ছিলো রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আকস্মিকভাবে নাম পরিবর্তন করে নাম দেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য নারী জাগরনের অগ্রদুত বেগম রোকেয়ার না আছে ম্যুরাল বা স্মৃতি স্তম্ভ। বেগম রোকেয়াকে নিয়ে কোন পাঠ্য সূচিও নেই। তার স্মৃতিকে ধরে রাখার মতো কোন কর্মকান্ড নেই।

শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘ ১৬ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন হয়নি। আছে শ্রেণী কক্ষের সংকট, ৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আছে মাত্র ৫শ শয্যার দুটি ছেলেদের হল ও একটি মেয়েদের। লাইব্রেরীতে প্রয়োজনীয় বই নেই , হলে রিডিং রুম নেই বললেই চলে। হলের খাবার খুবই নিম্নমানের। আছে শিক্ষক সংকট হয়না কোন গবেষনা। গত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে শত কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কোন কাজে আসেনি সেই অর্থ। বরং লুটপাট করে পকেট ভারী করা হয়েছে। বাজেট বরাদ্দেও চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

এ ব্যাপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একাউটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শিক্ষক বিশিষ্ট শিক্ষবিদ ওমর ফারুখ জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই অভাগা অসহায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। যা শিক্ষক শিক্ষার্থী সকলকে এই বোঝা বহন করে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এখানে বরাদ্দ খুবই সিমীত আবার বরাদ্দ যতটুকু পাওয়া গেছে সেটুকু যথাযথ ব্যাবহার করা হয়নি। একই ভাবে উন্নয়ন বরাদ্দ যা পাওয়া গেছে সেগুলো ব্যাবহার করা যায়নি। উন্নয়ন প্রকল্প গুলো দীর্ঘদিন ধরে স্তব্ধ হয়ে আছে। না সেগুলো শুরু করা গেছে যারা এসবের জন্য দায়ি তাদের বিচারের আওতায় আনা গেছে এটা অত্যান্ত দুঃখজনক যারা শত কোটি টাকার প্রকল্প গুলো শেষ করতে গিয়ে দুর্নিতী করেছে তাদের আজো বিচারের আওতায় আনা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সীমাহিন কষ্টের মধ্যে অতিবাহিত করছে। এখানে শ্রেনী কক্ষের সংকট আছে, আবাসন ভয়াবহ সংকট আছে শিক্ষক সংকট আছে ফলে গবেষনা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিগত দিনে যারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলো তাদের প্রায় সকলেই এই দুরাবস্থা তৈরী করার জন্য দায়ি তাদের বিচারের আওতায় আনা জরুরী বলে তিনি দাবি করেন।

বেরোবির ছাত্র উপদেষ্টা ড, ইলিয়াছ প্রমানিক বলেন ২০০৮ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও এর আগে ও পরে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে ভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে তার সিকি পরিমান উন্নয়ন বেরোবিতে হয়নি। এ জন্য আগে যারা উপাচার্য ছিলেন তাদের উদাসীনতাকেই দায়ি করেন তিনি। আগে যারা উপাচার্য ছিলেন তারা মাসে ৭দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেন না। অনেকে তো মাসের পর মাস আসেননাই। অনেকে আসলেও দুপুরে পর এসে বিকেলে চলে যেতেন। তবে আগষ্ঠ বিপ্লবের পর এবার যিনি উপাচার্য হয়ে এসেছেন অধ্যাপক ড, শওকত আলী সকাল ৯টা থেকে রাত অবধি অফিস করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে সকলের সাথে মিটিং করছেন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি আমরা গবেষনার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি । নতুন উপাচার্য গবেষনার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি ড, ওয়াজেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে সচল করার উদ্যগ গ্রহন করেছেন। যাতে এখান থেকেই উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া যায়।

শিক্ষক আপেল মাহমুদ বলেন আবাসন , শিক্ষক সহ অনেক সংকট আছে। নয়া উপাচার্য যোগদান করার পর নিয়মিত ক্লাশ পরীক্ষা শুরু হয়েছে । আশা করা হচ্ছে আগামী এক বছরের মধ্যে সেশনজট পুরোপুরি দুর করা সম্ভব হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম সাইদা , রোকসানা জানালেন ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেক নারী শিক্ষার্থী হলেও একটি মাত্র আবাসিক হল আমাদের বাইরে মেসে থেকে লেখা পড়া করতে হয় যাতায়াত, আর্থিক সহ নানান সমস্যা রয়েছে। এসব সমাধানের উদ্যেগ আমরা শুধু শুনি কিন্তু বাস্তবায়ন দেখিনা। অন্যদিকে শ্রেনী কক্ষ সংকট, শিক্ষক সংকট লাইব্রেরীতে পর্যাপ্ত বই নেই এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তারা।

শিক্ষার্থী আলী আজম , ওমর আফজাল , রাব্বি সহ অনেকে জানালো এর আগে শত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিলো মেয়েদের হল সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের। সেই অর্থ আরেগর উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লা তার ভাগ্নেকে নিয়ে লুটপাট করায় কাজই বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া এক বর্ষের ক্লাশ করলে অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয়। শ্রেনী ক্ষ সংকট, বই নেই , রিডিং রুম পড়াশোনার উপযোগী নয়, হলের ডাইনিং এ খাবার নি¤œ মানের বহুমুখি সমস্যার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি চলছে।

শিক্ষার্থী সাবিউল ও মোন্তাসির বললেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদের হত্যাকারী ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করার কোন লক্ষন আমরা দেীছনা। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি তাদের।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বেরোবির নয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেনী কক্ষের তীব্র সংকট আছে সমাধানের জন্য বর্তমান ভবন গুলোর উর্ধমুখি সম্প্রসারন কাজ দ্রুত শুরু করা ছেলে ও মেয়েদের দুটি করে হল নির্মান সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার দ্রæতই সমাধানের উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নতুন সরকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেরোবি শিক্ষার্থী বীর যোদ্ধা আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে দৃষ্টি দেবার দাবী শিক্ষার্থীদের।

এদিকে প্রতীষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে একটি গেট নির্মান করা হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে দিনব্যাপি নানান বনাঢ়্য আয়োজন। প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য উপদেষ্ঠা নাহিদ ইসলাম।