ঢাকা ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিল্পজগতে যুগাবসান, রতন টাটা মারা গেছেন

বাংলা টাইমস ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২১:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪ ৩২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শিল্পপতি রতন টাটা মারা গেছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কয়েকদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন বর্ষীয়ান এই শিল্পপতি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।

শিল্পপতি রতন টাটার জন্ম ১৯৩৭ সালে তদানীন্তন বম্বেতে। অগ্নি উপাসক পার্সি পরিবারের সন্তান তিনি। তার বাবা নভল হরমুসজি টাটাকে দত্তক নিয়েছিলো টাটা পরিবার। রতনের বছর দশেক বয়সেই তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। আর সেই সময় থেকেই ঠাকুরমা নভাজিবাই টাটা তার দেখাশোনার ভার নেন। আইনানুগভাবে দত্তক নেন রতনকে।

রতন টাটার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মুম্বইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেন। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় মুম্বইয়েরই ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুলে। পরে তিনি শিমলার বিশপ কটন স্কুল এবং আমেরিকার নিউ ইয়র্কের রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলেও পাঠ নেন। ১৯৫৫ সালে রতন গ্র্যাজুয়েট হন শেষোক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে। ১৯৫৯-এ কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

সত্তরের দশকে রতন টাটা তার পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। তাকে প্রথমে টাটা গোষ্ঠীর ব্যবস্থাপক স্তরের একটি পদে নিয়োগ করা হয়। তার পূর্বসূরি জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটা কমবেশি ৫০ বছর শতাব্দীপ্রাচীন ওই গোষ্ঠীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। জেআরডি-র উত্তরসাধক হিসাবে রতনের কাছেও প্রভূত প্রত্যাশা ছিল গোষ্ঠীর। প্রথম থেকেই রতন সে ব্যাপারে সচেতনও ছিলেন। ১৯৯১ সালে জেআরডি চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেন এবং সেই দায়িত্ব এসে পড়ে রতনের উপর। নব্বইয়ের দশকে ভারত সরকার উদারীকরণের দিকে ঝোঁকে। সরকারের নয়া নীতির সাথে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সাযুজ্য খুঁজে পান রতন।

যে সময়ে রতন চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ শুরু করেন, তখন টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষকর্তারা নিজেদের পন্থা অনুসরণ করেই সংস্থা চালাতেন। এতে একই গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন রকমের পরিচালন পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। রতনের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জটিই ছিল এই বিবিধ পন্থাকে নীতিগত ভাবে একীভূত করা। পুরনো সংস্থাগুলির সংস্কার ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থা তিনি গোষ্ঠীর তরফে অধিগ্রহণ করেন এবং চেয়ারম্যান হিসাবে তার কার্যকালের প্রথম দশকেই ৩২টি নতুন সংস্থা চালু করেন।

১৯৯২ থেকে ২০০২ পর্বে চেয়ারম্যান হিসাবে রতনের বিশেষ লক্ষ্য ছিল মোটরগাড়ি, টেলি-যোগাযোগ, বিমা এবং সার উৎপাদক সংস্থাগুলির বিকাশের দিকে। সেই সাথে শক্তি উৎপাদন ও হোটেল ব্যবসার দিকেও গোষ্ঠী বিশেষ দৃষ্টিপাত করে। শুরু হয় সফ্‌টঅয়্যার শিল্পে বিনিয়োগ ও তার উৎকর্ষ সাধনের প্রয়াসও।

১৯৯৮-২০০২ পর্বে টাটা সন্স তথা সামগ্রিক অর্থে গোষ্ঠীর পরিচালন বিষয়ে রতন বিস্তর পরিবর্তন ঘটান, যা সংস্থাগুলিকে এক নতুন ‘আচরণবিধি’র মধ্যে নিয়ে আসে।

রতন টাটার আমলেই ‘টাটা’ ব্র্যান্ডের সংস্থাগুলি ভারত-কেন্দ্রিক অবস্থান থেকে আন্তর্জাতিক চরিত্র লাভ করতে সমর্থ হয়। টাটা মোটরস তার আমলেই ‘জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার’ বা টাটা স্টিল ‘কোরাস’-এর মতো ব্র্যান্ড অধিগ্রহণ করে। নিঃসন্দেহে ভারতের নিরিখে এগুলি বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে এক তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশের ছায়া আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘায়িত হওয়ার উদাহরণ।

২০১২ সালে রতন ৭৫ বছরে পা রাখেন। সে বছরই তিনি অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদাধিকারীদের জন্য ৭৫ বছর বয়ঃসীমা নির্ধারণ রতনই করেছিলেন। তার নিজের ক্ষেত্রেই নিয়মটি তিনি প্রথম প্রয়োগ করেন। কিন্তু অবসরের পরও তার নিজস্ব বিনিয়োগের কাজ তিনি চালিয়ে যান। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট, অ্যাপ-ক্যাব, অনলাইন সম্পত্তি বিক্রয় সংস্থায় তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লগ্নি করেন।

সর্বোপরি, স্যার রতন টাটা ট্রাস্টের প্রধান হিসাবেও তিনি অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গেছেন। গ্রামোন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প-সংস্কৃতি এবং গণ উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষণা এই ট্রাস্টের কাজ। ২০০০-২০০১ সালের মধ্যে রতনের হাত দিয়ে ৬৫টি নতুন অনুদান সম্ভব হয়। বিবিধ কাজে সেই এক বছরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল ট্রাস্ট।

ব্যক্তিগত জীবনে রতন যে এক আশ্চর্য মানুষ ছিলেন, তা সর্বজনবিদিত। অকৃতদার রতন তার পদ ও মর্যাদার তুলনায় নিরাভরণ জীবনই যাপন করতেন। শান্তনুর স্মৃতিকথা থেকে এক সুরসিক, স্নেহশীল মানুষের পরিচয়ই পাওয়া যায়। নিজস্ব পরিবার না থাকলেও তিনি যে গোটা টাটা গোষ্ঠীকে পরিবার হিসেবেই ভাবতেন, তা তার একাধিক জীবনীকারের লেখায় লভ্য।

দফতরে নিজেই গাড়ি চালিয়ে যেতেন। সফরের সময়ে একাকিত্বই তার প্রিয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন প্রশিক্ষিত বৈমানিকও। ২০০৭ সালে ‘এরো ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতে তিনি সহ-পাইলট হিসাবে একটি এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান এবং বোয়িং এফ-১৮ চালিয়ে চমক দিয়েছিলেন।

মৃদুভাষী ও স্নেহশীল মানুষ হিসাবে রতনের পরিচয়ও সমস্ত মহলে সুবিদিত। তার ব্যক্তিগত সাহচর্যে যারা এসেছেন, তারাই একবাক্যে তার সদা বিনয়াবনত স্বভাবের কথা বলেছেন। কিন্তু একই সাথে তিনি ছিলেন ঘোর আত্মবিশ্বাসী। বিপদ সম্পর্কে সর্বদা সজাগ থাকতেন। বিপদকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করার সহজাত ক্ষমতা ছিল তার।

রতনের মন্ত্র ছিল, যা আশা করা হচ্ছে, যতখানি আশা করা হচ্ছে, তার খানিক বেশিই দাও। নিজের জীবনকে কখনও বাহুল্যে জর্জরিত না করেও, আত্মপ্রদর্শন আর আত্মপ্রচারের বাইরে থেকেও যে কাজ করা যায়, তা তিনি জানতেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শিল্পজগতে যুগাবসান, রতন টাটা মারা গেছেন

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২১:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

শিল্পপতি রতন টাটা মারা গেছেন। বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। কয়েকদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন বর্ষীয়ান এই শিল্পপতি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।

শিল্পপতি রতন টাটার জন্ম ১৯৩৭ সালে তদানীন্তন বম্বেতে। অগ্নি উপাসক পার্সি পরিবারের সন্তান তিনি। তার বাবা নভল হরমুসজি টাটাকে দত্তক নিয়েছিলো টাটা পরিবার। রতনের বছর দশেক বয়সেই তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। আর সেই সময় থেকেই ঠাকুরমা নভাজিবাই টাটা তার দেখাশোনার ভার নেন। আইনানুগভাবে দত্তক নেন রতনকে।

রতন টাটার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মুম্বইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেন। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় মুম্বইয়েরই ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুলে। পরে তিনি শিমলার বিশপ কটন স্কুল এবং আমেরিকার নিউ ইয়র্কের রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলেও পাঠ নেন। ১৯৫৫ সালে রতন গ্র্যাজুয়েট হন শেষোক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে। ১৯৫৯-এ কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

সত্তরের দশকে রতন টাটা তার পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। তাকে প্রথমে টাটা গোষ্ঠীর ব্যবস্থাপক স্তরের একটি পদে নিয়োগ করা হয়। তার পূর্বসূরি জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটা কমবেশি ৫০ বছর শতাব্দীপ্রাচীন ওই গোষ্ঠীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। জেআরডি-র উত্তরসাধক হিসাবে রতনের কাছেও প্রভূত প্রত্যাশা ছিল গোষ্ঠীর। প্রথম থেকেই রতন সে ব্যাপারে সচেতনও ছিলেন। ১৯৯১ সালে জেআরডি চেয়ারম্যান পদ থেকে অবসর নেন এবং সেই দায়িত্ব এসে পড়ে রতনের উপর। নব্বইয়ের দশকে ভারত সরকার উদারীকরণের দিকে ঝোঁকে। সরকারের নয়া নীতির সাথে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির সাযুজ্য খুঁজে পান রতন।

যে সময়ে রতন চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ শুরু করেন, তখন টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষকর্তারা নিজেদের পন্থা অনুসরণ করেই সংস্থা চালাতেন। এতে একই গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন রকমের পরিচালন পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। রতনের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জটিই ছিল এই বিবিধ পন্থাকে নীতিগত ভাবে একীভূত করা। পুরনো সংস্থাগুলির সংস্কার ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থা তিনি গোষ্ঠীর তরফে অধিগ্রহণ করেন এবং চেয়ারম্যান হিসাবে তার কার্যকালের প্রথম দশকেই ৩২টি নতুন সংস্থা চালু করেন।

১৯৯২ থেকে ২০০২ পর্বে চেয়ারম্যান হিসাবে রতনের বিশেষ লক্ষ্য ছিল মোটরগাড়ি, টেলি-যোগাযোগ, বিমা এবং সার উৎপাদক সংস্থাগুলির বিকাশের দিকে। সেই সাথে শক্তি উৎপাদন ও হোটেল ব্যবসার দিকেও গোষ্ঠী বিশেষ দৃষ্টিপাত করে। শুরু হয় সফ্‌টঅয়্যার শিল্পে বিনিয়োগ ও তার উৎকর্ষ সাধনের প্রয়াসও।

১৯৯৮-২০০২ পর্বে টাটা সন্স তথা সামগ্রিক অর্থে গোষ্ঠীর পরিচালন বিষয়ে রতন বিস্তর পরিবর্তন ঘটান, যা সংস্থাগুলিকে এক নতুন ‘আচরণবিধি’র মধ্যে নিয়ে আসে।

রতন টাটার আমলেই ‘টাটা’ ব্র্যান্ডের সংস্থাগুলি ভারত-কেন্দ্রিক অবস্থান থেকে আন্তর্জাতিক চরিত্র লাভ করতে সমর্থ হয়। টাটা মোটরস তার আমলেই ‘জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার’ বা টাটা স্টিল ‘কোরাস’-এর মতো ব্র্যান্ড অধিগ্রহণ করে। নিঃসন্দেহে ভারতের নিরিখে এগুলি বিশ্বায়িত অর্থনীতিতে এক তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশের ছায়া আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘায়িত হওয়ার উদাহরণ।

২০১২ সালে রতন ৭৫ বছরে পা রাখেন। সে বছরই তিনি অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদাধিকারীদের জন্য ৭৫ বছর বয়ঃসীমা নির্ধারণ রতনই করেছিলেন। তার নিজের ক্ষেত্রেই নিয়মটি তিনি প্রথম প্রয়োগ করেন। কিন্তু অবসরের পরও তার নিজস্ব বিনিয়োগের কাজ তিনি চালিয়ে যান। বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইট, অ্যাপ-ক্যাব, অনলাইন সম্পত্তি বিক্রয় সংস্থায় তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লগ্নি করেন।

সর্বোপরি, স্যার রতন টাটা ট্রাস্টের প্রধান হিসাবেও তিনি অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গেছেন। গ্রামোন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প-সংস্কৃতি এবং গণ উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষণা এই ট্রাস্টের কাজ। ২০০০-২০০১ সালের মধ্যে রতনের হাত দিয়ে ৬৫টি নতুন অনুদান সম্ভব হয়। বিবিধ কাজে সেই এক বছরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল ট্রাস্ট।

ব্যক্তিগত জীবনে রতন যে এক আশ্চর্য মানুষ ছিলেন, তা সর্বজনবিদিত। অকৃতদার রতন তার পদ ও মর্যাদার তুলনায় নিরাভরণ জীবনই যাপন করতেন। শান্তনুর স্মৃতিকথা থেকে এক সুরসিক, স্নেহশীল মানুষের পরিচয়ই পাওয়া যায়। নিজস্ব পরিবার না থাকলেও তিনি যে গোটা টাটা গোষ্ঠীকে পরিবার হিসেবেই ভাবতেন, তা তার একাধিক জীবনীকারের লেখায় লভ্য।

দফতরে নিজেই গাড়ি চালিয়ে যেতেন। সফরের সময়ে একাকিত্বই তার প্রিয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন প্রশিক্ষিত বৈমানিকও। ২০০৭ সালে ‘এরো ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীতে তিনি সহ-পাইলট হিসাবে একটি এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান এবং বোয়িং এফ-১৮ চালিয়ে চমক দিয়েছিলেন।

মৃদুভাষী ও স্নেহশীল মানুষ হিসাবে রতনের পরিচয়ও সমস্ত মহলে সুবিদিত। তার ব্যক্তিগত সাহচর্যে যারা এসেছেন, তারাই একবাক্যে তার সদা বিনয়াবনত স্বভাবের কথা বলেছেন। কিন্তু একই সাথে তিনি ছিলেন ঘোর আত্মবিশ্বাসী। বিপদ সম্পর্কে সর্বদা সজাগ থাকতেন। বিপদকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করার সহজাত ক্ষমতা ছিল তার।

রতনের মন্ত্র ছিল, যা আশা করা হচ্ছে, যতখানি আশা করা হচ্ছে, তার খানিক বেশিই দাও। নিজের জীবনকে কখনও বাহুল্যে জর্জরিত না করেও, আত্মপ্রদর্শন আর আত্মপ্রচারের বাইরে থেকেও যে কাজ করা যায়, তা তিনি জানতেন।