ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফুলবাড়ী পৌরসভা

১৬ মাস বেতন পাচ্ছেন না, পরিবার নিয়ে দুর্ভোগে

আজিজুল হক সরকার,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:০১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

oppo_0

বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দীর্ঘ ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার স্থায়ী ৩৫ এবং অস্থায়ী ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর ফলে এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়রের সময়কার তুলনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পৌর প্রশাসক-এর সময়কার ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, হাট বাজার ডাকের কালেকশন সন্তোষজনক হলেও নিয়মিত বেতন দেয়ার সমস্যা কাটছে না বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার গৌড়ী পাড়া এলাকায় ৬৪ শতক জমির উপর প্রথমে (গ) শ্রেণিভুক্ত ফুলবাড়ী পৌরসভাটি স্থাপিত হয়। পৌরসভাটির আয়তন ১৩ দশমিক ৫৯ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা রয়েছে ৫৫হাজার ৮৫০জন। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে ২১ সেপ্টেম্বর (ক) শ্রেণিতে উন্নিত হয় পৌরসভাটি, বর্তমানে এটি একটি মডেল পৌরসভা। সূত্র মতে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের এই পৌরসভা থেকে আয় হয় ২ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার ৪৬৭ টাকা। একই সময়ে বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭১০টাকা। এর মধ্যে পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাৎসরিক বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়। তাতে করে ওই অর্থ বছরে আয় – ব্যয়ের হিসেবে ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৩ টাকা ঘাটতি রয়েছে। এখানে কর্মরত স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে ৩৫জন। অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছে ১৬ জন।

এদিকে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব পৌরসভার মেয়রদের কার্যক্রম স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তারপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৯ আগষ্ট ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব প্রদান করা হয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরীকে। মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী ফুলবাড়ী পৌরসভায় পৌর প্রশাসক-এর দায়িত্ব পাবার পর নির্বাচিত মেয়রের সময়কার তুলনায় পূর্বের বকেয়া এবং বর্তমান অর্থবছরের ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, হাট বাজার ডাকের কালেকশন খুবই সন্তোষজনক বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পৌর স্টাফ জানান, আগে ব্যাংকে মজুদ ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকা। ১৯ আগষ্ট’২৪ দায়িত্ব নেয়ার পর এখন সঞ্চয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। নতুন পৌর প্রশাসক আসার পর থেকে কালেকশন এতো ভালো যে, পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত করা অসম্ভব কিছু নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মচারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, কারো সন্তান অসুস্থ, কারো ওষুধ কেনার টাকা নেই,বাজার খরচ নেই। কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, পৌরসভার বেতন যতটুকু পাই, তা দিয়ে প্রতিমাসে চাল ডাল কিনতে হয় এবং বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে হয়, এছাড়া কারো কারো ঘরভাড়াও দিতে হয়। ১৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ হওয়ায় এখন ধার দেনা করে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী জানান, বেতনের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি শীঘ্রই বেতন পরিশোধ করবেন মর্মে আশ্বস্ত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে নবাগত পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের খুব বেশি দিন হয়নি। সব কিছু বুঝে এবং গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। তবে আশা করছি আসন্ন র্দুাপুজোর আগেই পৌর কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বকেয়া কয়েক মাসের বেতন প্রদান করা সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ফুলবাড়ী পৌরসভা

১৬ মাস বেতন পাচ্ছেন না, পরিবার নিয়ে দুর্ভোগে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:০১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

দীর্ঘ ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার স্থায়ী ৩৫ এবং অস্থায়ী ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর ফলে এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে পৌরসভায় নির্বাচিত মেয়রের সময়কার তুলনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পৌর প্রশাসক-এর সময়কার ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, হাট বাজার ডাকের কালেকশন সন্তোষজনক হলেও নিয়মিত বেতন দেয়ার সমস্যা কাটছে না বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার গৌড়ী পাড়া এলাকায় ৬৪ শতক জমির উপর প্রথমে (গ) শ্রেণিভুক্ত ফুলবাড়ী পৌরসভাটি স্থাপিত হয়। পৌরসভাটির আয়তন ১৩ দশমিক ৫৯ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা রয়েছে ৫৫হাজার ৮৫০জন। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে ২১ সেপ্টেম্বর (ক) শ্রেণিতে উন্নিত হয় পৌরসভাটি, বর্তমানে এটি একটি মডেল পৌরসভা। সূত্র মতে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের এই পৌরসভা থেকে আয় হয় ২ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার ৪৬৭ টাকা। একই সময়ে বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭১০টাকা। এর মধ্যে পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাৎসরিক বেতন-ভাতা বাবদ প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়। তাতে করে ওই অর্থ বছরে আয় – ব্যয়ের হিসেবে ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৩ টাকা ঘাটতি রয়েছে। এখানে কর্মরত স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে ৩৫জন। অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছে ১৬ জন।

এদিকে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব পৌরসভার মেয়রদের কার্যক্রম স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তারপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৯ আগষ্ট ফুলবাড়ী পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব প্রদান করা হয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরীকে। মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী ফুলবাড়ী পৌরসভায় পৌর প্রশাসক-এর দায়িত্ব পাবার পর নির্বাচিত মেয়রের সময়কার তুলনায় পূর্বের বকেয়া এবং বর্তমান অর্থবছরের ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, হাট বাজার ডাকের কালেকশন খুবই সন্তোষজনক বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পৌর স্টাফ জানান, আগে ব্যাংকে মজুদ ছিল মাত্র ৩ লাখ টাকা। ১৯ আগষ্ট’২৪ দায়িত্ব নেয়ার পর এখন সঞ্চয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। নতুন পৌর প্রশাসক আসার পর থেকে কালেকশন এতো ভালো যে, পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত করা অসম্ভব কিছু নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মচারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, কারো সন্তান অসুস্থ, কারো ওষুধ কেনার টাকা নেই,বাজার খরচ নেই। কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, পৌরসভার বেতন যতটুকু পাই, তা দিয়ে প্রতিমাসে চাল ডাল কিনতে হয় এবং বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে হয়, এছাড়া কারো কারো ঘরভাড়াও দিতে হয়। ১৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ হওয়ায় এখন ধার দেনা করে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী জানান, বেতনের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি শীঘ্রই বেতন পরিশোধ করবেন মর্মে আশ্বস্ত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে নবাগত পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের খুব বেশি দিন হয়নি। সব কিছু বুঝে এবং গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। তবে আশা করছি আসন্ন র্দুাপুজোর আগেই পৌর কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বকেয়া কয়েক মাসের বেতন প্রদান করা সম্ভব হবে।