ডা. টুলুর মহানুভবতায় সুস্থের পথে দিনমজুর জুয়েল
আমি ডাক্তারের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবো
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৪ বার পড়া হয়েছে
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বজলুর রশীদ টুলু সত্যিকারের ডাক্তার। তিনি একজন মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ। আল্লাহ্ যেন এই ডাক্তারকে শত বছর বাঁচিয়ে রাখেন। প্রতিটি জেলা সদরে হাসপাতালে বজলুর রশীদ টুলুর মত এমন একজন ডাক্তার থাকা খুবই দরকার। তার মতো ডাক্তার থাকলে গরিব অসহায় রোগীরা বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না।’
এ কথাগুলো বলছিলেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের মডেল ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বেডে শুয়ে থাকা রোগী জুয়েল রানার (২৮) বাবা নুরুল ইসলাম।
ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামের নুরুল ইসলাম খুবই উচ্ছ্বসিত ডা. বজলুর রশীদের সেবায়। তিনি বলেন, আমার অভাব অনটনের সংসার। দুই ছেলে এক মেয়ে স্ত্রী নাতি-পোতা নিয়ে আছি। জমি বিক্রি করে ছেলে জুয়েল রানাকে মালয়েশিয়া পাঠাই সংসারের সচ্ছলতা আনতে। মালয়েশিয়ায় কনস্ট্রাকশনের কাজ করার সময় জুয়েল রানার বুকের পরে বস্তা পড়ে। এতে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয় সে এবং তার বুকের ভেতরে রক্তের জমাট বাঁধে। সচ্ছলতার স্বপ্ন মাটি চাপা দিয়ে জীবন বাঁচাতে সে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা করাতে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করি। তিনদিন সে অনাদরে, অবহেলায় ছিল। একপর্যায়ে ডাক্তাররা ছাড়পত্র দিয়ে দেয় বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য।
বিষয়টি একজন সাংবাদিককে জানালে তার মাধ্যমে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও বজলুর রশীদ টুলু স্যারের দ্বারস্থ হই। ডাক্তার টুলু স্যার দায়িত্ব নেন। জুয়েল রানাকে সার্জারি ওয়ার্ড থেকে মডেল ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেন। এরপরে ডাক্তাররা অব্যাহতভাবে ছেলেকে দেখাশোনা করতে থাকেন।
তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত অপারেশন করে ছেলের বুকের ভেতর জমাট বাঁধা রক্ত বের করেন। এতো বড় অপারেশনে আমার মাত্র ১৭শ’ টাকা খরচ হয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা- নিরীক্ষা এবং ওষুধ তিনি ফ্রিতে দিয়েছেন। ছেলেটি এখন সুস্থ আছে। আমার যে কী আনন্দ লাগছে, সে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারবো না। আমি ও আমার পরিবার এই ডাক্তারের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করবো।
ডাক্তার ফজলুর রশীদ টুলুর অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, আমি একজন ডাক্তার। রোগীর চিকিৎসাসেবা দেয়াই আমার কাজ। কেবল দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।