আঁতাতের অভিযোগে দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কার দাবি
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:৪৩:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১১ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালী প্রতিনিধিনোয়াখালীর-৪ সংসদীয় এলাকার ছাত্রদল ও যুবদলের ৬ নেতাকর্মি দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কার দাবি করেছেন।
গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বরাবর লিখিত অভিযোগে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আঁতাতের অভিযোগ এনে তাদের বহিষ্কার দাবি করা হয়।
অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব,সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক কে।
বহিষ্কার দাবি করা নেতারা হলেন, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ ও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সাবেক এমপি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম দোসর মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর সাথে আর্থিক সম্পর্কসহ গভীর ভাবে আঁতাত করে ২০১৩-২০১৪ইং সালে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় বিদেশ ভ্রমণ করে। এরপর বিদেশ একসাথে নৌবিহার করে। পরবর্তীতে এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতাকর্মিদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্বৈরাচার সাথে এই আঁতাতের কারণে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যবধি তার বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা একটি জিডিও হয়নি।
পক্ষান্তরে এই আাঁতাতের কারণে দল সহ হাজারো নেতাকর্মি শিকার হয়েছে মামলা হামলার।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সিন্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করে এবং নির্বাচনী প্রচরণায় সভাপতিত্ব করে। যাহার ছবি লিখিত অভিযোগের সাাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
একই ভাবে সাবেক মেয়র হারুণের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সাথে বিদেশে নৌকা ভ্রমণের ছবিও সংযুক্ত।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী রুবেল হোসেন বলেন, তিনি শহর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক। আমরা যখন মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তখন সাবেক মেয়র হারুন টেবিলে সাবেক এমপি একরামের সাথে আঁতাত করে বিএনপির অনেক নেতাকর্মিকে মামলায় জড়িয়েছে। এটা অনেকেই জানে। সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় সিন্ধান্ত অমান্য করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার ডাবি প্রার্থী এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করে। লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করা আরও একজন ছাত্রদল ও একজন যুবদল নেতার সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
যোগাযোগ করা হলে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, শিহাব উদ্দিন শাহীনের ভোট করার প্রশ্নই আসেনা। শাহীন একজন এডভোকেট ও বার অ্যাসোসিয়েসনে সদস্য। সে হিসেবে তিনি আইনজীবীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। আমি বারের সভাপতি। বারের নিয়ম অনুযায়ী বারের কোনো একজন সদস্য বা অতিথি গেলে তাকে রিসিভ করা। সেখানে আমি এক লাইনে বক্তব্য দিয়েছি। আমরা ভোটের বিরুদ্ধে।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশীদ আজাদ বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আমার আঁতাতের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি যখন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ছিলাম। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এবং একরামুল করিম চৌধুরী স্থানীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। এই কারণে তার সাথে আমার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা সাক্ষাৎ হতো। এই ছবি দিয়ে আমাকে বারবার ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়। এভাবে ষড়যন্ত্র করে ১০ বছর আমাকে বিএনপির রাজনীতির বাহিরে রাখা হয়েছে। এজন্য আমার নামে মামলা নেই। নোয়াখালী জেলার অনেক বড় বড় বিএনপি নেতার সাথে সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর ছবি রয়েছে। যে ছবি চাইলে আমরাও দিতে পারি।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের আলোকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।