ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে বক্তারা

প্রিয়জনের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে

সোহরাব হোসেন সৌরভ, রাজশাহী
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৫৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে আর কতো অপেক্ষা করতে হবে? আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচিতে আসা হারানো মানুষগুলোর স্বজনদের ছিলেঅ এমনই আকুতি। বাবার জন্য কাঁদছে সন্তান, সন্তানের জন্য কাঁদছে মা। স্বামীর জন্য স্ত্রী, ভাইয়ের জন্য ভাই। নিখোঁজ মানুষগুলোর জন্য পরিবারের সদস্যদের শুধু কান্না আর কান্না। কথিত আয়নাঘর বা বন্দিশালার সাথে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে এবং তাদের কোন প্রকার দায় মুক্তি দেয়া যাবে না। গুমসহ সব মানবাধিকার লঙ্ঘণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকারের এবং মায়ের ডাকের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার’র রাজশাহীর সমন্বয়ক সাংবাদিক মঈন উদ্দিন খানের পরিচালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন-রাজশাহী সাংবাকি ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ডাঃ নাজিব ওয়াদুদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী মেহেদী সজিব, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান আব্দুল আউয়াল, স্টুডেন্ট রইটস এ্যাসেসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী সাংবদিক রাসেদ রাজন,রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী ফহিম রেজা, রাজশাহী কোর্টের আইনজীবি ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোটেক নিজাম উদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কাউছারী, গুমের শিকার হয়ে ফিরে আসা শাইরুল ইসলাম, মানবাধিকার সংগঠন অধিাকারের বিবৃতি পাঠ করেন, গুমের স্বিকার আব্দুল কুদ্দুসের ছোট মেয়ে জেমি, গুমের শিকার মুরশালিনের পুত্র শাগর, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দশের বোন ও মানবাধিকার কর্মী পারভিনন্নেছা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামান, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন ফিরোজ। এসময় শতাধিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

অধিকারের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তার বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গত দু’ যুগেরও বেশি সময় ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকার অধিকারকে রুখে দিতে সব ধরণের বল প্রয়োগ করেছে এমনকি, অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান এবং সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’ বছরের সাজা দেয়। এভাবে একের পর এক দমন-পীড়ন, গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে চরম সীমায় পৌঁছায়।

বক্তারা আরও বলেন, গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। গুমের আতঙ্ক দেশের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে বক্তারা

প্রিয়জনের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৫৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে আর কতো অপেক্ষা করতে হবে? আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচিতে আসা হারানো মানুষগুলোর স্বজনদের ছিলেঅ এমনই আকুতি। বাবার জন্য কাঁদছে সন্তান, সন্তানের জন্য কাঁদছে মা। স্বামীর জন্য স্ত্রী, ভাইয়ের জন্য ভাই। নিখোঁজ মানুষগুলোর জন্য পরিবারের সদস্যদের শুধু কান্না আর কান্না। কথিত আয়নাঘর বা বন্দিশালার সাথে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে এবং তাদের কোন প্রকার দায় মুক্তি দেয়া যাবে না। গুমসহ সব মানবাধিকার লঙ্ঘণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকারের এবং মায়ের ডাকের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার’র রাজশাহীর সমন্বয়ক সাংবাদিক মঈন উদ্দিন খানের পরিচালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন-রাজশাহী সাংবাকি ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ডাঃ নাজিব ওয়াদুদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী মেহেদী সজিব, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান আব্দুল আউয়াল, স্টুডেন্ট রইটস এ্যাসেসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী সাংবদিক রাসেদ রাজন,রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী ফহিম রেজা, রাজশাহী কোর্টের আইনজীবি ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোটেক নিজাম উদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কাউছারী, গুমের শিকার হয়ে ফিরে আসা শাইরুল ইসলাম, মানবাধিকার সংগঠন অধিাকারের বিবৃতি পাঠ করেন, গুমের স্বিকার আব্দুল কুদ্দুসের ছোট মেয়ে জেমি, গুমের শিকার মুরশালিনের পুত্র শাগর, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দশের বোন ও মানবাধিকার কর্মী পারভিনন্নেছা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামান, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন ফিরোজ। এসময় শতাধিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

অধিকারের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৭০৯ ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে কর্তৃত্ববাদী সরকার কর্তৃক আয়না ঘরে গুম হয়ে থাকা ব্যারিস্টার আরমান, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আজমী এবং ৫ বছর গুমের শিকার ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা মুক্তি পেয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তার বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গত দু’ যুগেরও বেশি সময় ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকার অধিকারকে রুখে দিতে সব ধরণের বল প্রয়োগ করেছে এমনকি, অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান এবং সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’ বছরের সাজা দেয়। এভাবে একের পর এক দমন-পীড়ন, গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে চরম সীমায় পৌঁছায়।

বক্তারা আরও বলেন, গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। গুমের আতঙ্ক দেশের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা।