দেশে মানুষের মাথাপিছু ঋণ পৌনে ১১ লাখ টাকা
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৫:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। গণ আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া মোট ঋণ ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসেবে দেশের প্রতিজন নাগরিকের মাথাপিছু ঋণ বর্তমানে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ টাকা শোধ করতে হবে দেশের প্রত্যেক করদাতাদেরই।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া তথ্যে দেশি-বিদেশি ঋণের বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক সরকারের যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় দেশি উৎস থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ বেশি। যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেয়াকে সব সময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গত ১৫ বছরে অনেক বিদেশি ঋণও নেয়া হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই নেয়া দর-কষাকষি ও বাছবিচারহীনভাবে; যা সরকারের দায়দেনা পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরের বেশি সময়ে ঋণ নেয়া হয়েছে। এসব ঋণের বড় অংশ নেয়া হয় দেশি উৎস থেকে। এরমধ্যে আবার বেশি ঋণ নেয়া হয় দেশের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া দেশি-বিদেশি ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পদত্যাগের সময় শেখ হাসিনার সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই ঋণ শোধে করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সামনে ঋণ পরিশোধের চাপ আসছে। এতো অপরিকল্পিত ও প্রায় দর-কষাকষিহীনভাবে বৈদেশিক মুদ্রায় সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট নেয়া হয়েছে। তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে।
অর্থ বিভাগ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ঋণের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে মোট ঋণের স্থিতি দেখানো হয় ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ঋণের হিসাব হালনাগাদ করা হয় ৩ মাস পর। মার্চ ও জুনের হিসাব আরো কিছুদিন পর তৈরি করা হবে।
অর্থ বিভাগের ধারণা, চলতি বছর জুন শেষে দেশি-বিদেশি ঋণ স্থিতি দাঁড়াবে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার। এরমধ্যে দেশি অংশ হবে ১০ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বিদেশি অংশ ৮ লাখ এক হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের যে স্থিতি ছিলো, তা দেশের ৩টি বাজেটের মোট অর্থ বরাদ্দের সমান।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বড় ঋণের বোঝা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, চীনের কাছে কিছু ঋণের সুদহার এবং শোধ দেয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানাবে সরকার। বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চাপ।
এদিকে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানান, চীন থেকে এখন পর্যন্ত চার বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ঋণ ছাড় করা হয়েছে। আরও সাত বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে দেশটির।