ঢাকা ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘সরকার যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবেন’

সোহরাব হোসন সৌরভ, রাজশাহী
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১২:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদ আবু সাঈদ থেকে শুরু করে রায়হানসহ সকল শহীদ যে উদ্দেশ্য নিয়ে লড়াই করেছে, জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ সবাই রাস্তায় নেমে গিয়েছিল, আমরা সেই বীর যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। এখন যে সরকার এসেছে আমরা আশা করি যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই তাঁদের কাজ সম্পন্ন করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবেন।

শুক্রবার বাদ জুময়া ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ মাঠে শিবির নেতা শহীদ রায়হানের জানাযাপূর্ব সমাবেশে জনতার উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গত ৫ আগস্ট সোমবার রাজশাহীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে শেষ সময়ে আওয়ামী লীগের ছোড়া গুলিতে আহত হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন। আলী রায়হানের জানাযায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলী। পরিচালনা করেন, মহানগরী সেক্রেটারি ইমাজউদ্দীন মন্ডল।

সমাবেশে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই সরকারের কাছে দাবি করবো, এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, যাদেরকে পঙ্গু করা হয়েছে এবং গুম করে ফেলা হয়েছে তাদেরকে আমাদের জাতীয় জীবনে যথাযথ জায়গায় স্থান এবং পাঠ্য সিলেবাসে তাদের সম্মানের জায়গা তৈরি করে দিতে হবে। তাঁরা শাহাদাত বরণ করেছে জুলুমতন্ত্রকে ইনসাফে পরিণত করে জনগণকে উপহার দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, “আমরা জুলুমমুক্ত বাংলাদেশ চাই। তাহলে এই শহীদের প্রতি সম্মান দেখানো হবে। আমরা অঙ্গীকার করছি যে যে লড়াই শুরু হয়েছে তা হচ্ছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য, অধিকার আদায় করে মানুষকে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ উপহার দেয়ার জন্য। এর ফলাফলকে ছিনতাই ও লুন্ঠন করার জন্য যারাই এগিয়ে আসবে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের ৩৬ কোটি হাত তাদের প্রতিরোধ করবে।” তিনি বলেন, ইসলাম আত্মত্যাগ ও মানবতার শিক্ষা দেয়। জীবন দিয়ে তারা এ আন্দোলনকে সফল করে স্বৈরাচারের পতনকে নিশ্চিত করেছে। এর সাথে কেউ কেউ দিশা হারিয়ে সারাজীবনের কপাল বানানোর জন্য ব্যস্ত হয়েছে তাদের তীব্রভাবে ঘৃণা করি। এই বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য আরো একটি অপরাধী শক্তি মাঠে নেমেছে। যেভাবে জনগণের সঙ্গে হাতে হাত রেখে এ আন্দোলন করেছি সেইভাবেই স্বৈরাচারের প্রেতাত্মাদেরকেও বিদায় দিবো ইনশাআল্লাহ।

আপনারা আগের মতো প্রস্তুত হয়ে থাকুন। তবে দুর্বৃত্তদের ধরে বিচারকাজ শেষ করে ফেলবেন না। নিজেরা বিচার করলে অবিচার হওয়ার আশংকা রয়েছে। আরো কিছু দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর উপর জুলুম অত্যাচার করছে। এই দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু আমরা মানি না। এই জমিনের উপর যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা এদেশেরই নাগরিক। ধর্ম যার যার অধিকার সবার। আমাদের যে অধিকার অন্য যে কোন ধর্মের মানুষের তেমনি অধিকার। এই সমাজের যে কোন জায়গায় এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয় তাদের ধরে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। আমরা আইন হাতে তুলে নিবো না। শিক্ষা নিয়ে যেন সে বেঁচে থাকতে পারে। আমরা এমন শিক্ষা দিবো সেটা হবে মানবিক ভদ্র শিক্ষণীয়- যার জন্য গোটা বিশ্বের লোক প্রশংসা করবে।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। এখনো হাসপাতালে অনেকেই কাতরাচ্ছেন। জনতার আন্দোলন যে বৃথা যায় না তা প্রমাণিত হয়েছে। আলী রায়হানের শাহাদাত তার প্রমাণ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগরী জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা এড. সফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপি নেতা নজরুল হোদা, শফিকুল ইসলাম শাফিক, শহীদ রায়হানের পিতা মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ। জানাযায় ইমামতি করেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

‘সরকার যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করবেন’

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১২:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহীদ আবু সাঈদ থেকে শুরু করে রায়হানসহ সকল শহীদ যে উদ্দেশ্য নিয়ে লড়াই করেছে, জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ সবাই রাস্তায় নেমে গিয়েছিল, আমরা সেই বীর যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। এখন যে সরকার এসেছে আমরা আশা করি যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই তাঁদের কাজ সম্পন্ন করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবেন।

শুক্রবার বাদ জুময়া ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ মাঠে শিবির নেতা শহীদ রায়হানের জানাযাপূর্ব সমাবেশে জনতার উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গত ৫ আগস্ট সোমবার রাজশাহীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে শেষ সময়ে আওয়ামী লীগের ছোড়া গুলিতে আহত হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন। আলী রায়হানের জানাযায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা কেরামত আলী। পরিচালনা করেন, মহানগরী সেক্রেটারি ইমাজউদ্দীন মন্ডল।

সমাবেশে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই সরকারের কাছে দাবি করবো, এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, যাদেরকে পঙ্গু করা হয়েছে এবং গুম করে ফেলা হয়েছে তাদেরকে আমাদের জাতীয় জীবনে যথাযথ জায়গায় স্থান এবং পাঠ্য সিলেবাসে তাদের সম্মানের জায়গা তৈরি করে দিতে হবে। তাঁরা শাহাদাত বরণ করেছে জুলুমতন্ত্রকে ইনসাফে পরিণত করে জনগণকে উপহার দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, “আমরা জুলুমমুক্ত বাংলাদেশ চাই। তাহলে এই শহীদের প্রতি সম্মান দেখানো হবে। আমরা অঙ্গীকার করছি যে যে লড়াই শুরু হয়েছে তা হচ্ছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য, অধিকার আদায় করে মানুষকে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ উপহার দেয়ার জন্য। এর ফলাফলকে ছিনতাই ও লুন্ঠন করার জন্য যারাই এগিয়ে আসবে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের ৩৬ কোটি হাত তাদের প্রতিরোধ করবে।” তিনি বলেন, ইসলাম আত্মত্যাগ ও মানবতার শিক্ষা দেয়। জীবন দিয়ে তারা এ আন্দোলনকে সফল করে স্বৈরাচারের পতনকে নিশ্চিত করেছে। এর সাথে কেউ কেউ দিশা হারিয়ে সারাজীবনের কপাল বানানোর জন্য ব্যস্ত হয়েছে তাদের তীব্রভাবে ঘৃণা করি। এই বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য আরো একটি অপরাধী শক্তি মাঠে নেমেছে। যেভাবে জনগণের সঙ্গে হাতে হাত রেখে এ আন্দোলন করেছি সেইভাবেই স্বৈরাচারের প্রেতাত্মাদেরকেও বিদায় দিবো ইনশাআল্লাহ।

আপনারা আগের মতো প্রস্তুত হয়ে থাকুন। তবে দুর্বৃত্তদের ধরে বিচারকাজ শেষ করে ফেলবেন না। নিজেরা বিচার করলে অবিচার হওয়ার আশংকা রয়েছে। আরো কিছু দুর্বৃত্ত দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর উপর জুলুম অত্যাচার করছে। এই দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু আমরা মানি না। এই জমিনের উপর যারা জন্মগ্রহণ করেছে তারা এদেশেরই নাগরিক। ধর্ম যার যার অধিকার সবার। আমাদের যে অধিকার অন্য যে কোন ধর্মের মানুষের তেমনি অধিকার। এই সমাজের যে কোন জায়গায় এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয় তাদের ধরে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। আমরা আইন হাতে তুলে নিবো না। শিক্ষা নিয়ে যেন সে বেঁচে থাকতে পারে। আমরা এমন শিক্ষা দিবো সেটা হবে মানবিক ভদ্র শিক্ষণীয়- যার জন্য গোটা বিশ্বের লোক প্রশংসা করবে।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। এখনো হাসপাতালে অনেকেই কাতরাচ্ছেন। জনতার আন্দোলন যে বৃথা যায় না তা প্রমাণিত হয়েছে। আলী রায়হানের শাহাদাত তার প্রমাণ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগরী জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা এড. সফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপি নেতা নজরুল হোদা, শফিকুল ইসলাম শাফিক, শহীদ রায়হানের পিতা মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ। জানাযায় ইমামতি করেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান।