ঢাকা ০৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানে ভারী বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল

প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং

বান্দরবান প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ও পাহাড়ী ঢলে খাল ও ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড় ধ্বসের আশংকা। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

সাঙ্গুী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া জেলা শহরে সাংগু নদীর তীরবর্তী বসতবাবী,ইসলামপুর, আর্মি পাড়া, শেরে বাংলা নগর, মেম্বার পাড়াসহ নীচু এলাকাসমূহে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে পাহাড়ী ঢল ও নাফ নদীর উপশাখার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক পরিবার।

এদিকে, প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন,পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া ঘুমধুম ইউনিয়নে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,পাহাড়ি ঢলের পানি ঘুমধুম সীমান্তখাল দিয়ে আসায় ইউনিয়নের ১ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী মধ্যম পাড়া, কেনার পাড়া, বাজার পাড়া, হিন্দুপাড়া, পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়ার বাড়িঘর ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে কয়েকটি পাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুমব্রু বাজারে প্রায় দোকানে জলাবদ্ধতা হওয়ায় ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির সাথে বালি এসে অনেক কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঘুমধুম ইউনিয়নে অনেক পাকা রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যাচাই বাচাই করতে,ভাইস চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনকে সভাপতি করে উপজেলা প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।তারা সরজমিনে ঘুরে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অপরদিকে, ভারী প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে রুমায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ের পাদদেশে ও বন্যায় সাঙ্গু নদীর তীরে কবলিত সাধারণ মানুষের আশ্রয় দিতে রুমা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের ২৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, দুর্যোগকালিন সময়ে সাধারণ মানুষের জরুরী তথ্য ও সেবা দিতে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। তাছাড়া পাহায়ের পাদদেশে অবস্থান করা মানুষগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আসতে বারবার মাইকিং করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, দুর্যোগক মোকাবেলায় সকল ধরনে প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ৭টি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। তবে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে তাদের মাঝে ত্রাণ সহয়াতা প্রদান করা হচ্ছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে,তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বান্দরবানে ভারী বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল

প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:১০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

টানা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ও পাহাড়ী ঢলে খাল ও ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় দেখা দিয়েছে পাহাড় ধ্বসের আশংকা। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

সাঙ্গুী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া জেলা শহরে সাংগু নদীর তীরবর্তী বসতবাবী,ইসলামপুর, আর্মি পাড়া, শেরে বাংলা নগর, মেম্বার পাড়াসহ নীচু এলাকাসমূহে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে পাহাড়ী ঢল ও নাফ নদীর উপশাখার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক পরিবার।

এদিকে, প্রবল বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন,পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া ঘুমধুম ইউনিয়নে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,পাহাড়ি ঢলের পানি ঘুমধুম সীমান্তখাল দিয়ে আসায় ইউনিয়নের ১ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী মধ্যম পাড়া, কেনার পাড়া, বাজার পাড়া, হিন্দুপাড়া, পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়ার বাড়িঘর ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে কয়েকটি পাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুমব্রু বাজারে প্রায় দোকানে জলাবদ্ধতা হওয়ায় ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির সাথে বালি এসে অনেক কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঘুমধুম ইউনিয়নে অনেক পাকা রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যাচাই বাচাই করতে,ভাইস চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনকে সভাপতি করে উপজেলা প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।তারা সরজমিনে ঘুরে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অপরদিকে, ভারী প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে রুমায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ের পাদদেশে ও বন্যায় সাঙ্গু নদীর তীরে কবলিত সাধারণ মানুষের আশ্রয় দিতে রুমা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের ২৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, দুর্যোগকালিন সময়ে সাধারণ মানুষের জরুরী তথ্য ও সেবা দিতে ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। তাছাড়া পাহায়ের পাদদেশে অবস্থান করা মানুষগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আসতে বারবার মাইকিং করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, দুর্যোগক মোকাবেলায় সকল ধরনে প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ৭টি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। তবে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে তাদের মাঝে ত্রাণ সহয়াতা প্রদান করা হচ্ছে। তবে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে,তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।