ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিবন্ধিত ক্লিনিকে সিজারিয়ান, প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু

যশোর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যশোরের রূপদিয়ায় গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি অনিবন্ধিত ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনকালে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর ক্লিনিকের কর্মীরা পালিয়ে গেলেও রোগী নিয়ে আসা দালালকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার (২৪ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজনেরা জানান, সোমবার (২৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে যশোর সদর উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী লিমা খাতুন রিমা’র প্রসব যন্ত্রণা উঠে। এসময় এক ধাত্রীর পরামর্শে তাকে রূপদিয়া বাজারের গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয়। এরপর তাকে কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া ও রক্তের ব্যবস্থা না করেই সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনকালে প্রসূতি মারা গেলে কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে রক্তস্বল্পতার কারণে জ্ঞান‌ ফিরছে না জানিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।

এরপর স্বজনরা তাকে খুলনা নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, রোগী অনেক আগেই মারা গেছে। মারা যাওয়ার সংবাদে স্বজনরা ক্লিনিকে গিয়ে তালা ঝুলানো দেখতে পায়। পরবর্তীতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নবজাতক ছেলে সন্তানটি মারা গেলে স্বজনরা ওই ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, গ্রামীণ ক্লিনিকের দালাল চক্রের সদস্য নরেন্দ্রপুর গ্রামের এক নারী ১২শ’ টাকার বিনিময়ে রিমাকে সোমবার (২৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কৌশলে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক নুরছালী তুলি।

রিমা বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলাম জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে রিমা সিজার করার সময় মারা গেছে। সিজারিয়ান অপারেশনের পরে রিমা বেগম বেঁচে আছে বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ভুল বুঝিয়ে ক্লিনিকে তালা মেরে দেয় । পরে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে।

নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মিহির মন্ডল বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর পর স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের লোকজন গ্রামীণ ক্লিনিক ঘেরাও করে। এ সময় ক্লিনিকের লোকজন তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। পরে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেলে এক পর্যায়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ভাংচুর করে। পরে পুলিশের একটি টিম নিয়ে আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।

প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়ে অনিবন্ধিত গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেলসহ স্বাস্থ্য প্রশাসনের একটি টিম।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অনিবন্ধিত ক্লিনিকে সিজারিয়ান, প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

যশোরের রূপদিয়ায় গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি অনিবন্ধিত ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনকালে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর ক্লিনিকের কর্মীরা পালিয়ে গেলেও রোগী নিয়ে আসা দালালকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার (২৪ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজনেরা জানান, সোমবার (২৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে যশোর সদর উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী লিমা খাতুন রিমা’র প্রসব যন্ত্রণা উঠে। এসময় এক ধাত্রীর পরামর্শে তাকে রূপদিয়া বাজারের গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেয়া হয়। এরপর তাকে কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া ও রক্তের ব্যবস্থা না করেই সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনকালে প্রসূতি মারা গেলে কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে রক্তস্বল্পতার কারণে জ্ঞান‌ ফিরছে না জানিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।

এরপর স্বজনরা তাকে খুলনা নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, রোগী অনেক আগেই মারা গেছে। মারা যাওয়ার সংবাদে স্বজনরা ক্লিনিকে গিয়ে তালা ঝুলানো দেখতে পায়। পরবর্তীতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নবজাতক ছেলে সন্তানটি মারা গেলে স্বজনরা ওই ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, গ্রামীণ ক্লিনিকের দালাল চক্রের সদস্য নরেন্দ্রপুর গ্রামের এক নারী ১২শ’ টাকার বিনিময়ে রিমাকে সোমবার (২৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কৌশলে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক নুরছালী তুলি।

রিমা বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলাম জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে রিমা সিজার করার সময় মারা গেছে। সিজারিয়ান অপারেশনের পরে রিমা বেগম বেঁচে আছে বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ভুল বুঝিয়ে ক্লিনিকে তালা মেরে দেয় । পরে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে।

নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মিহির মন্ডল বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর পর স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের লোকজন গ্রামীণ ক্লিনিক ঘেরাও করে। এ সময় ক্লিনিকের লোকজন তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। পরে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেলে এক পর্যায়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ভাংচুর করে। পরে পুলিশের একটি টিম নিয়ে আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।

প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়ে অনিবন্ধিত গ্রামীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেলসহ স্বাস্থ্য প্রশাসনের একটি টিম।