বরিশাল রূপাতলী বাস টার্মিনাল প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর থেকে ১৫ রুটে বাস চলাচল শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বরিশাল বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের পর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ঘোষণা দেয়া হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এ বৈঠক আহবান করেছিলেন। বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বরিশাল বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী।

এর আগে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫টি রুটে বাস ধর্মঘট করেন পরিবহন শ্রমিকরা। এর ফলে বরিশাল থেকে দক্ষিণের বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ছাড়াও বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব রুটে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়ে।

বৈঠক সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনার পর মালিক-শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হন। এ সময় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয় প্রশাসন। এরপর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে বাসশ্রমিকদের বিরুদ্ধে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্রজমোহন কলেজের এক ছাত্রী ঝালকাঠি থেকে বাসে বরিশালে আসছিলেন। তিনি শিক্ষার্থী হাওয়ায় অর্ধেক ভাড়া নিতে বললে বাসচালকের সহকারী তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান এবং একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে মাঝপথে নামিয়ে দেন। পরে কলেজের কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি বিষয়টি মীমাংসার জন্য রূপাতলী বাস টার্মিনালে গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটি ভাঙচুর করেন এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকেরা বুধবার সকালে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট ডাকেন। বাস টার্মিনালের কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করেন, বাস ভাঙচুরের সময় তাঁদের মারধর করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তারা এ ধর্মঘট শুরু করেন।

বৈঠকের পর রাতে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হবে। বন্ধের দিনে কোনো হাফ ভাড়া থাকবে না। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরাও একমত হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বৈঠকে উভয় পক্ষ আলোচনায় সমঝোতায় পৌঁছেছে। এরপর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।