খুবি শিক্ষার্থী অর্ণব হত্যা: কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকারকে (২৬) গুলি করে হত্যার ঘটনায় কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাতেই তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে কোনো কিছু নিশ্চিত হতে না পেরে আটক তিনজনের নাম প্রকাশ করছে না পুলিশ। কয়েকটি দিক সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকেও কাউকে সন্দেহ করা হচ্ছে না।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ৯ টার দিকে খুলনা নগরের তেঁতুলতলা মোড় এলাকায় অর্ণবকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে চা পান করছিলেন অর্ণব। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে একটি গুলি অর্ণবের মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
অর্ণবদের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর গ্রামে। তার বাবা নীতীশ চন্দ্র সরকার একজন ঠিকাদার। তারা ১৫ বছর ধরে খুলনা নগরের বানরগাতি ইসলাম কমিশনারের মোড় এলাকার করতোয়া লেনে বাড়ি করে বসবাস করছেন। অর্ণবরা দুই ভাই। বড় অর্ণব। ছোট ভাই অনিক কুমার সরকার এবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
অর্ণবদের কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, অর্ণব খুবই ভদ্র ছেলে। এলাকায় কারও সঙ্গে তাকে কোনো খারাপ আচরণ করতে দেখা যায়নি। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসা দেখতেন। হঠাৎ অর্ণবের খুন হওয়ার খবর শুনে এলাকার সবাই হতবাক হয়েছেন।
তারা আরও বলেন, কিছুতেই নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। বিশেষ করে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হচ্ছে খুলনা। ঘটছে কোপাকুপি ও গোলাগুলির ঘটনা। এতে চরমভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন নগরবাসী।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অর্ণবের শরীরে বেশ কয়েকটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি পিস্তলের গুলি ও একটি শটগানের গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি বলেন, বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অর্ণবের বাবা ঠিকাদার ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সেই ব্যবসা দেখাশোনা করতেন অর্ণব। এটা নিয়ে কোনো পক্ষের মধ্যে দ্বদ্ব ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি নারীঘটিত কোনো ঘটনা বা অন্য কোনো দ্বদ্ব ছিল কি না, সে ব্যাপারগুলো তদন্তে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
খুলনা নগর পুলিশের (কেএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার পরপরই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিভিন্ন দিক মাথায় নিয়েই তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এদিকে, পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ বাড়িতে নিয়ে ঘণ্টাখানেক রেখে সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ণবের মাকে এখনো অর্ণবের খুন হওয়ার কথা জানানো হয়নি। তাকে বলা হয়েছে, অর্ণব মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে।