ঢাকা ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশুদের ঘর থেকে বের না হবার পরামর্শ চিকিৎসকদের

হাঁড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ, নিউমোনিয়ায় ৫ শিশুর মৃত্যু

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৯:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ ৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রংপুরসহ পুরো বিভাগের ৮ জেলায় হাঁড় কাঁপানো শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রার পারদ ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। সেই সাথে কনকনে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে।

এদিকে, প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে নিউমোনিয়া , কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাস কষ্ট , সর্দ্দি জ্বর সহ বিভিন্ন রোগ বালাই ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩ দিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫ শিশু চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা গেছে। আক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে দেড় শতাধিক শিশু ।

হাসপাতালের সর্দ্দার অফিসের আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, গত ৩ দিনে শীত জনিত কারনে নিউমোনিয়্য়া আক্রান্ত হয়ে ৫ শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ম্রাা গেছে। এদের মধ্যে ৩ জন ৫/৭ দিন বয়সী সদ্য প্রসুত শিশু।শিশুদের এবং বয়স্কদের ঘর থেকে বের না হবার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬ টায় রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলায় তেুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পরে সকাল ৯ টায় তা কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা রংপুর বিভাগে এবারের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা । একইভাবে সকাল ৬ টায় ঠাকুর গায়ে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রী , কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রী নীলফামারীর ডিমলায় ১০দশমিক ৮ ডিগ্রী, লালমনিরহাটে ১০ দশমিক ৮ গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রী সৈয়দপুরে ১১ দশমিক ১ এবং রংপুরে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপ মাত্রা আরো কমতে শুরু করে।

রংপুরে তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রীতে , নীলপামারীর সৈয়দপুরে ১০ দশমিক দ ডিগ্রিী, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী দিনাজপুরে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রী, নীলফামারীর ডিমলায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী , ঠাকুগায়ে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রী , লালমনিরহাটে ১০ দশমিক ৮ এবং গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৬ টায় সাধারনত তাপমাত্রা কম থাকে কিন্তু এবার বেলা বাড়ার পরেও তাপমাত্রা কমছে যার প্রমান রংপুর বিভাগের সব জেলাতে কমেছে। এটা আস্বাভাবিক ঘটনা বলে তারা জানিয়েছে।

এব্যাপারে রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, এবার পুরো সপ্তাহ জুড়ে শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে সেই সাথে তাপমাত্রা আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে জন জীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। গত ২ দিন ধরে সুর্যের মুখ দেখেনি এ অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে কনকনে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেনা।

তবে নগরীর চেয়ে শীতের তীব্রতা গ্রামাঞ্চলে আরও অনেক বেশী দিগন্ত জুড়ে খোলা জায়গা , শষ্য ক্ষেত আর গাছ পালার কারনে শীতের অনুভুতি আরো বেশী ফলে মানুষ খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে।

এবারের তীব্র শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমুল আর হতদরিদ্র পরিবার গুলো । শীত বস্ত্রের অভাবে মানবেতর ভাবে দিন কাটছে তাদের। প্রচন্ড শীতের কারনে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেনা ফলে কর্মহিন হয়ে পড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। এখন পর্যন্ত সরকারী ভাবে শীত বস্ত্র বিতরনের কোন পদেক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে শীতার্ত মানুষের অভিযোগ। অপরদিকে শীত জনিত নানান রোগ বালাই ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউট ডোরে শত শত শিশুদের নিয়ে স্বজনরা ভীড় করছে। অধিকাংশই জ্বর সর্দ্দি আর নিউমোনিয়া আর কোল্ড ড্য়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানিয়েছে যেহেতু বিভাগে বেড খালি নেই সে কারনে মুমুর্ষ রোগী ছাড়া ভর্তি নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শিশুদের ঘর থেকে বের না হবার পরামর্শ চিকিৎসকদের

হাঁড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ, নিউমোনিয়ায় ৫ শিশুর মৃত্যু

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৯:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

রংপুরসহ পুরো বিভাগের ৮ জেলায় হাঁড় কাঁপানো শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রার পারদ ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। সেই সাথে কনকনে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে।

এদিকে, প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে নিউমোনিয়া , কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাস কষ্ট , সর্দ্দি জ্বর সহ বিভিন্ন রোগ বালাই ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩ দিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫ শিশু চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা গেছে। আক্রান্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে দেড় শতাধিক শিশু ।

হাসপাতালের সর্দ্দার অফিসের আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, গত ৩ দিনে শীত জনিত কারনে নিউমোনিয়্য়া আক্রান্ত হয়ে ৫ শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ম্রাা গেছে। এদের মধ্যে ৩ জন ৫/৭ দিন বয়সী সদ্য প্রসুত শিশু।শিশুদের এবং বয়স্কদের ঘর থেকে বের না হবার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬ টায় রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলায় তেুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পরে সকাল ৯ টায় তা কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা রংপুর বিভাগে এবারের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা । একইভাবে সকাল ৬ টায় ঠাকুর গায়ে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রী , কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রী নীলফামারীর ডিমলায় ১০দশমিক ৮ ডিগ্রী, লালমনিরহাটে ১০ দশমিক ৮ গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রী সৈয়দপুরে ১১ দশমিক ১ এবং রংপুরে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপ মাত্রা আরো কমতে শুরু করে।

রংপুরে তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রীতে , নীলপামারীর সৈয়দপুরে ১০ দশমিক দ ডিগ্রিী, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী দিনাজপুরে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রী, নীলফামারীর ডিমলায় ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী , ঠাকুগায়ে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রী , লালমনিরহাটে ১০ দশমিক ৮ এবং গাইবান্ধায় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৬ টায় সাধারনত তাপমাত্রা কম থাকে কিন্তু এবার বেলা বাড়ার পরেও তাপমাত্রা কমছে যার প্রমান রংপুর বিভাগের সব জেলাতে কমেছে। এটা আস্বাভাবিক ঘটনা বলে তারা জানিয়েছে।

এব্যাপারে রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, এবার পুরো সপ্তাহ জুড়ে শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে সেই সাথে তাপমাত্রা আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে জন জীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে। গত ২ দিন ধরে সুর্যের মুখ দেখেনি এ অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে কনকনে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেনা।

তবে নগরীর চেয়ে শীতের তীব্রতা গ্রামাঞ্চলে আরও অনেক বেশী দিগন্ত জুড়ে খোলা জায়গা , শষ্য ক্ষেত আর গাছ পালার কারনে শীতের অনুভুতি আরো বেশী ফলে মানুষ খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে।

এবারের তীব্র শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমুল আর হতদরিদ্র পরিবার গুলো । শীত বস্ত্রের অভাবে মানবেতর ভাবে দিন কাটছে তাদের। প্রচন্ড শীতের কারনে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছেনা ফলে কর্মহিন হয়ে পড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। এখন পর্যন্ত সরকারী ভাবে শীত বস্ত্র বিতরনের কোন পদেক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে শীতার্ত মানুষের অভিযোগ। অপরদিকে শীত জনিত নানান রোগ বালাই ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউট ডোরে শত শত শিশুদের নিয়ে স্বজনরা ভীড় করছে। অধিকাংশই জ্বর সর্দ্দি আর নিউমোনিয়া আর কোল্ড ড্য়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানিয়েছে যেহেতু বিভাগে বেড খালি নেই সে কারনে মুমুর্ষ রোগী ছাড়া ভর্তি নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।