রাতের ভোটের কারিগর, ১১৬ ডিসি-এসপি গোয়েন্দাজালে
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৫৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫ ১২৬ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের বিগত নির্বাচনে জিতিয়ে দেয়ার নেপথ্যের আলোচিত-সমালোচিত ডিসি-এসপিরা এবার আলোচনায়। তাদের অর্থ-সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের কর গোয়েন্দারা। রাতের ভোটের কারিগর বলে পরিচিত এসব ডিসি-এসপির বিপুল অঙ্কের অবৈধ আয়ের অনুসন্ধানে নেমেছে সংস্থাটি।
১১৬ জন ডিসি ও এসপির বিরুদ্ধে আওয়ামী-লীগের আমলে নির্বাচনে ভোটের মাঠের ‘মাস্টার-মাইন্ড’ বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটের আগের রাতেই ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’-এ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা।
জানা গেছে, রাতের ভোটের সেই নির্বাচনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তৎকালীন সময়ের ৫৭ জন ডিসি ও পুলিশের ৫৯ জন এসপি। তাদের আয়কর নথি যাচাই করে প্রকৃত সম্পদের সাথে মিলিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআরের কর গোয়েন্দারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, তাদের বিষয়ে জনগণের একটা চাপা ক্ষোভ ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এই ক্ষোভ এখন প্রকাশ্যে। সরকারি এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক তথ্য আয়কর গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তারা এখন যাচাই-বাছাই করে কর অনুসন্ধান করবে।
আলোচিত সেই ৫৭ ডিসি হলো- ময়মনসিংহে ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, নেত্রকোনার মঈনউল ইসলাম, জামালপুরে আহমেদ কবীর, শেরপুরে আনার কলি মাহবুব, হবিগঞ্জে মাহমুদুল কবীর মুরাদ, সিলেটে এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, সুনামগঞ্জে মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মৌলভীবাজারে মো. তোফায়েল ইসলাম, ঢাকায় আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, গাজীপুরে ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, নরসিংদীতে সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, মাদারীপুরে মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, শরীয়তপুরে মো. কাজী আবু তালেব, নারায়ণগঞ্জে রাব্বী মিয়া, মুন্সীগঞ্জে সায়লা ফারজানা, কিশোরগঞ্জে মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলে মো. শহীদুল ইসলাম,ফরিদপুরে উম্মে সালমা তানজিয়া, মানিকগঞ্জে এস এম ফেরদৌস, গোপালগঞ্জে মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, বান্দরবানে মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম, খাগড়াছড়িতে মো. শহিদুল ইসলাম, কক্সবাজারে মো. কামাল হোসেন, লক্ষ্মীপুরে অঞ্জন চন্দ্র পাল, রাজবাড়ীতে মো. শওকত আলী, চট্টগ্রামে মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, রাঙামাটিতে এ কে এম মামুনুর রশিদ,চাঁদপুরে মো. মাজেদুর রহমান খান, ফেনীতে মো. ওয়াহিদুজ্জামান, নোয়াখালীতে তন্ময় দাস, কুমিল্লায় মো. আবুল ফজল মীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হায়াত-উদ-দৌলা খান, রাজশাহীতে এস এম আব্দুল কাদের, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ জেড এম নুরুল হক, নওগাঁয় মো. মিজানুর রহমান, নাটোরে মো. শাহরিয়াজ।
এছাড়া পাবনায় জসিম উদ্দিন, বগুড়ায় ফয়েজ আহমেদ,খুলনায় মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, বাগেরহাটে তপন কুমার বিশ্বাস, সাতক্ষীরায় এস এম মোস্তফা কামাল, যশোরে মো. আব্দুল আওয়াল, সিরাজগঞ্জে কামরুন নাহার সিদ্দীকা, জয়পুরহাটে মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মাগুরায় মো. আলী আকবর, ঝিনাইদহে সরোজ কুমার নাথ, নড়াইলে আনজুমান আরা, কুষ্টিয়ায় মো. আসলাম হোসেন, ঝালকাঠিতে মো. হামিদুল হক, মেহেরপুরে মো. আতাউল গনি, চুয়াডাঙ্গায় গোপাল চন্দ্র নাথ, বরিশালে এস এম অজিয়র রহমান,পিরোজপুরে আবু আহমেদ সিদ্দিকী, পটুয়াখালীতে মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, বরগুনায় কবীর মাহমুদ, ভোলায় মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দীক ও রংপুরে এনামুল হাবীব।
এসপিদের মধ্যে আলোচিতরা হলো- পঞ্চগড়ের এস এম সিরাজুল হুদা, ঠাকুরগাঁওয়ের উত্তম প্রসাদ পাঠক, লালমনিরহাটে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, রংপুরে মো. ফেরদৌস আলী চৌধুরী, দিনাজপুরে শাহ ইফতেখার আহমেদ, নীলফামারীতে মোহাম্মদ গোলাম সবুর,গাইবান্ধায় মো. কামাল হোসেন, জয়পুরহাটে মোহাম্মদ নূরে আলম, বগুড়ায় সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মো. ছাইদুল হাসান, পাবনায় মো. আকবর আলী মুনসী, মেহেরপুরে মো. রফিকুল আলম, কুষ্টিয়ায় এ এইচ এম আবদুর রকিব, চুয়াডাঙ্গায় আব্দুল্লাহ আল মামুন, নওগাঁয় মুহাম্মদ রাশিদুল হক, রাজশাহীতে মো. সাইফুর রহমান, নাটোরে মো. তারিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জে মো. আরিফুর রহমান, ঝিনাইদহে মো. আজিম-উল-আহসান, মাগুরায় মো. মশিউদ্দৌলা রেজা, নড়াইলে মোসা. সাদিরা খাতুন, বাগেরহাটে আবুল হাসনাত খান, খুলনায় মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, সাতক্ষীরায় কাজী মনিরুজ্জামান, বরগুনায় মো. আবদুস ছালাম, পটুয়াখালীতে মো. সাইদুল ইসলাম।
এছাড়া ঝালকাঠিতে মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল, পিরোজপুরে মোহাম্মদ শফিউর রহমান,ভোলায় মো. মাহিদুজ্জামান, বরিশালে ওয়াহিদুল ইসলাম, গোপালগঞ্জে আল-বেলী আফিফা, মাদারীপুরে মো. মাসুদ আলম, শরীয়তপুরে মো. মাহবুবুল আলম, ফরিদপুরে মো. শাহজাহান, রাজবাড়ীতে জি এম আবুল কালাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জে গোলাম মোস্তফা রাসেল, ঢাকা জেলায় মো. আসাদুজ্জামান, গাজীপুরে কাজী শফিকুল আলম, মানিকগঞ্জে মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, মুন্সীগঞ্জে মোহাম্মদ আসলাম খান, নরসিংদীতে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইলে সরকার মোহাম্মদ কায়সার, জামালপুরে মো. কামরুজ্জামান, শেরপুরে মোনালিসা বেগম, নেত্রকোনায় মো. ফয়েজ আহমেদ, মৌলভীবাজারে মো. মনজুর রহমান, হবিগঞ্জে এস এম মুরাদ আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, কুমিল্লায় আব্দুল মান্নান, ফেনীতে জাকির হোসেন, কিশোরগঞ্জে মোহাম্মদ রাসেল শেখ, সুনামগঞ্জে মোহাম্মদ এহসান শাহ, সিলেটে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন,নোয়াখালীতে মো. শহীদুল ইসলাম, লক্ষ্মীপুরে মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, চট্টগ্রামে এস এম শফিউল্লাহ, কক্সবাজারে মো. মাহফুজুল ইসলাম, রাঙামাটিতে মীর আবু তৌহিদ ও বান্দরবানে সৈকত শাহীন।
এসব কর্মকর্তাদের কর ফাঁকি উদঘাটন হলে আয়কর আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেবে এনবিআর। এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জানাবে। আইন অনুযায়ী তখন দুদক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।