পাশ করার পরও একই স্কুলে ভর্তি হতে লাগে ৮-১০ হাজার টাকা
শিক্ষায় বাণিজ্য, জিম্মি শিক্ষার্থী
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চলছে শিক্ষা নিয়ে নানান রকমের বাণিজ্য। এই বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিক, গাইড বই বাজারজাতকারী বিভিন্ন প্রকাশনী, বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের মালিক। এদের কাছে জিম্মি দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
সারা দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উচ্চশিক্ষিত বেকারদের বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে নামমাত্র বেতনে কতিপয় শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে তাদের মার্কেটিংয়ের কাজে ব্যবহার করে ছাত্র সংগ্রহ করে চলে এইসব প্রতিষ্ঠান।
শিক্ষাখাতে বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানিয়েছে মানবিক টিম নামের একটি সংগঠন। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়েছে। মানববন্ধনে সংগঠনটির আহ্বায়ক আব্দুর রহিম বাচ্চু বলেন, প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা পাশ করার পরও একই স্কুলে ভর্তি হতে ৮-১০ হাজার টাকা লাগে। আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এমনিতেই দুর্বল। এটার কারণে আরও পিছিয়ে যাচ্ছে। এর জন্যই আমরা প্রতিবাদ করছি। এই মানববন্ধন থেকে আমরা দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষাখাতে বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
মানববন্ধনে অন্য বক্তারা বলেন, একই বিদ্যালয়ে পাশ করার পরেও ১০-১৫ হাজার টাকা কেন দিতে হবে? এটি একটি ভয়ংকর লুটপাট এবং দুর্নীতিযুক্ত কাজ। এটা বন্ধ করতে হবে। তা-না হলে দেশের গরীব মানুষ শিক্ষা জীবন থেকে বঞ্চিত হবে। মানববন্ধনে সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব ইন্জিনিয়ার আনোয়ার হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, মনিরুল ইসলাম বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্তরর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষার সব স্তরে নিয়োগ বাণিজ্য ছড়িয়ে গেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার বানিজ্যিকীকরণ বন্ধে শুধু সরকারি উদ্যোগ নয়, জনজাগরণেরও প্রয়োজন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, দেশের চলমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনহীন, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোচিং প্রতিষ্ঠানের বেপরোয়া শিক্ষা বাণিজ্য করে আসছে।
সম্প্রতি বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সভাকক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বাণিজ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পণ্যের মতো যার টাকা আছে, সে কিনে নিচ্ছে। আর যার অর্থ নেই, সে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষাকে বাণিজ্যের হাত থেকে বাঁচাতে হলে রাষ্ট্রের হাতে এর নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক বলেন, সর্বশেষ যে শিক্ষানীতি হয়েছে সেখানে টাকা দিয়ে শিক্ষাকে কীভাবে কেনা যায় সেটি প্রাধান্য পেয়েছে।করোনার সময়ে শিক্ষার বৈষম্য প্রকট হয়েছে। এ সময়ে প্রচুর শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। মেয়েদের বাল্য বিবাহ হয়েছে।