ঢাকা ০৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমিকের আত্মহত্যার খবরে  প্রেমিকার আত্মহত্যা 

অনন্ত সেলিম, বগুড়া
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বগুড়ায় চাকরি করা অবস্থায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রেমিক হৃদয় কর্মকার (৩০)। অন্যদিকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রেমিকা সুদীপ্তা দাস কেকা (২৬)।

তবে মেয়ের পরিবার বিষয়টি  অস্বীকার করছে না বলে জানিয়েছে শাহজানপুর থানা পুলিশ। ত্রিভুজ সম্পর্কের ঘটনা থাকতে পারে এমন ধারণা পুলিশের।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লায় সুদীপ্তা দাস কেকার মৃ’ত্যু হয়। এর আগে সোমবার গভীর রাতে তার প্রেমিক হৃদয় কর্মকার বগুড়ায় তার ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি বুধবার জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, হৃদয় কর্মকার শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ এলাকার বিকাশ কর্মকারের ছেলে। তিনি বগুড়ায় একটি ঔষধ  কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অপরদিকে, সুদীপ্তা দাস (কেকা) শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লার অতুল কৃষ্ণ দাসের মেয়ে। তিনি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পাশাপাশি তিনি  সংগীত শিল্পীও ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় প্রেমিক হৃদয় কর্মকারের মৃত্যুর খবর শোনার পর নিজ বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন প্রেমিকা সংগীত শিল্পী সুদীপ্তা দাস (কেকা)। পরে পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত স্থানীয় পিপিডি হাসপাতালে নিলে তারা কেকাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করতে বলেন। পরবর্তীতে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে বিকেলে তিনি মারা যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হৃদয় কর্মকার বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সুদীপ্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে সুদীপ্তাকে তিনি বুঝতে দেননি যে তিনি বিবাহিত ছিলেন। হৃদয়ের কর্মস্থল বগুড়ায় হওয়ায় সুদীপ্তা মাঝে মধ্যেই বগুড়ায় গিয়ে হৃদয় কর্মকার এর সাথে  দেখা করতেন। পরে বিষয়টি জানাজানি  হওয়ার কারণেই হয়তো দুজনেই আত্মহত্যায় প্রাণ দিয়ে থাকতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।

শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বক্তব্য , বগুড়ায় প্রেমিকের মৃত্যুর খবর শুনেই প্রেমিকার বাড়িতে থাকা  গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলেই বিশ্বস্ত সূত্রে  জানাগেছে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুদীপ্তা দাস কেকা মারা যান। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনার জট ভাঙতে পারে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমরাও জানতে পেরেছি যে ত্রিভুজ সম্পর্কের জেরে কেকা আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তারা বলছেন, কেকা দেরীতে ঘুম থেকে ওঠায় আমরা তাকে বকাবকি করতাম। এই কারণে কেকা তার পরিবারের ওপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন।

পুলিশ আরো জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ম’র্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

প্রেমিকের আত্মহত্যার খবরে  প্রেমিকার আত্মহত্যা 

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বগুড়ায় চাকরি করা অবস্থায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রেমিক হৃদয় কর্মকার (৩০)। অন্যদিকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রেমিকা সুদীপ্তা দাস কেকা (২৬)।

তবে মেয়ের পরিবার বিষয়টি  অস্বীকার করছে না বলে জানিয়েছে শাহজানপুর থানা পুলিশ। ত্রিভুজ সম্পর্কের ঘটনা থাকতে পারে এমন ধারণা পুলিশের।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লায় সুদীপ্তা দাস কেকার মৃ’ত্যু হয়। এর আগে সোমবার গভীর রাতে তার প্রেমিক হৃদয় কর্মকার বগুড়ায় তার ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি বুধবার জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে, হৃদয় কর্মকার শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ এলাকার বিকাশ কর্মকারের ছেলে। তিনি বগুড়ায় একটি ঔষধ  কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অপরদিকে, সুদীপ্তা দাস (কেকা) শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লার অতুল কৃষ্ণ দাসের মেয়ে। তিনি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী পাশাপাশি তিনি  সংগীত শিল্পীও ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় প্রেমিক হৃদয় কর্মকারের মৃত্যুর খবর শোনার পর নিজ বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন প্রেমিকা সংগীত শিল্পী সুদীপ্তা দাস (কেকা)। পরে পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত স্থানীয় পিপিডি হাসপাতালে নিলে তারা কেকাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করতে বলেন। পরবর্তীতে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে বিকেলে তিনি মারা যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হৃদয় কর্মকার বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সুদীপ্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে সুদীপ্তাকে তিনি বুঝতে দেননি যে তিনি বিবাহিত ছিলেন। হৃদয়ের কর্মস্থল বগুড়ায় হওয়ায় সুদীপ্তা মাঝে মধ্যেই বগুড়ায় গিয়ে হৃদয় কর্মকার এর সাথে  দেখা করতেন। পরে বিষয়টি জানাজানি  হওয়ার কারণেই হয়তো দুজনেই আত্মহত্যায় প্রাণ দিয়ে থাকতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।

শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বক্তব্য , বগুড়ায় প্রেমিকের মৃত্যুর খবর শুনেই প্রেমিকার বাড়িতে থাকা  গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলেই বিশ্বস্ত সূত্রে  জানাগেছে। পরে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুদীপ্তা দাস কেকা মারা যান। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনার জট ভাঙতে পারে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমরাও জানতে পেরেছি যে ত্রিভুজ সম্পর্কের জেরে কেকা আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তারা বলছেন, কেকা দেরীতে ঘুম থেকে ওঠায় আমরা তাকে বকাবকি করতাম। এই কারণে কেকা তার পরিবারের ওপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন।

পুলিশ আরো জানায়, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ম’র্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।