ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ৬১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেফতারের পর আসামির জবানবন্দি ও র‍্যাবের বর্ণনা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

খুনের কাজে তার ব্যবহৃত যে চাইনিজ কুড়ালটি ছিল সেটিও জাহাজে মাস্টারের নিরাপত্তার জন্য রাখা ছিল।

ইরফান জানায়, বেতন না দেয়ায় ক্ষোভ থেকে জাহাজের মাস্টারকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে সে। আর বাকিরা প্রতিবাদ না করায় তাদের ওপরও ক্ষোভ ছিলো ইরফানের। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনেন। সেসব তিনি নিজের কাছে রেখে দেন। গত ২২ ডিসেম্বর যখন জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের পথে রওনা হয় তখন চাঁদপুরের হাইনচর এলাকায় পৌঁছানোর পর সেখানে জাহাজটি নোঙর করা হয়।

তিনি জানান, সেদিন রাতের খাবারের সাথে ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন আকাশ মণ্ডল। খাবার খেয়ে জাহাজের অন্য সদস্যরা নিজেদের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। সর্বশেষ বেঁচে থাকা জুয়েল রাত ২টার দিকে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। তবে আকাশ তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পায়চারি করতে থাকে থাকে এবং একপর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সে প্রথমে জাহাজের মাস্টারকে একটি চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তার মূলত জাহাজের মাস্টারের ওপরই ক্ষোভ ছিলো। মাস্টারকে খুনের পর তার মনে হয় বাকিরা বেঁচে থাকলে সে ধরা খেয়ে যাবে এবং তাদের ওপর একটা ক্ষোভও ছিল। পড়ে একে একে বাকি সদস্যদের কুপিয়ে হত্যা করে সে। বেঁচে থাকা জুয়েলকেও মারার জন্য গলায় কোপ দেয় সে, তবে ভাগ্যক্রম বেঁচে যায় জুয়েল।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যখন অন্যান্য নোঙর করা জাহাজগুলো তাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়, আকাশ তখন জাহাজটিকে চালিয়ে যাত্রা শুরু করে। এক ঘণ্টা চালানোর পর হাইনচরে গিয়ে জাহাজটি আটকা পড়ে। সেখান থেকে একটি ট্রলারে করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ইরফান।

পালিয়ে যাওয়ার সময় বাকিদের ফোন নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। খুন করে ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত কারোর কাছে স্বীকার করেননি বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেফতারের পর আসামির জবানবন্দি ও র‍্যাবের বর্ণনা থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

খুনের কাজে তার ব্যবহৃত যে চাইনিজ কুড়ালটি ছিল সেটিও জাহাজে মাস্টারের নিরাপত্তার জন্য রাখা ছিল।

ইরফান জানায়, বেতন না দেয়ায় ক্ষোভ থেকে জাহাজের মাস্টারকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে সে। আর বাকিরা প্রতিবাদ না করায় তাদের ওপরও ক্ষোভ ছিলো ইরফানের। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনেন। সেসব তিনি নিজের কাছে রেখে দেন। গত ২২ ডিসেম্বর যখন জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের পথে রওনা হয় তখন চাঁদপুরের হাইনচর এলাকায় পৌঁছানোর পর সেখানে জাহাজটি নোঙর করা হয়।

তিনি জানান, সেদিন রাতের খাবারের সাথে ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন আকাশ মণ্ডল। খাবার খেয়ে জাহাজের অন্য সদস্যরা নিজেদের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। সর্বশেষ বেঁচে থাকা জুয়েল রাত ২টার দিকে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। তবে আকাশ তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পায়চারি করতে থাকে থাকে এবং একপর্যায়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সে প্রথমে জাহাজের মাস্টারকে একটি চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তার মূলত জাহাজের মাস্টারের ওপরই ক্ষোভ ছিলো। মাস্টারকে খুনের পর তার মনে হয় বাকিরা বেঁচে থাকলে সে ধরা খেয়ে যাবে এবং তাদের ওপর একটা ক্ষোভও ছিল। পড়ে একে একে বাকি সদস্যদের কুপিয়ে হত্যা করে সে। বেঁচে থাকা জুয়েলকেও মারার জন্য গলায় কোপ দেয় সে, তবে ভাগ্যক্রম বেঁচে যায় জুয়েল।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যখন অন্যান্য নোঙর করা জাহাজগুলো তাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়, আকাশ তখন জাহাজটিকে চালিয়ে যাত্রা শুরু করে। এক ঘণ্টা চালানোর পর হাইনচরে গিয়ে জাহাজটি আটকা পড়ে। সেখান থেকে একটি ট্রলারে করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ইরফান।

পালিয়ে যাওয়ার সময় বাকিদের ফোন নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। খুন করে ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত কারোর কাছে স্বীকার করেননি বলেও জানান তিনি।