ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোদের দেখা নেই, শুকাতে ধান কেটে মাঠেই ফেলে রাখলো কৃষকরা

আজিজুল হক সরকার,ফুলবাড়ী,(দিনাজপুর)
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২৯ নভেম্বর থেকে ১৫ দিন ধরে রোদের দেখা নেই। খড় না শুকায় ধান কেটে জমিতেই ফেলে রাখা হয়েছে।খড়ের দাম দিয়ে কিছুটা পুশিয়ে যায় কৃষকের। বাড়িতে ধান উঠাতে নাপারায় কৃষকের নির্ঘুম রাত কাটছে।কৃষকের আক্ষেপ একেতো জিরা ধানের দাম নেই,উপরন্ত প্রকৃতি অন্তরায় হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডাই জনজীবন বিপর্যস্ত।

উত্তরাঞ্চলসহ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পক্ষকাল ধরে রোদের দেখা নেই। প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় ভরা আমন মৌসুমে মাঠকে মাঠ ধান কেটে কৃষক ফেলে রেখেছে প্রায় ১৫ দিন ধরে। খড় না শুকায় বাড়িতে তুলতে পারছেন না কৃষক। কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল ঘরে তুলতে না পারায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ফুলবাড়ী উপজেলার হাজারো কৃষকের। কেউ কেউ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন ধান চুরির ভয়ে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস স‚ত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে ২৯ নভেম্বর থেকে দিনাজপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ২৯ -৩০ নভেম্বরের তাপমাত্রা ছিল ১৩.৮ ডিগ্রি,৩১ নভেম্বর ১২.৭ ডিগ্রি, ১ ও ২ ডিসেম্বর ১২.০২ ডিগ্রি, ৩ডিসেম্বর ১৩.০ ডিগ্রি, ৩ ডিসেম্বর ১২.৭ ডিগ্রি, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর ১৪.০ ডিগ্রি,৬ ডিসেম্বর ১১.৮ ডিগ্রি, ৭ডিসেম্বর ১০.৩ ডিগ্রি, ৮ থেকে ১২ ডিসেম্বর ১৩.৫ ডিগ্রির কিছু কমবেশি, ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় ১২.২ ডিগ্রি ,এবং পরবর্তীতে ১১.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এমন তাপমাত্রায় ধান কেটে মাঠে শুকাতে পারছেন না কৃষক। অন্যান্যবার এমন সময় এভাবে লাগাতার রোদ্রহীন অবস্থা কমই ছিল। এবার সুগন্ধি জিরা ধান আবাদ বেশি হওয়ায় মাঠের অবস্থা উপজেলাজুড়েই এমনটা দেখা যাচ্ছে।

উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের আলম মাস্টারের ৫ একর জমির ধান কেটে জমিতেই শুকানোর জন্য ফেলে রেখেছেন ৯ দিন ধরে। খড় না শুকার কারণে বাড়িতে তুলতে পারছেন না। মানুষ রেখেছেন রাত্রেবেলা পাহারা দিতে চুরি না হওয়ার জন্য।

দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের মোকসেদ আলী ছেলে রিপন সরকার এবং হাবিবুর রহমানের বন্দক নেয়া ৬ একর জমিতে সুগন্ধি জিরা ধান লাগিয়েছেন। একে তো এবার জিরা ধানের দাম নেই। উপরন্ত মাঠ থেকে ধান বাড়িতে আনতে পারছেন না, ধানের গাছ না শুকানোর কারণে। রাত্রে পাহারা দিতে হচ্ছে। আজ শুক্রবার রোদ উঠেছে অনেকদিন পর। দেখা যাক শুকালে হয়তো বাড়িতে আনা হবে।

আলাদিপুর ইউনিয়নের  বাসুদেবপুর  গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আজাদ হোসেন, ইমরান হোসেন তারা বলেন, স্বর্ণা ফাইভ ধান আগে কেটেছি। তখন আবহাওয়া ভালো ছিল। সুগন্ধিজিরা ধান পরে ওঠে। এখন ধান কাটার সময় আবহাওয়া খারাপ যাচ্ছে ১৫ দিন ধরে। রোদ নেই, প্রচন্ড শীত কুয়াশা। এমতাবস্থায় ধান কেটে মাঠে শুকানোর জন্য অপেক্ষা করছি। সুগন্ধিজিরা ধানের দাম কম এবার। এখন খড়ের ম‚ল্যও বেশি।তাই খড়ের জন্যও অনেকে অপেক্ষা করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবার উপজেলায় সুগন্ধি জিরা ধান আবাদ বেশি হয়েছে।এই ধান পরে উঠায় আবহাওয়া  কিছুটা খারাপ হয়েছে।আজকে (১৩.১২.২৪) আবহাওয়া ভালো মনে হচ্ছে।এমনটা থাকলে দ্রæতই ধান কৃষক বাড়ি আনতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রোদের দেখা নেই, শুকাতে ধান কেটে মাঠেই ফেলে রাখলো কৃষকরা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

২৯ নভেম্বর থেকে ১৫ দিন ধরে রোদের দেখা নেই। খড় না শুকায় ধান কেটে জমিতেই ফেলে রাখা হয়েছে।খড়ের দাম দিয়ে কিছুটা পুশিয়ে যায় কৃষকের। বাড়িতে ধান উঠাতে নাপারায় কৃষকের নির্ঘুম রাত কাটছে।কৃষকের আক্ষেপ একেতো জিরা ধানের দাম নেই,উপরন্ত প্রকৃতি অন্তরায় হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডাই জনজীবন বিপর্যস্ত।

উত্তরাঞ্চলসহ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পক্ষকাল ধরে রোদের দেখা নেই। প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় ভরা আমন মৌসুমে মাঠকে মাঠ ধান কেটে কৃষক ফেলে রেখেছে প্রায় ১৫ দিন ধরে। খড় না শুকায় বাড়িতে তুলতে পারছেন না কৃষক। কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল ঘরে তুলতে না পারায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ফুলবাড়ী উপজেলার হাজারো কৃষকের। কেউ কেউ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন ধান চুরির ভয়ে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস স‚ত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে ২৯ নভেম্বর থেকে দিনাজপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। ২৯ -৩০ নভেম্বরের তাপমাত্রা ছিল ১৩.৮ ডিগ্রি,৩১ নভেম্বর ১২.৭ ডিগ্রি, ১ ও ২ ডিসেম্বর ১২.০২ ডিগ্রি, ৩ডিসেম্বর ১৩.০ ডিগ্রি, ৩ ডিসেম্বর ১২.৭ ডিগ্রি, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর ১৪.০ ডিগ্রি,৬ ডিসেম্বর ১১.৮ ডিগ্রি, ৭ডিসেম্বর ১০.৩ ডিগ্রি, ৮ থেকে ১২ ডিসেম্বর ১৩.৫ ডিগ্রির কিছু কমবেশি, ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় ১২.২ ডিগ্রি ,এবং পরবর্তীতে ১১.২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এমন তাপমাত্রায় ধান কেটে মাঠে শুকাতে পারছেন না কৃষক। অন্যান্যবার এমন সময় এভাবে লাগাতার রোদ্রহীন অবস্থা কমই ছিল। এবার সুগন্ধি জিরা ধান আবাদ বেশি হওয়ায় মাঠের অবস্থা উপজেলাজুড়েই এমনটা দেখা যাচ্ছে।

উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের আলম মাস্টারের ৫ একর জমির ধান কেটে জমিতেই শুকানোর জন্য ফেলে রেখেছেন ৯ দিন ধরে। খড় না শুকার কারণে বাড়িতে তুলতে পারছেন না। মানুষ রেখেছেন রাত্রেবেলা পাহারা দিতে চুরি না হওয়ার জন্য।

দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের মোকসেদ আলী ছেলে রিপন সরকার এবং হাবিবুর রহমানের বন্দক নেয়া ৬ একর জমিতে সুগন্ধি জিরা ধান লাগিয়েছেন। একে তো এবার জিরা ধানের দাম নেই। উপরন্ত মাঠ থেকে ধান বাড়িতে আনতে পারছেন না, ধানের গাছ না শুকানোর কারণে। রাত্রে পাহারা দিতে হচ্ছে। আজ শুক্রবার রোদ উঠেছে অনেকদিন পর। দেখা যাক শুকালে হয়তো বাড়িতে আনা হবে।

আলাদিপুর ইউনিয়নের  বাসুদেবপুর  গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আজাদ হোসেন, ইমরান হোসেন তারা বলেন, স্বর্ণা ফাইভ ধান আগে কেটেছি। তখন আবহাওয়া ভালো ছিল। সুগন্ধিজিরা ধান পরে ওঠে। এখন ধান কাটার সময় আবহাওয়া খারাপ যাচ্ছে ১৫ দিন ধরে। রোদ নেই, প্রচন্ড শীত কুয়াশা। এমতাবস্থায় ধান কেটে মাঠে শুকানোর জন্য অপেক্ষা করছি। সুগন্ধিজিরা ধানের দাম কম এবার। এখন খড়ের ম‚ল্যও বেশি।তাই খড়ের জন্যও অনেকে অপেক্ষা করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবার উপজেলায় সুগন্ধি জিরা ধান আবাদ বেশি হয়েছে।এই ধান পরে উঠায় আবহাওয়া  কিছুটা খারাপ হয়েছে।আজকে (১৩.১২.২৪) আবহাওয়া ভালো মনে হচ্ছে।এমনটা থাকলে দ্রæতই ধান কৃষক বাড়ি আনতে পারবেন।