ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছররা গুলি নিষিদ্ধ চান ডিসিরা!

বিশেষ প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৪৭:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ৬৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মারণাস্ত্র নিষিদ্ধের পাশপাশি ছররা গুলির ব্যবহারও চান না। এই প্রস্তাব উঠতে যাচ্ছে আগামী ডিসি সম্মেলনে। সম্মেলনকে সামনে রেখে ডিসিদের দেয়া প্রস্তাব এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আর সেই প্রস্তাবের পক্ষে মতামত দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথমে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই প্রথম ডিসি সম্মেলন। মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে পরিচিত ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় এবং সরকারের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিতে প্রতি বছর এই সম্মেলন হয়। করোনার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২২ সালের ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি এ সম্মেলন হয়। ২০২৩ সালে ডিসি সম্মেলন হয় ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি। সর্বশেষ সম্মেলন এ বছর ৩ থেকে ৬ মার্চে হয়।

সম্মেলনের কার্য-অধিবেশনগুলোতে সাধারণত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাবও তুলে ধরেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এবারের সম্মেলনে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের পরিবর্তে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টারা উপস্থিত থাকবেন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মুক্ত আলোচনাসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সাথেও মতবিনিময় করেন ডিসিরা। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন, রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সাথেসৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এবারের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টা সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। তার সাথে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত এবং স্পিকার না থাকায় এ সেশনটি এবার থাকছে না।

জানা গেছে, এবারের ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে কার্যপত্র তৈরি করতে যথারীতি বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রস্তাব আহবান করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সে অনুযায়ী নিজ বিভাগ ও দপ্তর সম্পর্কিত নানা ধরনের প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, এসব প্রস্তাব স্বল্প মেয়াদে (এক বছর), মধ্য মেয়াদে (তিন বছর) ও দীর্ঘ মেয়াদে (পাঁচ বছর) বাস্তবায়নযোগ্য কি না, সে ব্যাপারে মতামত চেয়ে গত ২৫ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখায় পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় এ চিঠিতে।

সূত্রমতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্যরত অবস্থায় বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহার নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব দেন কয়েকজন ডিসি। কয়েকজন ডিসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে (সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের বাসভবন) কেপিআই নিরাপত্তায় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ছররা গুলি নিষিদ্ধ চান ডিসিরা!

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৪৭:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মারণাস্ত্র নিষিদ্ধের পাশপাশি ছররা গুলির ব্যবহারও চান না। এই প্রস্তাব উঠতে যাচ্ছে আগামী ডিসি সম্মেলনে। সম্মেলনকে সামনে রেখে ডিসিদের দেয়া প্রস্তাব এরমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আর সেই প্রস্তাবের পক্ষে মতামত দেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, আগামী মাসের প্রথমে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই প্রথম ডিসি সম্মেলন। মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে পরিচিত ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় এবং সরকারের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিতে প্রতি বছর এই সম্মেলন হয়। করোনার কারণে ২০২০ এবং ২০২১ সালে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২২ সালের ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি এ সম্মেলন হয়। ২০২৩ সালে ডিসি সম্মেলন হয় ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি। সর্বশেষ সম্মেলন এ বছর ৩ থেকে ৬ মার্চে হয়।

সম্মেলনের কার্য-অধিবেশনগুলোতে সাধারণত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাবও তুলে ধরেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এবারের সম্মেলনে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের পরিবর্তে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টারা উপস্থিত থাকবেন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে মুক্ত আলোচনাসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সাথেও মতবিনিময় করেন ডিসিরা। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন, রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সাথেসৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এবারের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টা সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। তার সাথে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত এবং স্পিকার না থাকায় এ সেশনটি এবার থাকছে না।

জানা গেছে, এবারের ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে কার্যপত্র তৈরি করতে যথারীতি বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রস্তাব আহবান করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সে অনুযায়ী নিজ বিভাগ ও দপ্তর সম্পর্কিত নানা ধরনের প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, এসব প্রস্তাব স্বল্প মেয়াদে (এক বছর), মধ্য মেয়াদে (তিন বছর) ও দীর্ঘ মেয়াদে (পাঁচ বছর) বাস্তবায়নযোগ্য কি না, সে ব্যাপারে মতামত চেয়ে গত ২৫ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখায় পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় এ চিঠিতে।

সূত্রমতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্যরত অবস্থায় বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহার নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব দেন কয়েকজন ডিসি। কয়েকজন ডিসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে (সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের বাসভবন) কেপিআই নিরাপত্তায় অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব দেন।