স্বামী আর ফিরবে না, ভাতও তবে জুটবে না!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৬৬ বার পড়া হয়েছে
স্বামী কমর উদ্দিন বাঙ্গিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্ত্রী তহমিনা আক্তার। আনন্দের সংসারে নেমে এসেছে বিষাদ। য্ কখনোই ভাবেননি। হঠাৎ অন্ধকার নেমে আাসায় এখন তিন সন্তান এবং অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দু:শ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। ভাত খাওয়ানোর মানুষটি না থাকায় করুণ অবস্থায় দিন পার করছে পরিবারটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত হন কমর উদ্দিন খানবাঙ্গি (৪০)। পেশায় তিনি একজন রিকশাচালক ছিলেন। বাঙ্গি বগুড়া সদর উপজেলার চকআকাশ তারা গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিন খানের ছেলে। সাত ভাইবোনের মধ্যে কমরউদ্দিন সবার ছোট।
পরিবারে খাদ্যের যোগান দেয়া মানুষটি না থাকায় ভয়াবহ অবস্থায় দিন পার করছেন তাহমিনা। সহায় সম্বলহীন পরিবারের সদস্যদের তিনবেলা খাবার জোটাতে তিনি রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।
শহিদ কমর উদ্দিনের ভাতিজা জহুরুল ইসলাম জীবন বলেন, গত ৪ আগস্ট বগুড়া শহরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিতে বাড়ি থেকে সকালে বের হয়েছিলেন চাচা কমর উদ্দিন খান বাঙ্গি। বিকেলে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হয়। তারপর থেকেই ফোন বন্ধ। খোঁজ করার একপর্যায়ে সন্ধ্যায় খবর পাওয়া যায়, তার মরদেহ পড়ে আছে বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে।
এরপর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে শহীদ হয়েছেন তিনি।
নিহত কমর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সংসারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবার। তিন সন্তান নিয়ে নির্বাক নিস্তব্ধ স্ত্রী তহমিনা আক্তার। গর্ভে রয়েছে ৭ মাসের সন্তান। সহায় সম্বল বলে কিছুই নেই। আছে শুধু থাকার একটি মাত্র ঘর।
বড় মেয়েটি কাজলীর বয়স এখন ১৭ বছর। সাত বছরের ছেলে তৌহিদ স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট ছেলে আবদুল্লাহর বয়স দুই বছর। এখনও সে মায়ের কোলে। এদিকে গর্ভে রয়েছে সাত মাসের সন্তান। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে একেবারেই পথে বসেছে হতদরিদ্র পরিবারটি।
বিএনপির পক্ষ থেকে সামান্য সাহায্য এলেও, কীভাবে দিন কাটছে, কীভাবে সংসার চলছে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি।
কমর উদ্দিনের মা জমেলা বেগম জানান, ছেলে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো, আর ফেরেনি। তার বুকে পিঠেসহ গোটা শরীরেই বুলেটবিদ্ধ ছিল। ছেলে আর ফিরবে না। ভাতও খাওয়াবে না। এখন কীভাবে জীবন চলবে সেই চিন্তায় অশ্রুসিক্ত হচ্ছেন বার বার।