ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোখ হারানো সাইদুলকে ছেড়ে চলে গেলেন স্ত্রীও

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ৮৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। এদিকে মানবেতর জীবনযাপন করা সাইদুলকে দুদিন আগে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার ও চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের। অভাব-অনটন পিছু ছাড়ছে না তার।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সাইদুল জানান, তিনি অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এই খারাপ মুহূর্তে দুদিন আগে স্ত্রী পান্না আক্তার তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করার পরও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি।

অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সরকারি সহায়তার দাবি করে তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে শামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থানের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঢাকা মেডিকেলে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।

তিনি আরো জানান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্লিন্টারের আঘাতে তার বাঁ চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

সাইদুল ইসলাম জানান, এখনো তিনি চোখে দুটি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার বহন করে চলছেন। মা-বাবা সঙ্গে বর্তমানে বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, সাইদুল আবেদন করলে সমাজসেবার মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

চোখ হারানো সাইদুলকে ছেড়ে চলে গেলেন স্ত্রীও

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। এদিকে মানবেতর জীবনযাপন করা সাইদুলকে দুদিন আগে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার ও চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের। অভাব-অনটন পিছু ছাড়ছে না তার।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সাইদুল জানান, তিনি অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এই খারাপ মুহূর্তে দুদিন আগে স্ত্রী পান্না আক্তার তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করার পরও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি।

অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সরকারি সহায়তার দাবি করে তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে শামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থানের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঢাকা মেডিকেলে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।

তিনি আরো জানান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্লিন্টারের আঘাতে তার বাঁ চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

সাইদুল ইসলাম জানান, এখনো তিনি চোখে দুটি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার বহন করে চলছেন। মা-বাবা সঙ্গে বর্তমানে বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, সাইদুল আবেদন করলে সমাজসেবার মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।