ঢাকা ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিএনজি বন্ধ করে  চালকদের মানববন্ধন, দুর্ভোগে যাত্রীরা

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার ও হেলফাদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে রাজশাহীর তানোরে তিনদিন ধরে সিএনজি বন্ধ রেখে রাস্তায় চালকদের মানববন্ধন কর্মসূচি চলছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।

২৩ নভেম্বর (শনিবার) থেকে ২৫ নভেম্বর সোমবার বিকেল পর্যন্ত তানোর থানা মোড়ে সিএনজি চালকদের এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।

পরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর ইউএনওর মাধ্যমে তানোর থানার সব সিএসজি চালক ও মালিক সমিতির পক্ষে স্বারকলিপি ও অভিযোগপত্র  প্রদান করা হয়। এর আগে শনিবার ও রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমনুরা থেকে ছেড়ে আসা সব বাস থেকে থানা মোড়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়। কোন বাস মুন্ডুমালা ও আমনুরাতে যেতে দেয়া হয়নি। আবার রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বাস থেকে থানা মোড়ে যাত্রীদের নামিয়ে নেয়া হয়। তানোর থেকেও রাজশাহীতে কোন যাত্রী বাসে যেতে দেয়া হয়নি। কিন্তু সোমবার সারাদিন স্বাভাবিক নিয়মে বাস চলাচল করলেও সিএনজি বন্ধ রেখে চালকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

অভিযোগ ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ২০০৫ সাল হতে পকেট রাস্তা দিয়ে তানোর থেকে পবা থানার বায়া বাজার হয়ে রাজশাহী নগরীর রেলগেট পর্যন্ত সিএনজি গাড়ি চালিয়ে আসছে চালকরা। এহেন অবস্থায় পবা থানার বাগধানী ব্রীজ নাক স্থানে বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার ও হেলপাররা চলন্ত সিএনজি হতে যাত্রী জোরপূর্বক নামিয়ে বাসে তুলে নেয়। পরে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরী ও আয়েন এমপির হস্তক্ষেপে অবশ্য এটা সুরহা হয়।

বর্তমানে অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারের সময়ে পূর্বের নিয়ম ভঙ্গ করে রাজশাহী জেলার পরিবহণ মালিক সমিতি কর্তৃক সিএনজিতে যাত্রী যেতে বাধাগ্রস্থ করে বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার, হেলপার ও বাস মাস্টাররা। তাদের বাধা অতিক্রম করে অনেকে গোপনে আবার কেউ প্রকাশ্যে বাগধানী হয়ে যাতায়াত করে সিএনজি চালকরা। এহেন অবস্থায় প্রায় দিন তাদের উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডা, হুমকি-ধামকি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে।

এ অবস্থায় গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর এরির্পোট লেখা পর্যন্ত পবা থানার শেষ প্রান্তে অর্থাৎ বাগধানী কড়াইতলা মোড়ে পরিবহণ মালিক সমিতি কর্তৃক লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা চেক পোষ্ট বসিয়ে সিএনজি গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং সিএনজি থেকে জোরপূর্বক যাত্রী নামিয়ে বাসে তুলে নেয়া হয়।

এনিয়ে মোহাম্মদ ফারহান নামের এক যাত্রী বলেন, রোববার দেড় ঘণ্টা আগে বের হয়েও বাস পাচ্ছি না। এদিকে তিন দিন ধরে সড়কে সিএনজিও দেখা নেই। পরে শুনলাম, পরিবহণ মালিক সমিতি ও সিএনজি মালিক সমিতির মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ও অনেক অফিসগামী যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এবিষয়ে তানোর থানা মোড় সিএনজির মালিক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. সুমন চৌধুরী বলেন, বাসের ড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার, হেলপার ও তাদের মনোনীত বেশ কয়েকজন বখাটেরা বাগধানী নামক স্থানে সিএনজি ঘিরে ধরে পথরোধ করে চালককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারমুখি আচরণ করে। তাদের এমন আচরণে জিম্মি অবস্থায় কোন কথা বলা হলে সিএসজি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেয়। তাদের এহেন হুমকির ফলে আমরা তানোর টু রাজশাহী রাস্তার প্রায় ১৫০ জন সিএনজি চালক গাড়ি বন্ধ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা ছোট থেকেই কৃষি কাজ তেমন জানি না। এজন্য বাধ্য হয়ে রাস্তায় সিএনজি গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। এখন সিএনজি বন্ধ রেখে বউ বাচ্চা নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। এঅবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।
উভয়পক্ষের মধ্যে যেকোন ধরণের রক্তক্ষয়ী অনাকাঙ্খিত সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠ সমাধান চাই বলে জানান তিনি। তবে, এবিষয়ে রাজশাহী পরিবহণ মালিক সমিতির কারও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধ্যম দিয়ে সিএনজি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানান ইউএনও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সিএনজি বন্ধ করে  চালকদের মানববন্ধন, দুর্ভোগে যাত্রীরা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার ও হেলফাদের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে রাজশাহীর তানোরে তিনদিন ধরে সিএনজি বন্ধ রেখে রাস্তায় চালকদের মানববন্ধন কর্মসূচি চলছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।

২৩ নভেম্বর (শনিবার) থেকে ২৫ নভেম্বর সোমবার বিকেল পর্যন্ত তানোর থানা মোড়ে সিএনজি চালকদের এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।

পরে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর ইউএনওর মাধ্যমে তানোর থানার সব সিএসজি চালক ও মালিক সমিতির পক্ষে স্বারকলিপি ও অভিযোগপত্র  প্রদান করা হয়। এর আগে শনিবার ও রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমনুরা থেকে ছেড়ে আসা সব বাস থেকে থানা মোড়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়। কোন বাস মুন্ডুমালা ও আমনুরাতে যেতে দেয়া হয়নি। আবার রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বাস থেকে থানা মোড়ে যাত্রীদের নামিয়ে নেয়া হয়। তানোর থেকেও রাজশাহীতে কোন যাত্রী বাসে যেতে দেয়া হয়নি। কিন্তু সোমবার সারাদিন স্বাভাবিক নিয়মে বাস চলাচল করলেও সিএনজি বন্ধ রেখে চালকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

অভিযোগ ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ২০০৫ সাল হতে পকেট রাস্তা দিয়ে তানোর থেকে পবা থানার বায়া বাজার হয়ে রাজশাহী নগরীর রেলগেট পর্যন্ত সিএনজি গাড়ি চালিয়ে আসছে চালকরা। এহেন অবস্থায় পবা থানার বাগধানী ব্রীজ নাক স্থানে বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার ও হেলপাররা চলন্ত সিএনজি হতে যাত্রী জোরপূর্বক নামিয়ে বাসে তুলে নেয়। পরে সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরী ও আয়েন এমপির হস্তক্ষেপে অবশ্য এটা সুরহা হয়।

বর্তমানে অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারের সময়ে পূর্বের নিয়ম ভঙ্গ করে রাজশাহী জেলার পরিবহণ মালিক সমিতি কর্তৃক সিএনজিতে যাত্রী যেতে বাধাগ্রস্থ করে বাসড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার, হেলপার ও বাস মাস্টাররা। তাদের বাধা অতিক্রম করে অনেকে গোপনে আবার কেউ প্রকাশ্যে বাগধানী হয়ে যাতায়াত করে সিএনজি চালকরা। এহেন অবস্থায় প্রায় দিন তাদের উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডা, হুমকি-ধামকি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে।

এ অবস্থায় গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর এরির্পোট লেখা পর্যন্ত পবা থানার শেষ প্রান্তে অর্থাৎ বাগধানী কড়াইতলা মোড়ে পরিবহণ মালিক সমিতি কর্তৃক লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা চেক পোষ্ট বসিয়ে সিএনজি গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং সিএনজি থেকে জোরপূর্বক যাত্রী নামিয়ে বাসে তুলে নেয়া হয়।

এনিয়ে মোহাম্মদ ফারহান নামের এক যাত্রী বলেন, রোববার দেড় ঘণ্টা আগে বের হয়েও বাস পাচ্ছি না। এদিকে তিন দিন ধরে সড়কে সিএনজিও দেখা নেই। পরে শুনলাম, পরিবহণ মালিক সমিতি ও সিএনজি মালিক সমিতির মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ও অনেক অফিসগামী যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এবিষয়ে তানোর থানা মোড় সিএনজির মালিক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. সুমন চৌধুরী বলেন, বাসের ড্রাইভার, কন্ট্রেক্টার, হেলপার ও তাদের মনোনীত বেশ কয়েকজন বখাটেরা বাগধানী নামক স্থানে সিএনজি ঘিরে ধরে পথরোধ করে চালককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারমুখি আচরণ করে। তাদের এমন আচরণে জিম্মি অবস্থায় কোন কথা বলা হলে সিএসজি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দেয়। তাদের এহেন হুমকির ফলে আমরা তানোর টু রাজশাহী রাস্তার প্রায় ১৫০ জন সিএনজি চালক গাড়ি বন্ধ করে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা ছোট থেকেই কৃষি কাজ তেমন জানি না। এজন্য বাধ্য হয়ে রাস্তায় সিএনজি গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। এখন সিএনজি বন্ধ রেখে বউ বাচ্চা নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। এঅবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।
উভয়পক্ষের মধ্যে যেকোন ধরণের রক্তক্ষয়ী অনাকাঙ্খিত সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠ সমাধান চাই বলে জানান তিনি। তবে, এবিষয়ে রাজশাহী পরিবহণ মালিক সমিতির কারও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধ্যম দিয়ে সিএনজি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানান ইউএনও।