ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

থামছেই না ডেঙ্গুর দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১০ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। চলতি বছর এই রোগটিতে মারা গেছে ৪৪৮ জন।

ঢাকা ছাড়াও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাইরের জেলায়ও। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে এখনই ডেঙ্গু রোগীর উপচে পড়া ভিড়। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে দেখা যায় গত কয়েক মাসের তুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।

এদিকে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও এক হাজার ২১৪ জন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৮৫ হাজার ৭১২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৪৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ১২১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৯ জন, খুলনা বিভাগে ১০৭ জন রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৪০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন এবং সিলেট বিভাগে এক জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।

এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৯৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮১ হাজার ৪৫৬ জন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে
আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

থামছেই না ডেঙ্গুর দাপট

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:২৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। চলতি বছর এই রোগটিতে মারা গেছে ৪৪৮ জন।

ঢাকা ছাড়াও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বাইরের জেলায়ও। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে এখনই ডেঙ্গু রোগীর উপচে পড়া ভিড়। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে দেখা যায় গত কয়েক মাসের তুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।

এদিকে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও এক হাজার ২১৪ জন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৮৫ হাজার ৭১২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৪৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ১২১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৯ জন, খুলনা বিভাগে ১০৭ জন রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৪০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন এবং সিলেট বিভাগে এক জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।

এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৯৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮১ হাজার ৪৫৬ জন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো। ওই বছর মশাবাহিত রোগটিতে
আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা যান

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।