ঢাকা ০৬:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধ ভাতা, অসুস্থ ও বয়স্ক ভাতাভোগী বিপাকে

সুপন রায়
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বেশ কিছু ভাতা চালু করে সরকার। ৬০ লাখ বয়স্ক ভাতা, ২৮ লাখ বিধবা ভাতা, ৩২ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, ১৩ লাখ হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, ৬ হাজার বেদে জনগোষ্ঠীর ভাতা এবং ৬০ হাজার অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এই বিশেষ ভাতা পায়। চলতি অর্থবছরে ভাতাভোগীদের জন্য ৯ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

এসব ভাতার টাকা তিন মাস পর পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু গত জুলাইয়ের পর থেকে উপকারভোগীরা ভাতা পাচ্ছেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিয়েও কোনো সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।

জানা গেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় নতুন তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের ভাতা দেওয়া হয়নি।

আরও জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা ভাতাভোগীদের তালিকা নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে ভাতা বন্ধ হয়েছে। কারণ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সচ্ছল ব্যক্তি ভাতার তালিকায় নিজের নাম তুলে দীর্ঘদিন ধরে ভাতা উত্তোলন করছিল। উপকারভোগী নির্বাচনে শুরু থেকে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ইউনিসেফের এক জরিপে।

জরিপের তথ্য অনুয়ায়ী, উপকারভোগীর তালিকার ৪৩ শতাংশ ত্রুটিপূর্ণ। অর্থাৎ সোয়া কোটি ভাতাভোগীর মধ্যে ৫০ লাখ সচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ভাতাভোগীর তালিকা পর্যালোচনা করে প্রকৃত হতদরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকা পর্যালোচনা শুরু হলেও এখনো শেষ না হওয়ায় ভাতা চালু করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। তাই নতুন করে ভাতা দেয়া শুরু করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি অনুপস্থিত রয়েছে। অনেকের নামে মামলা। আবার অনেকে পলাতক। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগ হলেও দায়িত্ব বুঝে নিতে সময় লাগছে। এদের সহযোগিতা ছাড়া তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব নয়। ফলে উপকারভোগীর নতুন তালিকা করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

এদিকে, ভাতা না পাওয়ায় অনেক হতদরিদ্র পরিবার বিপাকে পড়েছে। ভাতাভোগীরা জানায়, সময়মতো ভাতা না পাওয়ায় সংকট আরও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেক অসুস্থ ও বয়স্ক ভাতাভোগী প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। কেউ ভাতার ভরসায় পণ্য বাকিতে কেনেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভাতা বন্ধ করা হয়নি। ভাতাভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকৃত দরিদ্রদের তালিকা চূড়ান্ত করে চলতি মাসেই ভাতা দেয়া শুরু হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বন্ধ ভাতা, অসুস্থ ও বয়স্ক ভাতাভোগী বিপাকে

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বেশ কিছু ভাতা চালু করে সরকার। ৬০ লাখ বয়স্ক ভাতা, ২৮ লাখ বিধবা ভাতা, ৩২ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, ১৩ লাখ হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, ৬ হাজার বেদে জনগোষ্ঠীর ভাতা এবং ৬০ হাজার অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এই বিশেষ ভাতা পায়। চলতি অর্থবছরে ভাতাভোগীদের জন্য ৯ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

এসব ভাতার টাকা তিন মাস পর পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু গত জুলাইয়ের পর থেকে উপকারভোগীরা ভাতা পাচ্ছেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিয়েও কোনো সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।

জানা গেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় নতুন তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের ভাতা দেওয়া হয়নি।

আরও জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা ভাতাভোগীদের তালিকা নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে ভাতা বন্ধ হয়েছে। কারণ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সচ্ছল ব্যক্তি ভাতার তালিকায় নিজের নাম তুলে দীর্ঘদিন ধরে ভাতা উত্তোলন করছিল। উপকারভোগী নির্বাচনে শুরু থেকে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ইউনিসেফের এক জরিপে।

জরিপের তথ্য অনুয়ায়ী, উপকারভোগীর তালিকার ৪৩ শতাংশ ত্রুটিপূর্ণ। অর্থাৎ সোয়া কোটি ভাতাভোগীর মধ্যে ৫০ লাখ সচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ভাতাভোগীর তালিকা পর্যালোচনা করে প্রকৃত হতদরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকা পর্যালোচনা শুরু হলেও এখনো শেষ না হওয়ায় ভাতা চালু করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। তাই নতুন করে ভাতা দেয়া শুরু করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি অনুপস্থিত রয়েছে। অনেকের নামে মামলা। আবার অনেকে পলাতক। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগ হলেও দায়িত্ব বুঝে নিতে সময় লাগছে। এদের সহযোগিতা ছাড়া তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব নয়। ফলে উপকারভোগীর নতুন তালিকা করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

এদিকে, ভাতা না পাওয়ায় অনেক হতদরিদ্র পরিবার বিপাকে পড়েছে। ভাতাভোগীরা জানায়, সময়মতো ভাতা না পাওয়ায় সংকট আরও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেক অসুস্থ ও বয়স্ক ভাতাভোগী প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না। কেউ ভাতার ভরসায় পণ্য বাকিতে কেনেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভাতা বন্ধ করা হয়নি। ভাতাভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকৃত দরিদ্রদের তালিকা চূড়ান্ত করে চলতি মাসেই ভাতা দেয়া শুরু হবে।