ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাবেক মন্ত্রীদের কারাগারে রাখার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:১৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ।

আগামী ১ মাসের মধ্যে এদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এবং এবিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্র‍্যাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এসময় আরও ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, এস এম মঈনুল করিম, মো. নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, শাইখ মাহদী, তারেক আবদুল্লাহ, তানভীর হাসান জোহা। আসামী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও মো: আবুল হাসান।

ট্রাইব্যুনাল যাদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তারা হলো- আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ড. দীপু মনি, জুনায়েদ আহমেদ পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক এলাহি। সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তবে সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে আজ ট্রাইবুনালে হাজির করা হয়নি।

সোমবার সকালে হাইকোর্ট মাজার সংলগ্ন গেট দিয়ে এই অভিযুক্তদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। প্রথমে ট্রাইবুনালের হাজত খানায় রাখার পর এদের সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে তোলা হবে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায়। এরপর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালে হাসিনা সরকারের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরেন। একই সাথে কাঠগড়ায় থাকা অভিযুক্তদের হাসিনার সহযোগী হিশেবে উল্লেখ করেন। একপর্যায়ে প্রসিকিউসনের আবেদনে ট্র‍্যাইব্যুনাল অভিযুক্তদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।

গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। যেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্যরা হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিকে, গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। প্রসিকিউশন টিমের অপর প্রসিকিউটররা হলেন অ্যাডভোকেট গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, এস এম মঈনুল করিম, মো. নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, শাইখ মাহদী, তারেক আবদুল্লাহ, তানভীর হাসান জোহা (ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ)।

অন্যদিকে, ১০ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়। যেখানে তদন্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর পদে মো. মাজহারুল হককে (অ্যাডিশনাল ডিআইজি, অবসরপ্রাপ্ত) এবং কো–কোঅর্ডিনেটর পদে মুহাম্মদ শহিদুল্যাহ চৌধুরীকে (পুলিশ সুপার, অবসরপ্রাপ্ত) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সংস্থার অপর কর্মকর্তারা হলেন: মো. আলমগীর (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট ঢাকা), মোহা. মনিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স), মো. জানে আলম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ঢাকা), সৈয়দ আবদুর রউফ (সহকারী পুলিশ সুপার, ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল, ঢাকা), মো. ইউনুছ (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, সিআইডি), মো. মাসুদ পারভেজ (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, চারঘাট মডেল থানা, রাজশাহী), মুহাম্মদ আলমগীর সরকার (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, আরআরএফ–ঢাকা) ও মো. মশিউর রহমান (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, সিআইডি, ঢাকা মেট্রো–উত্তর)।

গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের কয়েকশো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গনহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনাল আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবকে ১৮ হাজিরের নির্দেশ দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সাবেক মন্ত্রীদের কারাগারে রাখার নির্দেশ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৫:১৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ।

আগামী ১ মাসের মধ্যে এদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে এবং এবিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্র‍্যাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আদালতে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এসময় আরও ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, এস এম মঈনুল করিম, মো. নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, শাইখ মাহদী, তারেক আবদুল্লাহ, তানভীর হাসান জোহা। আসামী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও মো: আবুল হাসান।

ট্রাইব্যুনাল যাদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তারা হলো- আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, ড. দীপু মনি, জুনায়েদ আহমেদ পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক এলাহি। সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তবে সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে আজ ট্রাইবুনালে হাজির করা হয়নি।

সোমবার সকালে হাইকোর্ট মাজার সংলগ্ন গেট দিয়ে এই অভিযুক্তদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। প্রথমে ট্রাইবুনালের হাজত খানায় রাখার পর এদের সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটে তোলা হবে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায়। এরপর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালে হাসিনা সরকারের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরেন। একই সাথে কাঠগড়ায় থাকা অভিযুক্তদের হাসিনার সহযোগী হিশেবে উল্লেখ করেন। একপর্যায়ে প্রসিকিউসনের আবেদনে ট্র‍্যাইব্যুনাল অভিযুক্তদের কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন।

গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। যেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর ট্রাইব্যুনালের সদস্যরা হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিকে, গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। প্রসিকিউশন টিমের অপর প্রসিকিউটররা হলেন অ্যাডভোকেট গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, এস এম মঈনুল করিম, মো. নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, শাইখ মাহদী, তারেক আবদুল্লাহ, তানভীর হাসান জোহা (ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ)।

অন্যদিকে, ১০ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়। যেখানে তদন্ত সংস্থার কোঅর্ডিনেটর পদে মো. মাজহারুল হককে (অ্যাডিশনাল ডিআইজি, অবসরপ্রাপ্ত) এবং কো–কোঅর্ডিনেটর পদে মুহাম্মদ শহিদুল্যাহ চৌধুরীকে (পুলিশ সুপার, অবসরপ্রাপ্ত) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সংস্থার অপর কর্মকর্তারা হলেন: মো. আলমগীর (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট ঢাকা), মোহা. মনিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স), মো. জানে আলম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ঢাকা), সৈয়দ আবদুর রউফ (সহকারী পুলিশ সুপার, ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুল, ঢাকা), মো. ইউনুছ (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, সিআইডি), মো. মাসুদ পারভেজ (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, চারঘাট মডেল থানা, রাজশাহী), মুহাম্মদ আলমগীর সরকার (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, আরআরএফ–ঢাকা) ও মো. মশিউর রহমান (পুলিশ পরিদর্শক–নিরস্ত্র, সিআইডি, ঢাকা মেট্রো–উত্তর)।

গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের কয়েকশো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গনহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনাল আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবকে ১৮ হাজিরের নির্দেশ দেন।