জয়পুরহাটে মাঠে মাঠে আমন ধান কাটার ধুম
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:২৩:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ৮ বার পড়া হয়েছে
জয়পুরহাটে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার ধুম । এখন মাঠে মাঠে ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে বৃষ্টির কারণে এবার অন্য বছরের চেয়ে কিছু জাতের ধানের ফলন কম হয়েছে। সেই সঙ্গে ধান বিক্রি করে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের। বাজারে পুরোদমে ধান আমদানি হলে ধানের দাম আরও কমার আশঙ্কা তাদের। তাই উৎপাদন খরচ কমাতে সরকারের পদক্ষেপসহ ধানের ন্যায্যমুল্য চান তারা। এদিকে ধান চাষে কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, প্রতিবছর একটু লাভের আশায় জয়পুরহাটে ব্যাপক পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেন কৃষকরা। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন মাঠে চলছে রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। কৃষকরা স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। এবার কিছু জাতের ধানের ফলন ভালো হলেও বৃষ্টির কারণে ধানী গোল্ড ও সতেরো রনজিত জাতের ধানে দেখা দিয়েছে পচন রোগ। এইসব ধানের ফলন যেমন কম কম হচ্ছে, তেমনই হাট-বাজারে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
জেলায় এবার প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান রয়েছে প্রায় ২১ হাজার হেক্টর। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। এবার বিঘাপ্রতি জমিতে কৃষকদের খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর ফলন হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ মণ করে। এতে করে কাঙ্খিত লাভ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। আউশগাড়া গ্রামের কৃষক আবু কালাম বলেন, আমি ৬ বিঘা জমিতে ধানী গোল্ড ধান চাষ করেছি। কিন্তু এবার বৃষ্টির কারণে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ ফলন হচ্ছে। অনেকের আবার ১০ মণ ফলণও হচ্ছে। এখন হিসেব করে দেখা যাচ্ছে প্রতি বিঘাতে ধান বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা।
তেঘর বিশার নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় আগাম জাতের সতেরো, পঁচাত্তর ও ধানী গোল্ড ধানের চাষ হয়েছে। এছাড়া মামুন ধান কিছুদিনের মধ্যে কাটা শুরু হবে। এর মধ্যে আবহাওয়ার কারণে সতেরো ও ধানী গোল্ড ধানের অবস্থা খুবই খারাপ। ধানে পচন রোগ ধরায় ফলন ১৮/২০ মণের জায়গায় ১২/১৪ মণ ফলণ হচ্ছে। শ্যমপুর গ্রামের ঝড়ো মন্ডল বলেন, ফলন খারাপ হওয়ায় ধানী গোল্ড ও সতেরো ধান বিঘাপ্রতি ফলন আসছে সর্বোচ্চ ১৫ মণ পর্যন্ত। আর মামুন ধান ভালো হয়েছে। সেটি এখনও কাটা শুরু হয়নি। ভালো ধানের দাম একটু বেশি থাকলেও যেগুলোতে পচন রোগ হয়েছে সেগুলো ১ হাজার থেকে ১১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভাল ধান ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সামনে ধানের দাম আরও কমলে আমাদের অনেক লোকশান হবে।
পুরানাপৈল বাজারের ধান ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুল ইসলাম বর্তমানে এই এলাকায় সতেরো, পঁচাত্তর ধানী গোল্ড ধান বিক্রি করতে আসছেন কৃষকরা। এসব ধান প্রতিমণ ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ২৬০ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে খারাপ ধানে দাম কিছুটা কম আছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) সাদিয়া সুলতানা বলেন, জয়পুহাটে চলতি মৌসুমে ৬৯ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এ থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন। আগাম জাতের ধান রয়েছে প্রায় ২১ হাজার হেক্টর। ইতোমধ্যে প্রায় ১ ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ধান চাষে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি।