ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনের ভোট রাতে, ফেঁসে যাচ্ছেন ডিসি-এসপি-ইউএনওরা

বিশেষ প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ৭৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম তদন্ত করবে সরকার। এই সময় রাতের ভোট ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) ভূমিকা তদন্ত করা হবে।

একইভাবে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সুপার, থানার ওসিদের দায়িত্ব পালন এবং তাঁদের ভূমিকারও তদন্ত করা হবে। সরকারি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাতের ভোট ও ভোট কারচুপির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে বিগত সরকারের আমলে নির্বাচনকালীন মাঠে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ফেঁসে যেতে পারেন ।

তবে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা। জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর-রহমান বলেন, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর কাজ করছে।

জানা গেছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা মনে করেন, বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দিনের ভোট আগের রাতেই গ্রহণ, ব্যাপক জালিয়াতি এবং ডামি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসাররা সর্বাত্মক সহায়তা করেছে। তাদের সহায়তায় হাসিনা সরকার নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে।

প্রশাসন মনে করছে, হাসিনা সরকারের অনৈতিক কাজে সহায়তা না করলে ফ্যাসিজম দীর্ঘায়িত হতো না। সুতরাং এ জন্য প্রশাসন ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায় কম নয়। বরং তারাই হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে মূল উদ্যোগী ছিলেন। যারা হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে, ইসমাইল হোসেন এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ বিভাগের বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। আবার অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে রাখা হয়েছে। তাদের অনেকে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে। কেউ কেউ চিকিৎসা কিংবা বিদেশপড়ুয়া ছেলেমেয়েকে দেখার নামে বিদেশে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তারা আগেই শুনেছেন। কিন্তু তাদের কিছুই করার ছিল না। কারণ চাকরি করতে হলে সরকারের শীর্ষ মহলের কথা শুনতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আহ্বায়ক এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, বিগত সরকারের ভোট ডাকাতির নির্বাচনে যারা জড়িত ছিলো, তারা শুধু গণতন্ত্রকেই হত্যা করেননি, বরং রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছে। কিন্তু, দু-একজন ছাড়া কারো বিরুদ্ধে সরকার উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো ব্যবস্থা এখনো নেয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

দিনের ভোট রাতে, ফেঁসে যাচ্ছেন ডিসি-এসপি-ইউএনওরা

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৮:৫৯:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের অনিয়ম তদন্ত করবে সরকার। এই সময় রাতের ভোট ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) ভূমিকা তদন্ত করা হবে।

একইভাবে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সুপার, থানার ওসিদের দায়িত্ব পালন এবং তাঁদের ভূমিকারও তদন্ত করা হবে। সরকারি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাতের ভোট ও ভোট কারচুপির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে বিগত সরকারের আমলে নির্বাচনকালীন মাঠে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ফেঁসে যেতে পারেন ।

তবে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা। জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস-উর-রহমান বলেন, এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর কাজ করছে।

জানা গেছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা মনে করেন, বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দিনের ভোট আগের রাতেই গ্রহণ, ব্যাপক জালিয়াতি এবং ডামি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসাররা সর্বাত্মক সহায়তা করেছে। তাদের সহায়তায় হাসিনা সরকার নির্বাচন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে।

প্রশাসন মনে করছে, হাসিনা সরকারের অনৈতিক কাজে সহায়তা না করলে ফ্যাসিজম দীর্ঘায়িত হতো না। সুতরাং এ জন্য প্রশাসন ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায় কম নয়। বরং তারাই হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে মূল উদ্যোগী ছিলেন। যারা হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে, ইসমাইল হোসেন এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ বিভাগের বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। আবার অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে রাখা হয়েছে। তাদের অনেকে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে। কেউ কেউ চিকিৎসা কিংবা বিদেশপড়ুয়া ছেলেমেয়েকে দেখার নামে বিদেশে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তারা আগেই শুনেছেন। কিন্তু তাদের কিছুই করার ছিল না। কারণ চাকরি করতে হলে সরকারের শীর্ষ মহলের কথা শুনতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের আহ্বায়ক এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, বিগত সরকারের ভোট ডাকাতির নির্বাচনে যারা জড়িত ছিলো, তারা শুধু গণতন্ত্রকেই হত্যা করেননি, বরং রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছে। কিন্তু, দু-একজন ছাড়া কারো বিরুদ্ধে সরকার উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো ব্যবস্থা এখনো নেয়নি।