ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন বন্ধের উপক্রম

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৮:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার উৎপাদিত কয়লা ষ্টাইক ইয়ার্ডে জায়গা না থাকায় কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উৎপাদিত কয়লার একমাত্র ক্রেতা হচ্ছে দেশের প্রথম কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটির মধ্যে দুইটি ইউনিটই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা কমে যাওয়ায় এ অবস্থার উপত্রুম হয়েছে বলে খনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর দেশের প্রথম কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে চালু থাকা দুইটি ইউনিটের মধ্যে আরও একটি ইউনিট সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা আরও কমে যায়।

এদিকে কয়লার ষ্টাইক ইয়ার্ডে ক্ষতিকারক গ্যাস নিঃসরণসহ কয়লার স্বতঃস্ফূর্ত প্রজ্বলনের আশংকা করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। খনির রির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে প্রতিদিন কয়লা উৎপাদন হওয়ার কথা ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন।

গত ৩ আগস্ট খনির ১৪১৪ ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু থেকেই সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মেক্ট্রিক টন কয়লা নিরবচ্ছিন্নভাবে উৎপাদন হয়ে আসছে। গত অক্টোবর মাস পযর্ন্ত এ ফেইস হতে ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার মে. টন কয়লা উৎপাদন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আরও ১ লাখ ২০ হাজার টন সহ মোট ৪ লক্ষ ৮৪ হাজার মেক্ট্রিক টনকয়লা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। আর এই উৎপাদিত কয়লার বর্তমানে একমাত্র গ্রাহক পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তিনটি ইউনিট চালাতে তাদের চাহিদা ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। কিন্তু তারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্মলগ্ন থেকে ৩টি ইউনিট কোন দিনই এক সঙ্গে চালাতে সক্ষম হয়নি। কিছুদিন থেকে ১ ও ৩নং ইউনিটটি চালু ছিল।

যার মধ্যে ১ নম্বর ইউনিটটি সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এক সঙ্গে ইউনিট গুলো চালাতে না পারায় ও যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বিভিন্ন সময় কোন না কোন ইউনিট বন্ধ থাকায় এবং ইউনিট গুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় কয়লার ব্যবহারও কমে গেছে।

কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে, তাপবিদ্যৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট যথাযথভাবে পরিচালিত না হওয়ায় গত আগস্ট থেকে তারা দৈনিক গড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টনের স্থলে ২ হাজার হতে ২ হাজার ৩০০ টন করে কয়লা সরবরাহ হচ্ছে। অর্থাৎ বিসিএমসিএল এর কোল ইয়ার্ডে উৎপাদিত কয়লার মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৭০০ টন করে কয়লা জমা হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিনই বাড়ছে মওজুদের পরিমান।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কয়লা খনিতে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মে.টন কয়লা উৎপাদন হচ্ছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুইটি ইউনিট চালাতে কয়লার চাহিদা দৈনিক ২ হাজার ৩০০ মে.টন বাকি কয়লা খনির ইয়ার্ডে পড়ে থাকছে। সোমবার দুপুরে ১ নম্বর ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত কয়লা গ্রহণকরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আসছে শুস্ক মৌমুমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা বাড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন বন্ধের উপক্রম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৮:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার উৎপাদিত কয়লা ষ্টাইক ইয়ার্ডে জায়গা না থাকায় কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উৎপাদিত কয়লার একমাত্র ক্রেতা হচ্ছে দেশের প্রথম কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটির মধ্যে দুইটি ইউনিটই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা কমে যাওয়ায় এ অবস্থার উপত্রুম হয়েছে বলে খনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

দিনাজপুরের পার্বতীপুর দেশের প্রথম কয়লা ভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে চালু থাকা দুইটি ইউনিটের মধ্যে আরও একটি ইউনিট সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা আরও কমে যায়।

এদিকে কয়লার ষ্টাইক ইয়ার্ডে ক্ষতিকারক গ্যাস নিঃসরণসহ কয়লার স্বতঃস্ফূর্ত প্রজ্বলনের আশংকা করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। খনির রির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে প্রতিদিন কয়লা উৎপাদন হওয়ার কথা ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন।

গত ৩ আগস্ট খনির ১৪১৪ ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু থেকেই সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মেক্ট্রিক টন কয়লা নিরবচ্ছিন্নভাবে উৎপাদন হয়ে আসছে। গত অক্টোবর মাস পযর্ন্ত এ ফেইস হতে ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার মে. টন কয়লা উৎপাদন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আরও ১ লাখ ২০ হাজার টন সহ মোট ৪ লক্ষ ৮৪ হাজার মেক্ট্রিক টনকয়লা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। আর এই উৎপাদিত কয়লার বর্তমানে একমাত্র গ্রাহক পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তিনটি ইউনিট চালাতে তাদের চাহিদা ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। কিন্তু তারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্মলগ্ন থেকে ৩টি ইউনিট কোন দিনই এক সঙ্গে চালাতে সক্ষম হয়নি। কিছুদিন থেকে ১ ও ৩নং ইউনিটটি চালু ছিল।

যার মধ্যে ১ নম্বর ইউনিটটি সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এক সঙ্গে ইউনিট গুলো চালাতে না পারায় ও যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বিভিন্ন সময় কোন না কোন ইউনিট বন্ধ থাকায় এবং ইউনিট গুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় কয়লার ব্যবহারও কমে গেছে।

কয়লা খনি ও তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে, তাপবিদ্যৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট যথাযথভাবে পরিচালিত না হওয়ায় গত আগস্ট থেকে তারা দৈনিক গড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টনের স্থলে ২ হাজার হতে ২ হাজার ৩০০ টন করে কয়লা সরবরাহ হচ্ছে। অর্থাৎ বিসিএমসিএল এর কোল ইয়ার্ডে উৎপাদিত কয়লার মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার ৭০০ টন করে কয়লা জমা হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিনই বাড়ছে মওজুদের পরিমান।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কয়লা খনিতে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মে.টন কয়লা উৎপাদন হচ্ছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুইটি ইউনিট চালাতে কয়লার চাহিদা দৈনিক ২ হাজার ৩০০ মে.টন বাকি কয়লা খনির ইয়ার্ডে পড়ে থাকছে। সোমবার দুপুরে ১ নম্বর ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদা না থাকায় উৎপাদিত কয়লা গ্রহণকরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আসছে শুস্ক মৌমুমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার চাহিদা বাড়বে।