জাতীয় সংগীত নিষিদ্ধের ঘোষণা সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১০:৩৮:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
‘আমার সোনার বাংলা’ রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সংগীত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা। এই সংগীতে ‘বাংলা’ বলতে বাংলাদেশকে বুঝানো হয়নি, বুঝানো হয়েছে কলকাতাকেন্দ্রীক স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাকে। যে গানে বাংলাদেশের অস্তিত্ব নেই, সেই গান কিভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হয়?
রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর মালিবাগ মোড় ফালইফারাহু চত্বরে এক সমাবেশে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এসব কথা বলেন।
সমাবেশে প্রতিনিধিরা বলেন, বাংলাদেশের শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ মুসলমান। আর রবীন্দ্রনাথের লেখা গানটিতে শিরকী বিষয় আছে, যা একজন মুসলমান কখনই পাঠ করতে পারে না। তাই বাংলাদেশে এই শিরকী বাক্যসংযুক্ত গানটি ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত হলো।
তারা বলেন, আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে এই গান গাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। গানটিকে সংবিধানের জাতীয় সংগীত অংশ থেকেও বাদ দিতে হবে।
সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিগণ দেশ ও জাতির কল্যাণে মোট ১৭টি দাবী উত্থাপন করেন। দাবীগুলো হলো-
১ম দফা – নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে কোন কুলাঙ্গার মানহানী করলে তার শরঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২য় দফা – পাঠ্যক্রমে নূরে মুসজাসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভূক্তকরণ এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম নির্ভর শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। আরবী ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩য় দফা- রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ একটি নিষিদ্ধ গান, এটি কোন প্রতিষ্ঠানে পাঠ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই এটি কোথাও পাঠ করা যাবে না। সংবিধানে জাতীয় সংগীতের অংশ হতে গানটিকে বাদ দিতে হবে। এবং তার বদলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আম্মাজান হযরত উম্মু রসুলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নাত শরীফকে জাতীয় নাত শরীফ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৪র্থ দফা –পবিত্র কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন কুফরী আইন পাশ করা যাবে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন-১৯৭৩ সংশোধনের খসড়ায় সমকামীতার বিরুদ্ধাচারণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করায়, খসড়াটি বাতিল করতে হবে। কোন আইন বা সংবিধানের ধারা সংস্কার করতে হলে অবশ্যই তা পবিত্র কুরআন-সুন্নাহের ভিত্তিতেই করতে হবে, এর ব্যতিক্রম করা যাবে না। তবে অবশ্যই হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদলে দেশ পরিচালনা করতে হবে। যা করলে সর্বোত্তমভাবে দেশ পরিচালিত হবে।
৫ম দফা- বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কোন অফিস স্থাপন করা যাবে না।
৬ষ্ঠ দফা- দ্রব্যমূল্য ও চিকিৎসা সেবার উর্ধ্বগতি হ্রাস করতে হবে।
৭ম দফা- পাহাড়ে উপজাতিদের আদিবাসী বলা যাবে না। তাদেরকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলতে হবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা পৃথক রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র করতেছে, তাদেরকে দমন করতে হবে। পাহাড়ে কথিত রাজার শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। সারা দেশে একই আইনে শাসন চলবে, পার্বত্য এলাকায় ভিন্ন আইন চলবে না।
৮ম দফা- নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। সারা দেশে যেভাবে মানুষ প্রয়োজন মাফিক ভ্রমণ করতে পারে, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপেও একইভাবে সারাবছর ভ্রমণ করতে পারবে। পরিবেশ দূষণের অজুহাতে যদি নারিকেল জিঞ্জিরা খালি করতে হয়, তবে সর্ব প্রথম রাজধানী ঢাকাকে খালী করতে হবে, কারণ রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর। যে সমস্ত এনজিও (যেমন- বেলা, পবা ইত্যাদি) পরিবেশের নাম দিয়ে মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ করতে চায়, মানুষকে বাস্তুচ্যূত করতে চায়, তারা বিদেশীদের দালাল, তাদেরকে নিষিদ্ধ করে, গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান পরিবেশ উপদেষ্টার বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় বিরোধীতা করেছিলো। এখন তার মেয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা হয়ে পরিবেশবাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি ও গণমানুষের বিরোধীতা করছে। তাকেও বরখাস্ত ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
৯ম দফা- হিন্দুত্ববাদ ও ভারতসহ বিদেশী রাষ্ট্র তোষণ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিন, ভারতসহ পৃথিবীর যে প্রান্তেই মুসলিম নির্যাতন হবে সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে আমেরিকার ট্রাম্প যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। পাশাপাশি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এই সংগঠনসমূহের সকল সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।
১০ম দফা- জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধের টিকার নামে মেয়েদের বন্ধাত্ব তৈরী করা যাবে না। টিকা দিয়ে যে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়েছে বা মারা গেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দেখা যাচ্ছে, এ টিকা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও কিছু বিদেশী দালালরা মিথ্যা গুজব রটনা করছে। তাদের এ মিথ্যা রটনার জন্য তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জনসংখ্যা জনসম্পদ এবং জনশক্তি। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের যাবতীয় পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
১১ম দফা- বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে হবে। অবৈধ সংযোগগুলোকে বৈধ ভাবে সংযুক্ত করলে রাষ্ট্রীয় আয়ও বাড়বে।
১২তম দফা- পলিথিন নিষিদ্ধ নয় রিসাইক্লিং পদ্ধতি চালু করতে হবে। পলিথিন ব্যবসার সাথে জড়িত কোটি কোটি মানুষের আর্থিক ক্ষতি করা চলবে না।
১৩তম দফা- নদী ও সাগরে মাছধরার উপর কোন রূপ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জেলেদের রুটি-রুজির উপর আঘাত দেয়া চলবে না। সারা বছর মাছ ধরতে দিতে হবে।
১৪তম দফা- ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করতে হবে। দেশের প্রয়োজনীয় বালি-পাথর দেশের উৎস থেকেই উত্তোলন করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের পাথর ও বালি উত্তোলনে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যাবে না। সর্ব প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। এই কাজে জড়িত কোটি কোটি বেকার লোককে কর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে।
১৫তম দফা: দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করা হচ্ছে। চাল, পিয়াজ, ডিমসহ সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হচ্ছে। এগুলো টাকা পাচার করার উপলক্ষ। অর্থনীতিকে আমদানি নির্ভর করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।
১৬ তম দফা: সারা দেশের বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ট। অবিলম্বে দেশের সকল বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করতে হবে।
১৭ তম দফা- মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না। সবাই নিজেদের অধিকারের কথা বলতে পারলে মুসলমানরা কেন বলতে পারবে না? মুসলমানদেরকেও নিজেদের অধিকারের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। কিছুতেই মুসলমানদের বাক স্বাধীনতা হরণ করা চলবে না।