বেরোবিতে দলীয় রাজনীতি বন্ধ
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৭ বার পড়া হয়েছে
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিক্ষকসহ ৭ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বহিস্কার করা হয়েছে। সেই সাথে ৭২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টেবর) বিকেলে বেরোবির সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলী জানিয়েছেন।
এর আগে বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরী সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেন। তিনি জানান গতকাল সোমবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সিন্ডিকেট সভায় ১০ জন সদস্যের মধ্যে ৮ জন উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য জানান, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে বেরোবি ইংরেজি বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে এবং এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী দুই শিক্ষক মশিউর রহমান শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ মন্ডলসহ ৭ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেই সাথে আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ জন শিক্ষার্থী জড়িত থাকার অভিযোগে তাদেরও বহিস্কার এবং সবার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অপরদিকে, এখন থেকে কোন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী দলীয় রাজনীতি করতে পারবেনা। সেই সাথে টেন্ডার বাজি, চাঁদাবাজি, সীট বাণিজ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
সেই সাথে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীসহ শতাধিক ব্যক্তি ৫ আগষ্ট এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় তিন শিক্ষক বাংলা বিভাগের ড, তুহিন ওয়াদুদ, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ব বিভাগের মোঃ ইউসুফ ও এবং গনিত বিভাগের আইরিন আখতারের চাকুরীর বিধি লংঘন সহ বিভিন্ন অভিযোগ গনমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় এ ব্যাপারে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা করা হয়েছে । এসব অভিযোগে বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। তবে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আরো আগের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত কিভাবে নেয়া হয়েছিলো সব বিষয় পর্যালোচনা করা হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন আনুযায়ী কোন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী কোন দলের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। এটা কেন এতদিন হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হবে সেই সাথে এখনও যারা বিভিন্ন দলের সাথে জড়িত আছেন তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে। মতবিনিময় কালে উপাচার্যের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী মুশফিক জানান, আমরা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নামে ছাত্রলীগ যেসব অপকর্ম করেছে তারা মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাইদকে হত্যা করার সাথে সরাসরি সংপৃক্ত ছিলো। আমরা বার বার বলে আসছিলাম আবু সাইদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি আর দলীয় লেজুর বৃত্তি বন্ধ করতে হবে। আজ এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষনা দেয়ায় আমরা সিন্ডিকেট ও উপাচার্য মহোদয়কে দন্যবাদ জানাই।
একই কথা বলেন শিক্ষার্থী সাইদুল আরমান , সাবিহা মাবুব তারা বলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় লেজুর বৃত্তির ছাত্র ছাত্র রাজনীতি ভয়াবহ চিত্র আমরা দেখেছি। আমরা দাবি করেছিলাম ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে সে ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে এতে আমরা দারুন খুশি তবে ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে ছাত্র সংসদ থাকা দরকার বলেও আমরা মনে করি বলে জানান ।