ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিকপক্ষের গড়িমসিতে চরম হতাশায় ট্যানারী শ্রমিকরা

১১ মাসেও চুড়ান্ত হয়নি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি

দেব্রবত দত্ত
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫৪:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪ ৫৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ঢাকা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়েছে।

ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরী বোর্ডের ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালে ১৭ আগস্ট। আগামী ২২ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ৬ষ্ঠ সভায় এ মজুরী বোর্ড এর সময়কাল হবে ১১ মাস ৫ দিন। বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর মজুরী সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায় এর ধারা ১৩৯ উপধারা ২ অনুযায়ী নিম্নতম মজুরীর সুপারিশ বোর্ড গঠন হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করার কথা।

নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণায় বিলম্বের জন্য মালিকদের অবহেলাই দায়ী বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউনিয়নের নেতারা। তারা জোর দেন যে এই বিলম্ব শিল্পের স্থিতিশীলতা এবং কল্যাণের জন্য ক্ষতিকারক যা ট্যানারি শ্রমিকদের চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অনেক শ্রমিক ঋণগ্রস্ত, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে লড়াই করছে এবং খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার মতো মৌলিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ট্যানারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এর সভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিবৃতি উপস্থাপন করেন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও নিম্নতম মজুরী বোর্ড এর সংশ্লিষ্ট শিল্প শ্রমিক প্রতিনিধি আব্দুল মালেক। ৎ

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমূল আহসান জুয়েল ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর সভাপতি ও স্কপের অন্যতম নেত্রী শামীম আরা।

সভায় উপস্থাপিত বিবৃতি অনুযায়ী, ইউনিয়নের ২৫,০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এ্যাংকর মেথোডলোজী ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে যা নিশ্চিত করে যে মজুরি সুপারিশ বাস্তবসম্মত এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মজুরি সুপারিশটি বাংলাদেশ সংবিধানের ধারা-১৫, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ ধারা ১৪১, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা অনুচ্ছেদ ২৩, আইএলও কনভেনশন ১৩১, সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কাঠামোর দ্বারা সমর্থিত। এতে আরো বিবেচিত হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা ও সরকারি সহায়তা কর্মসূচি, একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দারিদ্র্যসীমা, এবং দৈনিক খাদ্য ব্যয়ের হিসাব, বাসযোগ্য বাসস্থানের ন্যূনতম গড় খরচ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বর্তমান ন্যূনতম মজুরি ২০১৮ সালে নির্ধারিত হয়েছিল ১৩,৫০০ টাকা এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বার্ষিক ৫% বৃদ্ধিতে তা ২০২৪ সালে দাঁড়ায় ১৭,৫৪৮ টাকায়। এর কম যে কোন পরিমাণ নিয়ে আলোচনা আইনের পরিপন্থী হবে। বক্তারা ৫ম মজুরি বোর্ড সভায় মালিকদের উপস্থাপিত মজুরি প্রস্তাবের সমালোচনা করেন।

বোর্ডের প্রথম দুটি সভা যথাক্রমে ১৭ আগস্ট ২০২৩ এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই। ৬ মে ২০২৪-এ হওয়া তৃতীয় বৈঠকে শ্রমিক প্রতনিধিরা তাদের প্রস্তাব জমা দিলেও মালিকরা তাদের কোন প্রস্তাব উত্থাপন করেনি। ২৭ মে এবং ২৩ জুন এর পরবর্তী দুই সভায় মালিকরা যে প্রস্তাব জমা দেয় তা বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী বলে মনে করেন ইউনিয়ন নের্তৃবৃন্দ।

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮-এ প্রকাশিত গেজেট অনুসারে বর্তমান মজুরি কাঠামো ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত বৈধ ছিল৷ একটি নতুন ন্যূনতম মজুরি হার সুপারিশ করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালে একটি ন্যূনতম মজুরি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

লিকপক্ষের গড়িমসিতে চরম হতাশায় ট্যানারী শ্রমিকরা

১১ মাসেও চুড়ান্ত হয়নি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫৪:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

ট্যানারি শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ঢাকা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়েছে।

ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত মজুরী বোর্ডের ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালে ১৭ আগস্ট। আগামী ২২ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ৬ষ্ঠ সভায় এ মজুরী বোর্ড এর সময়কাল হবে ১১ মাস ৫ দিন। বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর মজুরী সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায় এর ধারা ১৩৯ উপধারা ২ অনুযায়ী নিম্নতম মজুরীর সুপারিশ বোর্ড গঠন হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করার কথা।

নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণায় বিলম্বের জন্য মালিকদের অবহেলাই দায়ী বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউনিয়নের নেতারা। তারা জোর দেন যে এই বিলম্ব শিল্পের স্থিতিশীলতা এবং কল্যাণের জন্য ক্ষতিকারক যা ট্যানারি শ্রমিকদের চলমান অর্থনৈতিক দুরবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অনেক শ্রমিক ঋণগ্রস্ত, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে লড়াই করছে এবং খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসার মতো মৌলিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ট্যানারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এর সভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিবৃতি উপস্থাপন করেন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও নিম্নতম মজুরী বোর্ড এর সংশ্লিষ্ট শিল্প শ্রমিক প্রতিনিধি আব্দুল মালেক। ৎ

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমূল আহসান জুয়েল ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর সভাপতি ও স্কপের অন্যতম নেত্রী শামীম আরা।

সভায় উপস্থাপিত বিবৃতি অনুযায়ী, ইউনিয়নের ২৫,০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এ্যাংকর মেথোডলোজী ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে যা নিশ্চিত করে যে মজুরি সুপারিশ বাস্তবসম্মত এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মজুরি সুপারিশটি বাংলাদেশ সংবিধানের ধারা-১৫, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ ধারা ১৪১, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা অনুচ্ছেদ ২৩, আইএলও কনভেনশন ১৩১, সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কাঠামোর দ্বারা সমর্থিত। এতে আরো বিবেচিত হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা ও সরকারি সহায়তা কর্মসূচি, একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দারিদ্র্যসীমা, এবং দৈনিক খাদ্য ব্যয়ের হিসাব, বাসযোগ্য বাসস্থানের ন্যূনতম গড় খরচ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বর্তমান ন্যূনতম মজুরি ২০১৮ সালে নির্ধারিত হয়েছিল ১৩,৫০০ টাকা এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বার্ষিক ৫% বৃদ্ধিতে তা ২০২৪ সালে দাঁড়ায় ১৭,৫৪৮ টাকায়। এর কম যে কোন পরিমাণ নিয়ে আলোচনা আইনের পরিপন্থী হবে। বক্তারা ৫ম মজুরি বোর্ড সভায় মালিকদের উপস্থাপিত মজুরি প্রস্তাবের সমালোচনা করেন।

বোর্ডের প্রথম দুটি সভা যথাক্রমে ১৭ আগস্ট ২০২৩ এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই। ৬ মে ২০২৪-এ হওয়া তৃতীয় বৈঠকে শ্রমিক প্রতনিধিরা তাদের প্রস্তাব জমা দিলেও মালিকরা তাদের কোন প্রস্তাব উত্থাপন করেনি। ২৭ মে এবং ২৩ জুন এর পরবর্তী দুই সভায় মালিকরা যে প্রস্তাব জমা দেয় তা বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী বলে মনে করেন ইউনিয়ন নের্তৃবৃন্দ।

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮-এ প্রকাশিত গেজেট অনুসারে বর্তমান মজুরি কাঠামো ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত বৈধ ছিল৷ একটি নতুন ন্যূনতম মজুরি হার সুপারিশ করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালে একটি ন্যূনতম মজুরি বোর্ড প্রতিষ্ঠা করে।