ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসিনার পতন ও দেশ ছেড়ে পালানো

বিশেষ প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪ ৭২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক পালবদলে। যার পরিণামে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে গণভবন ছাড়েন তিনি। তাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে রওনা হয় ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’র উদ্দেশে। হেলিকপ্টারটি উড়িয়ে নিয়ে যান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার কমান্ডার আব্বাস।

জানা যায়, দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ না করে রাজধানী লাগোয়া গাজ়িয়াবাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণ করেন হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গণভবনে চড়াও হন হাজার হাজার মানুষ। চলে লুটপাট। গণভবনের ভিতর থেকে ঘাড়ে, কাঁধে, পিঠে নানা আসবাব সামগ্রী, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এমনকি গণভবনের পোষ্য ছাগল, খরগোশ, হাঁস নিয়ে বেরিয়ে আসার ছবি, ভিডিও প্রকাশ্যে আসে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট ওই ভবনে সেনা অফিসারদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। তার স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালও নিহত হন ঘাতকের বুলেটে। বিদেশে থাকার কারণে বেঁচে যান মুজিবের দুই কন্যা, হাসিনা এবং রেহানা। ঘটনাচক্রে, সোমবার (৫ আগস্ট) তারা দু’জন সেনার হেলিকপ্টারে ঢাকা ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন ছাই হয়ে যায় মুজিবের স্মৃতি বিড়জিত ৩২ নম্বর ধানমন্ডি রোডের সেই সংগ্রহশালা।

১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৩টি বড় মাপের সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী বাংলাদেশ। সেনার হাতে নিহত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান। এছাড়া, গত সাড়ে ৫ দশকে একাধিক ছোট-বড় ব্যর্থ অভ্যুত্থানও হয়েছে। শেষবার ২০০৭ সালে সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করেছিলো সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি-নিষেধের কারণে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সরসরি ক্ষমতার চাবিকাঠি হাতে নেননি।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে হাসিনার পদত্যাগের কথা জানিয়ে বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করব।

জাতির উদ্দেশে ভাষণের আগে তিনি তিন দলের (বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি) প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন জানিয়ে জেনারেল জামানের দাবি, সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।

একই সাথে বাংলাদেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং রাজনৈতিক কর্মীদের বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে সেনাপ্রধানের আশ্বাস, প্রতিটি হত্যার বিচার হবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের জনতার উদ্দেশে জেনারেল জামান বলেন, আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। ভাঙচুর করবেন না। আমি নির্দেশ দিয়েছি পুলিশ বা সেনাবাহিনী গুলি চালাবে না। আপনারা আশাহত হবেন না। আপনাদের যত দাবি আছে, তা আমরা পূরণ করব এবং দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনব।

সূত্রের খবর, শেক হাসিনা পদত্যাগ করে তদারকি সরকারের ভার দিয়েছেন জাতীয় সংসদের (পার্লামেন্ট) স্পিকার শিরিন সারমিন চৌধুরির হাতে।

গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার পর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে চিহ্নিত করছিলেন বলে অভিযোগ।

প্রায় দু’শো জনের প্রাণহানির পরে ২১ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আন্দোলনকারীদের দাবি অনুকূলে রায় দেওয়ার পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিলো। যদিও ছাত্রহত্যায় জড়িত পুলিশকর্মী এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এ পরিস্থিতিতে গত ৩১ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামি এবং তাদের জঙ্গি মনোভাবাপন্ন শাখা সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা করার পরে নতুন করে দানা বাঁধে বিক্ষোভ।

সূত্রের দাবি, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০জে হারকিউলিস পরিবহণ বিমানে হাসিনা গাজিয়াবাদে নামেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা। গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণের পর সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই। পরিস্থিতি বুঝে ডোভাল রিপোর্ট দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে।

এদিকে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে রয়েছে ৪,০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার (৫ আগস্ট) সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঢাকাগামী বিমান বাতিল করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে ট্রেন চলাচল আগেই বন্ধ করা হয়েছে। ৩০ ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশগামী বিমান বাতিল করেছে বিমান সংস্থা ইন্ডিগো।

বিমান সংস্থা ভিস্তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তারা। তবে এখনই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেনি এই সংস্থা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ছ’ঘণ্টার জন্য উড়ান বন্ধ রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, আন্দোলনের চাপে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এ পরিস্থিতিতে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানাবিধ জল্পনার মাঝে ছেলে সাজিব ওয়াজিদ জয় একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এতো পরিশ্রম করার পরেও যেভাবে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হল, তাতে তিনি (হাসিনা) অত্যন্ত হতাশ।

সোমবার হাসিনার পদত্যাগের পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, রবিবার থেকেই পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন তার মা। শেষমেশ পরিবারের চাপে নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশে ছেড়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

হাসিনার পতন ও দেশ ছেড়ে পালানো

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:২৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো রক্তক্ষয়ী রাজনৈতিক পালবদলে। যার পরিণামে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে গণভবন ছাড়েন তিনি। তাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে রওনা হয় ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’র উদ্দেশে। হেলিকপ্টারটি উড়িয়ে নিয়ে যান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার কমান্ডার আব্বাস।

জানা যায়, দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ না করে রাজধানী লাগোয়া গাজ়িয়াবাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণ করেন হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গণভবনে চড়াও হন হাজার হাজার মানুষ। চলে লুটপাট। গণভবনের ভিতর থেকে ঘাড়ে, কাঁধে, পিঠে নানা আসবাব সামগ্রী, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এমনকি গণভবনের পোষ্য ছাগল, খরগোশ, হাঁস নিয়ে বেরিয়ে আসার ছবি, ভিডিও প্রকাশ্যে আসে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট ওই ভবনে সেনা অফিসারদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। তার স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালও নিহত হন ঘাতকের বুলেটে। বিদেশে থাকার কারণে বেঁচে যান মুজিবের দুই কন্যা, হাসিনা এবং রেহানা। ঘটনাচক্রে, সোমবার (৫ আগস্ট) তারা দু’জন সেনার হেলিকপ্টারে ঢাকা ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন ছাই হয়ে যায় মুজিবের স্মৃতি বিড়জিত ৩২ নম্বর ধানমন্ডি রোডের সেই সংগ্রহশালা।

১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৩টি বড় মাপের সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী বাংলাদেশ। সেনার হাতে নিহত হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমান। এছাড়া, গত সাড়ে ৫ দশকে একাধিক ছোট-বড় ব্যর্থ অভ্যুত্থানও হয়েছে। শেষবার ২০০৭ সালে সরকার গঠনে হস্তক্ষেপ করেছিলো সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি-নিষেধের কারণে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সরসরি ক্ষমতার চাবিকাঠি হাতে নেননি।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে হাসিনার পদত্যাগের কথা জানিয়ে বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করব।

জাতির উদ্দেশে ভাষণের আগে তিনি তিন দলের (বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি) প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন জানিয়ে জেনারেল জামানের দাবি, সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।

একই সাথে বাংলাদেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং রাজনৈতিক কর্মীদের বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে সেনাপ্রধানের আশ্বাস, প্রতিটি হত্যার বিচার হবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের জনতার উদ্দেশে জেনারেল জামান বলেন, আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। ভাঙচুর করবেন না। আমি নির্দেশ দিয়েছি পুলিশ বা সেনাবাহিনী গুলি চালাবে না। আপনারা আশাহত হবেন না। আপনাদের যত দাবি আছে, তা আমরা পূরণ করব এবং দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনব।

সূত্রের খবর, শেক হাসিনা পদত্যাগ করে তদারকি সরকারের ভার দিয়েছেন জাতীয় সংসদের (পার্লামেন্ট) স্পিকার শিরিন সারমিন চৌধুরির হাতে।

গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার পর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে চিহ্নিত করছিলেন বলে অভিযোগ।

প্রায় দু’শো জনের প্রাণহানির পরে ২১ জুলাই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আন্দোলনকারীদের দাবি অনুকূলে রায় দেওয়ার পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিলো। যদিও ছাত্রহত্যায় জড়িত পুলিশকর্মী এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের বিচার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এ পরিস্থিতিতে গত ৩১ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামি এবং তাদের জঙ্গি মনোভাবাপন্ন শাখা সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা করার পরে নতুন করে দানা বাঁধে বিক্ষোভ।

সূত্রের দাবি, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০জে হারকিউলিস পরিবহণ বিমানে হাসিনা গাজিয়াবাদে নামেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা। গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণের পর সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে সাক্ষাৎ করেন শেখ হাসিনা। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই। পরিস্থিতি বুঝে ডোভাল রিপোর্ট দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে।

এদিকে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে রয়েছে ৪,০৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত। সোমবার (৫ আগস্ট) সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঢাকাগামী বিমান বাতিল করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে ট্রেন চলাচল আগেই বন্ধ করা হয়েছে। ৩০ ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশগামী বিমান বাতিল করেছে বিমান সংস্থা ইন্ডিগো।

বিমান সংস্থা ভিস্তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তারা। তবে এখনই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেনি এই সংস্থা। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ছ’ঘণ্টার জন্য উড়ান বন্ধ রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, আন্দোলনের চাপে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। এ পরিস্থিতিতে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানাবিধ জল্পনার মাঝে ছেলে সাজিব ওয়াজিদ জয় একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। এতো পরিশ্রম করার পরেও যেভাবে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হল, তাতে তিনি (হাসিনা) অত্যন্ত হতাশ।

সোমবার হাসিনার পদত্যাগের পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, রবিবার থেকেই পদত্যাগের কথা ভাবছিলেন তার মা। শেষমেশ পরিবারের চাপে নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে দেশে ছেড়েছেন তিনি।