হানিকুইনের রাজ্যে জলডুগি, দামে হাসি নেই চাষীদের
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ২৩৫ বার পড়া হয়েছে
টাঙ্গাইলের লাল মাটির মধুপুর গড়ে জমে উঠেছে জলডুগি আনারসের বাজার। দাম কম থাকায় চাষীদের মুখে হাসি নেই। রাসায়নিক ব্যবহার ও এক সাথে সবাই বাজারজাত করার কারণেই কৃষকরা আনাসের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকে। তবে এখন আনারস অনেকটা কমে যাওয়ায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লাল মাটির মধুপুরে মূলত ক্যালেন্ডার ও জলডুগি এ দুই ধরনের আনারসের আবাদ হয়। জলডুগি মার্চ – এপ্রিল আর জুন-জুলাই মাসে ক্যালেন্ডার বাজারজাত করা হয়।
সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে লাল মাটিতে চাষ শুরু হয়েছে জলডুগি আনারস। এ ফল এ মাটিতে নতুন। মাটির গুণাগুণ ভালো থাকায় ফলনও ভালো হচ্ছে। কয়েক বছর ভালো দাম পেয়ে কৃষক ঝুঁকছে জলডুগি চাষে। এ বছর চাহিদার চেয়ে বেশি আবাদ হতে পারে এমন ধারণা থেকে অনেকেই মনে করছে দাম কম যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ভাবছে রাসানিক ব্যবহারের ফলেও দাম কমতে পারে। এ নিয়ে চলছে নানা হিসেব নিকেশ।
সরজমিনে মধুপুরের জলছত্র, পিরোজপুর, চাপাইদ,সাইনামারি, কাকড়াগুনি, জয়নাগাছা, মোটের বাজার, গারোবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্যালেন্ডার আনারসের পাশাপাশি জলডুগি আনরাসের বাগান। বাগানে জলডুগি পেকে আছে। চারদিকে মৌ মৌ গন্ধ।
জলছত্র বাজারে গিয়ে কথা হয়, আনারস বিক্রেতা খোরশেদ আলম (৫০) এর সাথে তিনি জানান, দুই শত আনারস নিয়ে বাজারে এসেছেন। দাম হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। অথচ এই আনারসই কয়েক দাম আরো অনেক কম ছিল।
শামছুল হক এক বিক্রেতা জানান, তিনশত আনারস এনে তিন হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। ছমির উদ্দিন জানান, সে প্রতিদিন আনারস বিক্রি করতে আসেন। তার প্রায় ৫০ হাজার আনারস রয়েছে। প্রথমে ভালো দাম পাননি। তবে এখন ভালো দাম পাচ্ছে।
প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর হতে আনারস বিক্রি শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন জেলায় মধুপুরের এ আনারসের সমাগম ঘটে থাকে। মধুপুরের আনারস গুণে মানে ভালো থাকার কারণে ক্রেতারও কোন অভাব হয় না।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই মৌসুমে মধুপুরে ছয় হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আনারস আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ৩২৪ হেক্টরে চাষ হয়েছে জলডুগি আনারস। এছাড়া ছয় হাজার ৫১০ হেক্টরে ক্যালেন্ডার প্রজাতির আনারস আবাদ হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে এমডি-টু জাতের আনারস আবাদ করা হয়েছে ছয় হেক্টর জমিতে।
আনারস গুটি ধরা থেকে পাকা পর্যন্ত ৬ থেকে ৭ মাস সময় লাগে। আর জলডুগি আনারস চারা রোপণ থেকে পাকা পর্যন্ত ১২ মাস সময় লাগে। যদিও জুন-জুলাই মাসে আনারস বাজারে আসার কথা। তবে মার্চেই বিক্রি শুরু হয়েছে।