ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী

সাইদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক দিলো বেরোবি

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪ ২১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের তার রংপুরের পীরগজ্ঞ উপজেলার মদনখালি ইউনিয়নের বাবনপাড়া গ্রামে বাসায় গিয়ে বাবা মায়ের হাতে সাড়ে সাত লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেকদিন আমাদের সাথে দেখা করতে আসে। সে সময় ভিসি আমার সাথে মোবাইলে কথা বলেন। আমাদের খোঁজ খবর নেন। আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দেন। আমি ভিসি মহোদয়কে বলেছিলাম আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়া হয়। তিনি আমাকে আশ^স্ত করেছেন। বাবা মকবুল হোসেন বলেন সন্তানকে তো আর ফিরে পাবোনা। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব শেষ সময়ে।

নিহত আবু সাঈদের বাবা আরো বলেন, আমার কলিজার টুকরা ছিলো আবু সাঈদ। তার প্রাইভেট পড়ানোর (টিউশনের) টাকায় আমাদের সংসার চলতো। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোন সান্তনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারি কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেয়া। আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ বাবা।

নিহত সাইদের মা মনোয়ারা বেগম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন তারা আমাদের প্রতি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এছাড়াও পরিচিত অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, কর্মকর্তা এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ভিসি মহোদয়ের নির্দেশে সাঈদের বাবা মায়ের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজকে সারে সাত লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ জানান আমরা আপাতত নিহত সাইদের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা প্রদান করলাম। আমরা আরো সহায়তা করবো। সেই সাথে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় তার পাশের্^ আছে এবং থাকবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্ময়ক আবু সাইদ কোটা বিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের সৈনিক ছিলেন তিনি কোটা সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ আর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলা কালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী

সাইদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক দিলো বেরোবি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের তার রংপুরের পীরগজ্ঞ উপজেলার মদনখালি ইউনিয়নের বাবনপাড়া গ্রামে বাসায় গিয়ে বাবা মায়ের হাতে সাড়ে সাত লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেকদিন আমাদের সাথে দেখা করতে আসে। সে সময় ভিসি আমার সাথে মোবাইলে কথা বলেন। আমাদের খোঁজ খবর নেন। আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি দেন। আমি ভিসি মহোদয়কে বলেছিলাম আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়া হয়। তিনি আমাকে আশ^স্ত করেছেন। বাবা মকবুল হোসেন বলেন সন্তানকে তো আর ফিরে পাবোনা। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব শেষ সময়ে।

নিহত আবু সাঈদের বাবা আরো বলেন, আমার কলিজার টুকরা ছিলো আবু সাঈদ। তার প্রাইভেট পড়ানোর (টিউশনের) টাকায় আমাদের সংসার চলতো। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোন সান্তনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারি কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেয়া। আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ বাবা।

নিহত সাইদের মা মনোয়ারা বেগম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন তারা আমাদের প্রতি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এছাড়াও পরিচিত অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, কর্মকর্তা এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ভিসি মহোদয়ের নির্দেশে সাঈদের বাবা মায়ের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজকে সারে সাত লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ জানান আমরা আপাতত নিহত সাইদের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা প্রদান করলাম। আমরা আরো সহায়তা করবো। সেই সাথে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় তার পাশের্^ আছে এবং থাকবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্ময়ক আবু সাইদ কোটা বিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের সৈনিক ছিলেন তিনি কোটা সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ আর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলা কালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাইদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন।