ঢাকা ০১:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত

সরকারীভাবে চিকিৎসা সহায়তা চান নাফিউল ইসলাম

মির্জা তুষার আহমেদ,নওগাঁ
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪ ২৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চলতি বছরের জুলাই মাসে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের চালানো বুলেটে বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয় মেধাবী শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলাম। ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য অর্থের যোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন নাফিউলের পরিবার।

এরপরও চোখ ফিরে পাবে কিনা এবং স্বাভাবিক মানুষের মতো দুই চোখ দিয়ে দেখতে পাবে কিনা সেই হতাশায় মেধাবী শিক্ষার্থী নাফিউল।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামের শুকবর আলীর ছেলে নাফিউল ইসলাম। ১৮বছরের নাফিউল ইসলাম ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি বগুড়া (আইআইটিবি) নামের বেসরকারি পলিটেকনিকে কম্পিউটার বিভাগের চতুর্থ পর্বের শিক্ষার্থী। প্রকৌশলী করার আশা নিয়ে নাফিউলকে বগুড়াতে পাঠায় তার পরিবার। দেশে ঘটে যাওয়া বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিজের সুন্দর ও স্বাভাবিক ভবিষ্যৎ ফিরে পাওয়া নিয়ে দু:শ্চিন্তায় দিন কাটছে নাফিউল ইসলামের। তিন ভাইয়ের মধ্যে নাফিউল তৃতীয়। সে ২০২২সালে উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করে।

শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলাম জানান, সহপাঠিদের সাথে গত ১৭জুলাই সকালে বগুড়ার কলোনীতে সরকারি পলিটেকনিকের সামনে শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। পরের দিন ১৮ জুলাই বিকালে মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশের এলোপাতাড়ি ভাবে নির্বিচারে গুলি চালায় এ সময় একটি গুলি এসে তার বাম চোখের ভিতর দিয়ে মস্তিষ্কে ঢুকে যায়। এরপর সহপাঠিরা গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বগুড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে ঢাকার ভিশন আই সেন্টারে চিকিৎসা চলছে। কিন্তু একাধিকবার অপারেশন করেও মস্তিষ্কের মধ্যে আটকে থাকা গুলি বের করতে পারেননি চিকিৎসকরা। বর্তমানে নাফিউল এক চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছে। আদেও নাফিউল আরেক চোখ ফিরে পাবে কিনা সেই নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

নাফিউলের মা জেসমিন বেগম বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার জন্যই আমার ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেলো। তাই চিকিৎসার জন্য দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারী কাছে সহযোগিতা প্রদানসহ ভবিষ্যতে আমার ছেলের জন্য একটি চাকরী প্রদান করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নাফিউলের বাবা শুকবর আলী জানান, এরমধ্যেই কয়েক লাখ টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়ে গেছে। তার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে বর্তমানে নাফিউলের চিকিৎসার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারী ভাবে সহায়তা না পেলে নাফিউলের জন্য উন্নত চিকিৎসা অব্যাহত রাখা তার পক্ষে আর সম্ভব হবে না।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: শাহজাহান আলী বলেন সরকারী ভাবে নাফিউলকে সহযোগিতা করা খুবই জরুরী। মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা শুকবর আলীর জমি-জমাও তেমন একটা নেই। যা ছিলো তা বন্ধক রেখে ছেলের চিকিৎসা করছে। সরকারীভাবে সহযোগিতা করা না হলে মাঝ পথেই থেমে যাবে মেধাবী নাফিউলের চোখের চিকিৎসা। এছাড়া আমার পক্ষ থেকেও নাফিউলকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, নাফিউলের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত

সরকারীভাবে চিকিৎসা সহায়তা চান নাফিউল ইসলাম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

চলতি বছরের জুলাই মাসে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের চালানো বুলেটে বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয় মেধাবী শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলাম। ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য অর্থের যোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন নাফিউলের পরিবার।

এরপরও চোখ ফিরে পাবে কিনা এবং স্বাভাবিক মানুষের মতো দুই চোখ দিয়ে দেখতে পাবে কিনা সেই হতাশায় মেধাবী শিক্ষার্থী নাফিউল।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামের শুকবর আলীর ছেলে নাফিউল ইসলাম। ১৮বছরের নাফিউল ইসলাম ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি বগুড়া (আইআইটিবি) নামের বেসরকারি পলিটেকনিকে কম্পিউটার বিভাগের চতুর্থ পর্বের শিক্ষার্থী। প্রকৌশলী করার আশা নিয়ে নাফিউলকে বগুড়াতে পাঠায় তার পরিবার। দেশে ঘটে যাওয়া বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিজের সুন্দর ও স্বাভাবিক ভবিষ্যৎ ফিরে পাওয়া নিয়ে দু:শ্চিন্তায় দিন কাটছে নাফিউল ইসলামের। তিন ভাইয়ের মধ্যে নাফিউল তৃতীয়। সে ২০২২সালে উপজেলার শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করে।

শিক্ষার্থী নাফিউল ইসলাম জানান, সহপাঠিদের সাথে গত ১৭জুলাই সকালে বগুড়ার কলোনীতে সরকারি পলিটেকনিকের সামনে শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। পরের দিন ১৮ জুলাই বিকালে মিছিল নিয়ে বের হলে পুলিশের এলোপাতাড়ি ভাবে নির্বিচারে গুলি চালায় এ সময় একটি গুলি এসে তার বাম চোখের ভিতর দিয়ে মস্তিষ্কে ঢুকে যায়। এরপর সহপাঠিরা গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বগুড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে ঢাকার ভিশন আই সেন্টারে চিকিৎসা চলছে। কিন্তু একাধিকবার অপারেশন করেও মস্তিষ্কের মধ্যে আটকে থাকা গুলি বের করতে পারেননি চিকিৎসকরা। বর্তমানে নাফিউল এক চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছে। আদেও নাফিউল আরেক চোখ ফিরে পাবে কিনা সেই নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

নাফিউলের মা জেসমিন বেগম বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার জন্যই আমার ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেলো। তাই চিকিৎসার জন্য দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারী কাছে সহযোগিতা প্রদানসহ ভবিষ্যতে আমার ছেলের জন্য একটি চাকরী প্রদান করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নাফিউলের বাবা শুকবর আলী জানান, এরমধ্যেই কয়েক লাখ টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়ে গেছে। তার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে বর্তমানে নাফিউলের চিকিৎসার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারী ভাবে সহায়তা না পেলে নাফিউলের জন্য উন্নত চিকিৎসা অব্যাহত রাখা তার পক্ষে আর সম্ভব হবে না।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: শাহজাহান আলী বলেন সরকারী ভাবে নাফিউলকে সহযোগিতা করা খুবই জরুরী। মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা শুকবর আলীর জমি-জমাও তেমন একটা নেই। যা ছিলো তা বন্ধক রেখে ছেলের চিকিৎসা করছে। সরকারীভাবে সহযোগিতা করা না হলে মাঝ পথেই থেমে যাবে মেধাবী নাফিউলের চোখের চিকিৎসা। এছাড়া আমার পক্ষ থেকেও নাফিউলকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, নাফিউলের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।