সংসদে ম্যাজিক দেখাবেন রাহুল গান্ধী
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:৪৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪ ৯৯ বার পড়া হয়েছে
মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি। কথা বলেন আগের চেয়ে মেপে। তার মানে তিনি এখন অনেক পরিণত হয়েছেন। তবুও দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য এখনো কতটা যুক্তিযুক্ত সেই নিয়েই তর্কবিতর্ক হতে পারে অনেক। এই পরীক্ষায় যারা ভেবেছিলো রাহুল গান্ধী ফেল করবে। তাদের কিন্তু মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
কারণ রাহুল গান্ধী লেটার মার্কস নিয়ে পাশ করেছে। শুধু তাই নয়, কংগ্রেসকে আবার জীবন দিয়েছেন রাহুল। গত কয়েক বছরে তিনি মাটির কাছাকাছি নেমে এসেছেন। সেটা প্রচারের স্বার্থেই হোক কিংবা সংবাদমাধ্যমের প্রথম পেজে স্টোরি করার জন্যই হোক, রাহুল গান্ধী বদলে গিয়েছেন। তিনি এখন অঅর ‘পাপ্পু’ নেই। তিনি এখন একটা দলের বোঝা কাঁধে টানার জন্য প্রস্তুত।
লোকসভা ভোটে ২০১৪ সালে কংগ্রেস মাত্র ৪৪টি আসন জিতেছিলো। ২০১৯ সালে কংগ্রেস ৫২টি আসন পায়। ঠিক সেই সময় থেকে চরম হাসির পাত্র হয়ে পড়েন রাহুল গান্ধী। তার থেকে একটা সময় মুখ ফিরিয়ে নেয় কংগ্রেসই। নিজ ঘরেই ঘর ছাড়া হয়ে পড়েন রাহুল। এরপর মাঝখানে কেটে গেছে অনেক বছর। রাহুলের প্রত্যাবর্তন হয়েছে। তিনি এখন মেপে চলেন। ভোটের ফলাফল বেরনোর পর তার প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে তাকে বেশ পরিণত বলেই মনে হয়েছে। গায়ে সাদা শার্ট, হাতে সংবিধান।
রাহুল গান্ধীর হাত ধরেই কি একটা মহাকাব্য রচিত হবে আগামী লোকসভায়। গান্ধী পরিবার আবার একজন প্রধানমন্ত্রী পাবে।এর উত্তর পাওয়া যেতে পারে ২০২৯ এর লোকসভা ভোটে। তবে এই ২০২৪ লোকসভা ভোট তাকে বদলে দিয়েছে। কংগ্রেস ২০২৪ সালে লোকসভা ৯৯টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ।
রাহুল গান্ধী মাঝখানে নিজের সাংসদ পদ খুইয়েছিলেন। হারিয়েছিলেন বাংলোও। তবুও তিনি নিজের লক্ষ্যেই অবিচল ছিলেন। বিজেপি জাঁতাকলে নিজের সবটুকু বিসর্জন দিয়ে দিতেই পারতেন, তবুও তিনি স্থির থেকেছেন।
লোকসভা নির্বাচনে ২০১৯ দেশে প্রধানমন্ত্রীর স্ট্রাইক রেট ছিল ৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ যে যে লোকসভা কেন্দ্রে তিনি জনসভা করেন, তার ৮৫ শতাংশ গিয়েছিলো বিজেপির দখলে। ২০২৪-এ এসে সেই স্ট্রাইক রেটই নেমে এল ৫৬ শতাংশে। অর্থাৎ যে যে কেন্দ্রে প্রচারে জোর দিয়েছেন মোদি সেগুলোর মধ্যে ৪৪ শতাংশে হারতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে।
অন্যদিকে, ২০১৯-এ রাহুল গান্ধী যেখানে ২০ শতাংশেরও কম,এবার সেখানে ৪৮ শতাংশ স্ট্রাইক রেটে আসন জিতিয়েছেন তিনি।
যত জনগণের সাথে মিশেছেন তত রাহুল গান্ধীর ভাবভঙ্গি পাল্টেছে। দাড়ি বেড়েছে। চেহারাও বদলেছে। ভারতের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত তিনি হেঁটে গেছেন। হাত মিলিয়েছেন বহুজনপদের সাথে। ঝড়ে পড়া বরফে ভাষণ দিয়েছেন। তবুও তিনি একবারের জন্য হয়ে ওঠার সাধনা থেকে সরে আসেননি।
ভোটের পরও একবারের জন্য ক্যামেরার সামনে নিজের বিষণ্ণতা প্রকাশ করেননি। বরং হাসি মুখে হাত মিলিয়েছেন। তিনি ‘বড়’ হয়ে উঠেছেন ।