শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শাশুড়ি গৃহিণী: রয়েছে ১৮ ব্যাংক হিসাব
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১২:০৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। দু’দক এসব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৯ কোটি টাকা জমা হওয়া ও বড় অংশ উত্তোলনের তথ্য পেয়েছে।
দু’দকের নথির তথ্যমতে,এবিআরের ফয়সালের শ্বশুর আহম্মেদ আলী একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তার শাশুড়ি মমতাজ বেগম পেশায় গৃহিণী। ফয়সাল ঘুষ ও অবৈধ মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিজের ও স্ত্রীর নামে রাখার পাশাপাশি স্বজনদের নামে রেখেছেন। শ্বশুর ও শাশুড়ির নামের ব্যাংক হিসাবে যে অর্থ লেনদেন হয়েছে, তা ফয়সালেরই অবৈধ আয়।
দু’দকের নথি অনুযায়ী, ফয়সাল ও তার ১১ স্বজনের নামে ১৯টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮৭টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে তার শ্বশুর-শাশুড়ির ব্যাংক হিসাবে। ফয়সাল তার অবৈধ পথে উর্পাযিত আয় লুকানোর জন্য স্বজনদের নামে ৭০০টির মতো ব্যাংক হিসাব খুলেন। এরমধ্যে দু’দক ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে।
এদিকে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের পরিবারের দুটি বাড়ি ও প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া বাড়ির গ্যারেজে রয়েছে টয়েটো ‘হ্যারিয়ার’ গাড়ি। তার স্ত্রী একটি হ্যারিয়ার গাড়িতে খুলনায় ঘোরাফেরা করতেন।
জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বাড়ি খুলনা মহানগরীর মুজগুন্নী এলাকায়। তার বাবার নাম কাজী আবদুল হান্নান। তবে স্থানীয়রা তাকে ফিরু কাজী হিসেবে চেনে।
খুলনা মহানগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় দুই বিঘার জমির একটি প্লট। মুজগুন্নী এলাকায় গিয়ে প্লটে ফিরু গাজীর নাম সাইনবোর্ডে ঝুলতে দেখা যায়। এছাড়া যশোর রোডের নেছারিয়া মাদ্রাসার পাশে প্রায় দুই বিঘার জমির উপর আলিশান তিনতলা বাড়ি। গ্যারেজে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি দেখা গেছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মাহফুজুর রহমান লিটন জানিয়েছেন, তাদের সম্পদশালী হিসেবেই এলাকার মানুষ জানে। কাজী ফয়সাল এলাকায় কম আসতেন। তবে তার স্ত্রী আফসানা জেসমিন কয়েক দফা তার কাছে সনদ দিতে এসেছেন। এছাড়া প্রায় তিনি টয়েটা ‘হ্যারিয়ার’ গাড়িতে ঘোরাফেরা করতেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এনবিআরের কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দু’দকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
তার আগে এনবিআর কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৬৫ বিঘা জমি, ৮টি ফ্ল্যাট, দুইটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং দুইটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে। তার নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। সাবেক কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক।