ঢাকা ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বললেন ড. ইউনূস

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখী করা উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মনে করেন কি-না জানতে চাওয়া হলে ড. ইউনূস পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন: ‘কেনো উচিত হবে না?’ এর পর বলেন, ‘তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। আপনি তো বিচারের পক্ষে কথা বলছেন, তাহলে উনারও তো বিচারের সম্মুখীন হওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস ‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। পরে ছাত্র-জনতা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষমতা গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায় এবং তিনি সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। তিনি ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কোনো সময়সীমা তাঁর কাছে নেই। যে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা সামনের মাসগুলোতে সংস্কার সুপারিশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি নির্বাচনে লড়ব?’

গণপিটুনি বা মব জাস্টিস সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাইরে থেকে ‘অতিরঞ্জিত’ খবর পাচ্ছেন। যা ঘটছে সেটাকে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নিজ চোখে যেটা দেখবেন সেটাই রিপোর্ট করেন।

‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ব বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আটকে থাকবে, ততক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি কার্যকর হবে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার লক্ষ্যে ‘প্যারিস চুক্তি’ করা হয়। বৈশ্বিক এই চুক্তি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়।


অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, এই ব্যবস্থা (অর্থনৈতিক ব্যবস্থা) সর্বোচ্চ মুনাফা-কেন্দ্রিক। ব্যবস্থাটি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য সম্পদ তৈরি করছে। এটি ব্যাপক বর্জ্য উৎপন্ন করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করেছি, তা এই গ্রহ ধ্বংসের মূল। তিনি বলেন, মানুষ একটি ‘আত্মবিনাশী সভ্যতা’ তৈরি করেছে।

ড. ইউনূস বলেন, চুক্তিতে যে পরিবর্তনই করা হোক না কেন, বিশ্বের মৌলিক ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে না সাজানো পর্যন্ত তা কোনো পার্থক্য বয়ে আনবে না।

ড. ইউনূস বলেন, ধনী দেশগুলোর মাধ্যমে হওয়া জলবায়ুর ক্ষতির বোঝা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বহন করা উচিত নয়।

‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, অধিকারকর্মী ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিত্বরা যোগ দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বললেন ড. ইউনূস

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখী করা উচিত

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০১:১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মনে করেন কি-না জানতে চাওয়া হলে ড. ইউনূস পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন: ‘কেনো উচিত হবে না?’ এর পর বলেন, ‘তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। আপনি তো বিচারের পক্ষে কথা বলছেন, তাহলে উনারও তো বিচারের সম্মুখীন হওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস ‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। পরে ছাত্র-জনতা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষমতা গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায় এবং তিনি সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। তিনি ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কোনো সময়সীমা তাঁর কাছে নেই। যে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা সামনের মাসগুলোতে সংস্কার সুপারিশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি নির্বাচনে লড়ব?’

গণপিটুনি বা মব জাস্টিস সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাইরে থেকে ‘অতিরঞ্জিত’ খবর পাচ্ছেন। যা ঘটছে সেটাকে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নিজ চোখে যেটা দেখবেন সেটাই রিপোর্ট করেন।

‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ব বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আটকে থাকবে, ততক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি কার্যকর হবে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার লক্ষ্যে ‘প্যারিস চুক্তি’ করা হয়। বৈশ্বিক এই চুক্তি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়।


অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, এই ব্যবস্থা (অর্থনৈতিক ব্যবস্থা) সর্বোচ্চ মুনাফা-কেন্দ্রিক। ব্যবস্থাটি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য সম্পদ তৈরি করছে। এটি ব্যাপক বর্জ্য উৎপন্ন করছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করেছি, তা এই গ্রহ ধ্বংসের মূল। তিনি বলেন, মানুষ একটি ‘আত্মবিনাশী সভ্যতা’ তৈরি করেছে।

ড. ইউনূস বলেন, চুক্তিতে যে পরিবর্তনই করা হোক না কেন, বিশ্বের মৌলিক ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে না সাজানো পর্যন্ত তা কোনো পার্থক্য বয়ে আনবে না।

ড. ইউনূস বলেন, ধনী দেশগুলোর মাধ্যমে হওয়া জলবায়ুর ক্ষতির বোঝা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বহন করা উচিত নয়।

‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, অধিকারকর্মী ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিত্বরা যোগ দেন।