ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছেন শহীদ আবু সাঈদ

রংপুর প্রতিনিধি
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছাত্রলীগের আক্রমনে আহত হয়ে ট্রমা নিয়ে ১৮তম নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

নিহত শহীদ আবু সাইদের সহযোদ্ধারা জানিয়েছেন গত ১১ জুলাই আবু সাঈদ নিহত হওয়ার আগে ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে বেরোবির ছাত্র লীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক শামীমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ বাধা দেয়।

এক পর্যায়ে বেরোবি ছাত্ররীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া চর থাপ্পড় দেন আবু সাঈদকে। তার সহযোগীরা তাকে কিল ঘুষি মেরে আহত করেন। শুধু তাই নয় ওইদিন আবু সাঈদকে গলা টিপে ধরার ঘটনাও ঘটে। এই ট্রমা নিয়েই পরের দিন (১২ জুলাই) পরীক্ষা দেন আবু সাঈদ।

আবু সাঈদের সাথে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সহযোদ্ধা ও অন্যতম সমন্ময়ক বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, ১১ তারিখ ক্যাম্পাসে মিছিল করার পর ১২ তারিখ ছিলো আবু সাঈদ ভাইয়ের নিবন্ধন লিখিত পরিক্ষা।আমরা ওই দিন সকালে মিটিং করবো তো আবু সাঈদ ভাই বলছিলেন আমার জীবনের এইটা প্রথম পরীক্ষা। পরিক্ষা দিবো কিনা? কিছুই পড়িনি আন্দোলনের কারণে। বললাম ভাই পরিক্ষা দিয়ে আসেন আমরা বিকেলে মিটিং করবো।তো আগের দিনে ১১ তারিখ ছাত্রলীগের চর থাপ্পড় মার খাওয়ার স্ট্রেস নিয়ে ১২ তারিখ পরিক্ষা দিতে যান আবু সাঈদ ভাই। আজ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি পাশ করেছেন দুঃখজনক হলেও সত্যি আবু সাঈদ ভাই আমাদের মাঝে নেই। তিনি বলেন আমরা শুধু বীর শহীদ সাঈদ ভাইকেই হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী শিক্ষার্থীকে।

ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আবু সাঈদ পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। ওর (আবু সাঈদ) টার্গেট ছিল জীবনে ভালো কিছু করার কিন্তু অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে। আজ বেঁচে থাকলে হয়তোবা ভালো কিছু করত।

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর ব্যাবস্থাপনায় অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২৩-এর স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় , কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান /দাখিল ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) ও স্কুল-২ (মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট এবং কারিগরি ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১২ জুলাই ২০২৪ এবং কলেজ (কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় , মাধ্যমিকোত্তর/উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি/ভোকেশনাল/ব্যাবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান /ইন্সটিটিউট এবং আলিম ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন। এর মধ্যে স্কুল ও সমপর্যায়ের ৫৫ হাজার ৮৯০ জন, স্কুল-২ পর্যায়ের ৫ হাজার ৩২৩ জন এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের ২২ হাজার ৬৫২ জনসহ সর্বমোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছেন শহীদ আবু সাঈদ

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৩৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্রলীগের আক্রমনে আহত হয়ে ট্রমা নিয়ে ১৮তম নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ। সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

নিহত শহীদ আবু সাইদের সহযোদ্ধারা জানিয়েছেন গত ১১ জুলাই আবু সাঈদ নিহত হওয়ার আগে ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে বেরোবির ছাত্র লীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক শামীমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ বাধা দেয়।

এক পর্যায়ে বেরোবি ছাত্ররীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া চর থাপ্পড় দেন আবু সাঈদকে। তার সহযোগীরা তাকে কিল ঘুষি মেরে আহত করেন। শুধু তাই নয় ওইদিন আবু সাঈদকে গলা টিপে ধরার ঘটনাও ঘটে। এই ট্রমা নিয়েই পরের দিন (১২ জুলাই) পরীক্ষা দেন আবু সাঈদ।

আবু সাঈদের সাথে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সহযোদ্ধা ও অন্যতম সমন্ময়ক বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, ১১ তারিখ ক্যাম্পাসে মিছিল করার পর ১২ তারিখ ছিলো আবু সাঈদ ভাইয়ের নিবন্ধন লিখিত পরিক্ষা।আমরা ওই দিন সকালে মিটিং করবো তো আবু সাঈদ ভাই বলছিলেন আমার জীবনের এইটা প্রথম পরীক্ষা। পরিক্ষা দিবো কিনা? কিছুই পড়িনি আন্দোলনের কারণে। বললাম ভাই পরিক্ষা দিয়ে আসেন আমরা বিকেলে মিটিং করবো।তো আগের দিনে ১১ তারিখ ছাত্রলীগের চর থাপ্পড় মার খাওয়ার স্ট্রেস নিয়ে ১২ তারিখ পরিক্ষা দিতে যান আবু সাঈদ ভাই। আজ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি পাশ করেছেন দুঃখজনক হলেও সত্যি আবু সাঈদ ভাই আমাদের মাঝে নেই। তিনি বলেন আমরা শুধু বীর শহীদ সাঈদ ভাইকেই হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী শিক্ষার্থীকে।

ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আবু সাঈদ পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। ওর (আবু সাঈদ) টার্গেট ছিল জীবনে ভালো কিছু করার কিন্তু অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে। আজ বেঁচে থাকলে হয়তোবা ভালো কিছু করত।

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর ব্যাবস্থাপনায় অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২৩-এর স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় , কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান /দাখিল ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) ও স্কুল-২ (মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট এবং কারিগরি ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১২ জুলাই ২০২৪ এবং কলেজ (কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় , মাধ্যমিকোত্তর/উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি/ভোকেশনাল/ব্যাবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান /ইন্সটিটিউট এবং আলিম ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন। এর মধ্যে স্কুল ও সমপর্যায়ের ৫৫ হাজার ৮৯০ জন, স্কুল-২ পর্যায়ের ৫ হাজার ৩২৩ জন এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের ২২ হাজার ৬৫২ জনসহ সর্বমোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ন হয়েছে।