যমুনা গিলে খাচ্ছে ইসলামপুর
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:৫৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে জামালপুরের ইসলামপুুর উপজেলায় যমুনার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ডুবে যাচ্ছে যমুনার চরাঞ্চলের অসংখ্য ফসলি জমি ও বিলীন হচ্ছে বসতভিটা।
চলমান ভাঙ্গনে যমুনার চরাঞ্চলে বেলগাছা ইউনিয়নের সিন্দুরতলী, শিলদহ, পূর্ব মন্নিয়া, চর মন্নিয়া, গ্রামের ছয় শতাধিক ও সাপধরী ইউনিয়নের যমুনার শাখা নদী চেংগানিয়া, মন্ডলপাড়া, কাঁসারী ডোবা, আকন্দপাড়া, প্রজাপতি, শিশুয়া, চরশিশুয়া ও চেঙ্গানিয়া গ্রাম সমূহের চার শতাধিক বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে কৃষককুল দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সাপধরী ইউনিয়নের যমুনার একটি শাখা নদীর তীব্র্র ভাঙ্গনের মুখে কাশারীডোবা গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আজিজুর রহমান চৌধুরী, বাদশা আলম, লাল মিয়া, কাইজার আলী, জোনাব আলী, ডাবু বেপারী, সাদু বেপারী, তারাজল, মোজাম্মেল, হযরত আলী, আনোয়ার মন্ডল, নুর মোহাম্মদ, ফইজদ্দীন, নুরল ইসলাম গসাল, শিরিন মন্ডল ও সোজাম্মেল সেকসহ চার শতাধিক পরিবার বসতভিটা অন্যত্র সরিয়েছেন। চলমান তীব্র ভাঙনে দিশাহারা নদীপাড়ে মানুষগুলো।
ফারাজী পাড়া গ্রামের ছানু ফারাজী জানান, আঙ্গরে দেশি মরিচ, হাইবিট মরিচ ও ধানক্ষেত নদী ভেঙ্গে বাড়ী-ঘরও ধরছে। এহন কোনডা থুইয়ে কোনডা ধরি। আঙ্গরে দুক্কু কেউ এলা দেকপেরও আইলোনা।
কাশারীডোবা গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আজিজুর রহমান চৌধুরী জানান, যমুনা চরাঞ্চলে ভরা ফসলি মৌসুমে আবারো আকস্মিক বন্যা শুরু হয়েছে। এতে আমার দুইবিঘা জমির হাইবিট মরিচ ক্ষেত, এক বিঘা জমির কলা বাগান ও পাঁচ বিঘা জমির রোপা আমন ক্ষেত প্রতিদিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে ক্রমেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। যমুনায় অসময়ের এই ভয়াবহ বন্যার পানি রোধে কার্যকর ব্যাবস্থা নিতে হবে সরকারকে। এছাড়াও সাপধরী ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত যমুনার একটি শাখা নদীর তিনটি পয়েন্টে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের পাইলিং করলে সাপধরী ইউনিয়নের কাশারীডোবা, ইন্দুল্লামারী, আকন্দপাড়া, চেঙ্গানিয়া ও মন্ডলপাড়া গ্রাম সমুহের অন্তত: পাঁচহাজার কৃষকের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী ভাঙ্গনে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন সাপধরী ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের তোতা মন্ডল, জবা মন্ডল, বিদ্যুত মন্ডল, নয়া মন্ডল ও নাসির মন্ডলসহ প্রায় চার শতাধিক পরিবার।
অন্যদিকে, বেলগাছা ইউনিয়নের চারটি গ্রামের আজিজল আকন্দ,মনোহার আলী,ইউপি সদস্য মমতাজ আলী,দুদু দোকানদার,ঈমান আলী,স্বপন আকন্দ,সাহাজ প্রামানিক, শান্তাহার আকন্দ,আনার আলী,তৈয়ব আলী মন্ডল,আবুল কালাম,ইয়াদ আলী,রফিকুল ইসলাম,সহিজল মুন্সি,হাজী আঃ সামাদ, আফসার আলী,আঃ মালেক,শুক্কুর মন্ডল,বেলাল মন্ডল,ফজল আলী,হাফিজুর,ইদ্রিস আলী,কালাম প্রামানিক,আনছার আলী,ফুল মিয়া,তৈমদ্দিন প্রামানিক,নুরুল সোনারু,কালু মিয়া,জাম্বু মিয়া,জামাত আলী,খৈইমদ্দিন মন্ডলসহ ৬শতাধিক পরিবার বাড়িঘর অনত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
সাপধরী ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মন্ডল জানান- ইতিমধ্য চার শতাধিক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। সকলেই মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, এ বছর মন্নিয়া, সিন্দুরতলী, শিলদহ গ্রামের প্রায় ছয় শতাধিক বসতভিটা যমুনা গর্ভে বিলীন সহ ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। কৃষকরা বসত ভিটা ও ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান বাংলা টাইমসকে জানান, নদীভাঙন পরিবারদের খোঁজ খবর নিচ্ছি।