মোদী ম্যাজিকে ধস, এক দশক পর একদলীয় শাসনের ইতি!
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৬:১৬:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ১১৩ বার পড়া হয়েছে
‘বাংলা ম্যাজিক দেখাবে।’ সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সত্যিই ম্যাজিক দেখাল বাংলা। তবে ইতিবাচক নয়, নেতিবাচক ম্যাজিক। রাজ্যে সবুজ ঝড় তুললো তৃণমূল।
মোদি-শাহ-নাড্ডারা বাংলার ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন। রোড শো করেছেন নরেন্দ্র মোদিও। কিন্তু তাতে লাভ হলো না। গো হারা হারলো বঙ্গ বিজেপি। রাজনৈতিক মহল বলছে, একটা নয়, একাধিক কারণ রয়েছে বিজেপির বিপর্যয়ের।
আরও পড়ুন : এমপি আনার হত্যা/ আসামিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অনুসন্ধান করবে ডিবি
এক দশক পর একদলীয় শাসনের ইতি হতে চলেছে ভারতে। সেই সাথে অষ্টাদশ লোকসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফিরতে চলেছে বিরোধী দলনেতার পদও। মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুর পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফল এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নরেন্দ্র দামোদর দাসের হাতেই তৃতীয় বারের মতো দেশের ভার দিতে চলছে জনতা। তবে ভোটগণনার প্রবণতা বলছে, ২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো এবার সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না তার দল বিজেপি। ‘৪০০ পার’ কঠিন হতে চলেছে পদ্মশিবিরের। ৫৪৫ আসনের ( দু’টি মনোনীত আসন-সহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি। ভোটের ফলাফল অনুযায়ী বিজেপির দৌড় আড়াইশোর আগেই থেমে যেতে পারে!
সরকার গড়তে মোদীকে নির্ভর করতে হবে এনডিএ-র দুই শরিক, চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর উপর। এর আগেও ওই দুই নেতাই একাধিক বার এনডিএ ত্যাগের এবং প্রত্যাবর্তনের ইতিহাস রয়েছে। ভারতের ইতিহাসে মোদীই হতে চলেছেন দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী। যিনি পর পর তিনবার ক্ষমতায় এলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরুর মতো পরপর তিন বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা দখলের রেকর্ড করা হচ্ছে না তার। যদিও নরেন্দ্র মোদী একাধিক বার দাবি করেছিলেন, এককভাবে বিজেপি ৩৭০ আসনে জিতবে।
আরও পড়ুন : সাবেক আইজিপি বেনজীরের ৩ কালো হাত
অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনতে পারে এমনটাই ভোট গণনার ফলাফলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিরোধীয় দলনেতার জন্য লোকসভায় ৫৫টি আসনে জেতা প্রয়োজন। ২০১৪-য় ৪৪ এবং ২০১৯-এ ৫২টি আসনে জেতা কংগ্রেস সংসদীয় বিধি অনুযায়ী সেই মর্যাদা পায়নি। এবার ভোটের প্রবণতা বলছে ৯০ থেকে ১০০টির মধ্যে আসন জিততে পারে মল্লিকার্জুন খড়্গের দল। ‘ইন্ডিয়া’র সব সহযোগী দল মিলে দু’শোর গণ্ডি টপকাতে চলেছে। এর ফলে লোকসভার অধিবেশনে এবার বিরোধীদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে মোদীকে।
এক বছর আগে গড়ে ওঠে কংগ্রেস, তৃণমূল, বামসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির যৌথমঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ -র (যে জোটের যার নামকরণে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। গত ১৯ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী নেতাদের দ্বিতীয় বৈঠকে ‘ইন্ডিয়া’র আবির্ভাবের সাথেই ইতিহাসের পাতায় চলে গিয়েছিল ১৯ বছর আগে গড়ে ওঠা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ।
‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছিলো এবারের ভোটে। বাংলায় তৃণমূল, কেরলে বাম, পঞ্জাবে আম আদমি পার্টি (আপ), জম্মু ও কাশ্মীরে পিডিপির মতো কেউ আবার কংগ্রেসের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। জোটের প্রতিশ্রুতিতে নিজেদের রাজ্যে আলাদা করে ভোটে লড়াই কতরছেন। ২০২৩ সালের ২৩ জুন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের ডাকে পটনার বিরোধী জোটের বৈঠকে ১৫টি দল ছিলো। জুলাইয়ে বেঙ্গালুরুতে সেই তালিকা বেড়ে হয়েছিলো ২৬টি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নীতীশ সদলবলে ফিরে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে। তার দল ভাল করলেও ২০১৯-এর তুলনায় মগধভূমে আসন কমল ‘পদ্মে’র।