মেহেন্দিগঞ্জে বিএনপি পরিচয়ে ঘেরের মাছ লুট
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০২:৫০:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
বিএনপি নেতা পরিচয়ে বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলিমাবাদ ইউনিয়নের চর গাগুরিয়া গ্রামের বিশালাকার একটি ঘের থেকে দফায় দফায় প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করা হয়েছে।
স্থানীয় জামাল খাঁ ওরফে মাওলানার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মাসুদ শিকদার, রফিক ওরফে হাঁস রফিক, সাব্বির হাওলাদার, আজিজুল মাঝি, আনোয়ার রাঢ়ি সহ ২৫/৩০ জনের একটি দল দেশিয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে গভীর রাতে জাল টেনে মাছ ধরে ড্রামে ভরে নিয়ে যায়।
একইসাথে ঘেরের মালিক মৎস্যচাষি মোস্থফা কামাল খানকে দমন করতে উল্টো নানাভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করে আসছে। এমনকি ঘের মালিক বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। ভয়ে ঘের মালিক মোস্থফা ঘেরের ধারে কাছেও যায় না বলে জানান স্থানীয়রা।
এদিকে এই লুটতারাজের সাথে সেখানকার আলিমাবাদ পাতাবুনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন নেপথ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বলে সরেজমিন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
মৎস্যচাষি মোস্তফা কামাল খান জানান, মেহিন্দগঞ্জ আলিমাবাদ চর গাগুরিয়া গ্রামে তার মালিকানাধীন ও সরকারী পতিত সম্পত্তির প্রায় ৩০ একর জমিতে একটি মাছের ঘের রয়েছে। মাছ চাষের পর গত ৫/৬ ধরা হয়নি। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর স্থানীয় সন্ত্রাসী মাসুদ শিকদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নিজেদরে বিএনপি পরিচয় দিয়ে চলতি বছরের নভেম্বর মাসজুড়ে গভীর রাতে কয়েক দফায় প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। ৮/৯ কেজি ওজনের আইড়-রুই কাতল সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রাতের অন্ধকারে জাল টেনে ধরে নিয়ে গেছে। পরের দফায় পানি খালের দিকে ছেড়ে দিয়ে ঘের শুকিয়ে ফেলে ছোট বড় সব আকৃতির মাছ নিয়ে গেছে। উল্টো থানায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অপর একটি নির্ভর যোগ্যসূত্র জানিয়েছে, ঘেরে সিমান্তবর্তী ভোলা জেলা থেকে বড় জাল ভাড়া করে এনে মাসুদ সিকদার রাতের অন্ধকারে মাছ লুট কাজে সরাসরি অংশ নেয়। এ বিষয়ে থানা পুলিশ বা সাংবাদিকরা ঘটনা স্থলে গেলেই মাও.জামাল উদ্দিন মাছ লুটকারি মাসুদ শিকদারের পক্ষ হয়ে ঘটনা নানান দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন।
একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি নাম প্রকাশ করার শর্তে জানান, মাওলানা জামাল মাছ লুটের ভাগ নেয় সেজন্য সন্ত্রাসি মাসুদ শিকদারের পক্ষে কথা বলে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদ শিকদার জানান, তিনি স্থানীয় বিএনপির সাবেক নেতা ছিলেন, মোস্তফার ঘেরে কোন মালিকানা নেই। কিন্তু ঘেরের মাছ কে বা কারা লুট করে নিয়েছে তা তিনি জানেন না। এ কথা বলার সময় তার সঙ্গে থাকা অপর একজন জানান, ঘের মালিক মোস্তফা যদি বেশি বারাবাড়ি করে তাহলে তার লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দেন। মাছ লুটের ঘটনার নেপথ্যে থাকা ওই অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন জানান, ঘেরে মোস্তফা মাছ ছাড়লেও তার কোন জমি নেই। থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ আমাদের মাছ ধরে নিয়ে যেতে বলেছে। তবে গভীর রাতে কে বা কারা মাছ লুট করেছেন তা তার জানা নেই বলে জানান।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ এসেছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। সত্যতা যাচাই করে আইনানুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।