ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুর আগে জাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে দফায় দফায় পেটানো হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুর আগে কয়েক দফায় মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে মারধর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

নিহত শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেট (প্রান্তিক গেট) এলাকায় শামীম মোল্লা পিটুনির শিকার হন। এরপর সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ প্রক্টর অফিসে আনা হয় বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এরপর সেখান থেকে বিনা বাধায় শামীমকে পাশের নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যান ‘কতিপয় ব্যক্তি’। সেখানে আরেক দফায় মারধরের শিকার হন শামীম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯তম ব্যাচের) ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা ক্যাম্পাসের প্রান্তিক গেটে গণপিটুনির শিকার হন। এরপর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বুধবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সেখানে তাকে ‘কতিপয় ব্যক্তি’ মারধর করে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খবর পেয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমসহ প্রক্টরিয়াল টিম সদস্যেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে আহত অবস্থায় শামীমকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর অফিসের একটি কক্ষে রাখা হয়। এ সময় আশুলিয়া থানা-পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোর করে শামীমকে পাশে অবস্থিত নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যান।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তা অফিস থেকে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সরিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ করে দেন প্রক্টর। পরে গেট ভেঙে কয়েকজন ভেতরে ঢুকে শামীমকে আবারও মারধর করে। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টায় পুলিশ এসে জানায়, শামীমের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়ছে। এরপর রাত ৮টার দিকে শামীমকে নিরাপত্তা দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়া। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মোল্লার মৃত্যু হয়েছে।

আশুলিয়ায় থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আহত অবস্থায় শামীমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এদিকে, এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেকোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

মৃত্যুর আগে জাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে দফায় দফায় পেটানো হয়

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুর আগে কয়েক দফায় মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে মারধর করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

নিহত শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেট (প্রান্তিক গেট) এলাকায় শামীম মোল্লা পিটুনির শিকার হন। এরপর সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ প্রক্টর অফিসে আনা হয় বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এরপর সেখান থেকে বিনা বাধায় শামীমকে পাশের নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যান ‘কতিপয় ব্যক্তি’। সেখানে আরেক দফায় মারধরের শিকার হন শামীম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯তম ব্যাচের) ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা ক্যাম্পাসের প্রান্তিক গেটে গণপিটুনির শিকার হন। এরপর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বুধবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে সেখানে তাকে ‘কতিপয় ব্যক্তি’ মারধর করে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খবর পেয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমসহ প্রক্টরিয়াল টিম সদস্যেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে আহত অবস্থায় শামীমকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর অফিসের একটি কক্ষে রাখা হয়। এ সময় আশুলিয়া থানা-পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোর করে শামীমকে পাশে অবস্থিত নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যান।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তা অফিস থেকে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সরিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ করে দেন প্রক্টর। পরে গেট ভেঙে কয়েকজন ভেতরে ঢুকে শামীমকে আবারও মারধর করে। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টায় পুলিশ এসে জানায়, শামীমের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়ছে। এরপর রাত ৮টার দিকে শামীমকে নিরাপত্তা দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়া। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মোল্লার মৃত্যু হয়েছে।

আশুলিয়ায় থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আহত অবস্থায় শামীমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এদিকে, এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেকোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।