ভাঙা সেতু নদীতে পড়ে আছে, দেখতে দেখতে ৪ বছর পার
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৫৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে
নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ। কাজ শেষ হতে না হতেই সেতুর গোড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়। এ কারণে বর্ষার প্রবল স্রোতে পিলার আলগা হয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটি। ভোগান্তিতে পড়ে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ। চার বছর আগে ভেঙে পড়া সেতুটির অবস্থান টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের ভাতকুড়া গ্রামের বৈরান নদীর ওপর।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নামমাত্র সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এলজিইডি বিষয়টি দেখেও এড়িয়ে গেছে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও কাজে আসেনি। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর পরই সেতুর গোড়া থেকে বালু উত্তোলন করে একটি চক্র। বালু উত্তোলন করায় সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পানির স্রোতে মাঝখানের পিলার আলগা হয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
ধনবাড়ী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্যমতে, পাইস্কা ইউনিয়নের বৈরান নদীর ওপর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালে শেষ হয় নির্মাণকাজ। কাজটি পায় স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভাতকুড়া গ্রাম দিয়ে বয়ে গেছে বৈরান নদী। শুকনা মৌসুম হওয়ায় নদীতে কোমরসমান পানি। পানিতে ভাসছে কচুরিপানা। নদীতে ভাঙা সেতুর অংশগুলো পড়ে আছে। নদী পারাপারের কোনো ব্যবস্থা নেই। বালু উত্তোলনের ফলে পাড়ের বসতবাড়ি ও কৃষিজমি নদীতে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার লোকজনের বেশির ভাগই কৃষিজীবী। উৎপাদিত পণ্যগুলো উপজেলা শহরে নিতে হলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এতে অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়।
ভাতকুড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্মাণের বছর দেড়েক পরই ভেঙে পড়ে সেতুটি । এই সেতু হয়ে মাত্র ১০ মিনিটে উপজেলা শহরে যাওয়া যেত। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন পথ ঘুরে উপজেলা শহরে যেতে হয়। এতে দুর্ভোগের শিকার হয় গ্রামবাসী।’
স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত আলী ও শিউলী বেগমের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোনো গুরুত্ব দেন না। চার বছর ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। দুই পাড়ের যোগাযোগ সচল রাখতে আরেকটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।
বাড়ির আঙিনা ভেঙে নদীতে চলে গেছে শমছের আলী, নেপাল চন্দ্র সরকার ও ঠান্ডু মিয়ার। তারা বলেন, বর্ষা এলেই ভিটেবাড়ি ভেঙে নদীতে চলে যায়। এভাবে ভাঙতে থাকলে নিঃস্ব হওয়ার আশঙ্কা তাদের।
ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা জানান, ওই সেতুর পূর্ব পাড়ে ভাাতকুড়া এবং পশ্চিম পাড়ে দরিচন্দবাড়ী গ্রাম। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ সেতু দিয়ে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ চলাচল করতেন। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন তারা।
এলজিইডির ধনবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।