ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি নিস্কাশন টিআরএম চালুর দাবি সংগ্রাম কমিটির

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবি

শহিদুল ইসলাম দইচ, যশোর
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:২০:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগ্রাম কমিটি।

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জলাবদ্ধ মশিয়াহাটী কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘ ৪৪ বছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার। ভবদহ স্লুইস গেট প্রস্তাবসহ নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ এর কারণ। এই জনপদে ভবদহ স্লুইস গেট একটি মরণ ফাঁদ, এর কোনও কার্যকারিতা এবং পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতাও নেই। পাম্পের মাধ্যমে সেচ প্রকল্প তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ২০০ থেকে ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও সুগভীর নদী হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রশস্ততা ১৫ থেকে ২৫ ফুট, আর নদী ভরাট হয়ে গেছে। গত ৪৪ বছরে সংস্কারের নামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা ও ঠিকাদার চক্রের সিন্ডিকেটের লুটপাটের সুবিধার্থেই তা করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জলাবদ্ধতাদূরীকরণে জনগণ উদ্ভাবিত টিআরএম প্রকল্প গণআন্দোলনে গৃহীত হলেও বিগত সরকার ২০১২ সালে ‘সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলার’ অজুহাতে বাতিল করে দেয়।

এই জনপদের ৫০-৬০টি গ্রাম ইতোমধ্যে ডুবে গেছে দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, মণিরামপুর, কেশবপুর বা অভয়নগর শুধু নয়, জলাবদ্ধতা বিস্তৃত হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর শহর পর্যন্ত।

আমরা বলেছি ,যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মোহনা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী অববাহিকার ৪ শতাধিক গ্রাম আবাদ ফসল, বসত বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবরখানা, শ্মশান, ব্যবসা-বাণিজ্য পানির তলে চলে যাবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারংবার স্বারকলিপি প্রদান, অনুরোধ উপরোধ করলেও লুটেরা সিন্ডিকেটের স্বার্থে আমাদের কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। উপরন্তু দুর্গত শত শত নারী পুরুষকে লাঠিপেটা করে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। যে বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা বলে আসছিলাম সে ঘটনাই ঘটে চলেছে।

নেতৃবৃন্দ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে জরুরি কর্মসূচির আওতায় টিআরএম চালু, আমডাঙ্গা খাল দ্রুত সংস্কার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবসহ সিন্ডিকেটের বিচারের দাবি জানান।

উল্লিখিত দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ৫ অক্টোবর ভবদহ দিবসে সারাদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ার দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালী।

বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, অনিল বিশ্বাস, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

আরও উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম কমিটির স্থানীয় সংগঠক শিবপদ বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, সুকৃতি বিশ্বাস,উৎপল বিশ্বাস,শেখর বিশ্বাস,মহির উদ্দিন,রাজু আহমেদ, আজিজুর রহমান প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

পানি নিস্কাশন টিআরএম চালুর দাবি সংগ্রাম কমিটির

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবি

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:২০:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে সংগ্রাম কমিটি।

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জলাবদ্ধ মশিয়াহাটী কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘ ৪৪ বছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার। ভবদহ স্লুইস গেট প্রস্তাবসহ নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ এর কারণ। এই জনপদে ভবদহ স্লুইস গেট একটি মরণ ফাঁদ, এর কোনও কার্যকারিতা এবং পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতাও নেই। পাম্পের মাধ্যমে সেচ প্রকল্প তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ২০০ থেকে ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও সুগভীর নদী হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রশস্ততা ১৫ থেকে ২৫ ফুট, আর নদী ভরাট হয়ে গেছে। গত ৪৪ বছরে সংস্কারের নামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা ও ঠিকাদার চক্রের সিন্ডিকেটের লুটপাটের সুবিধার্থেই তা করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জলাবদ্ধতাদূরীকরণে জনগণ উদ্ভাবিত টিআরএম প্রকল্প গণআন্দোলনে গৃহীত হলেও বিগত সরকার ২০১২ সালে ‘সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলার’ অজুহাতে বাতিল করে দেয়।

এই জনপদের ৫০-৬০টি গ্রাম ইতোমধ্যে ডুবে গেছে দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, মণিরামপুর, কেশবপুর বা অভয়নগর শুধু নয়, জলাবদ্ধতা বিস্তৃত হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর শহর পর্যন্ত।

আমরা বলেছি ,যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মোহনা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী অববাহিকার ৪ শতাধিক গ্রাম আবাদ ফসল, বসত বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবরখানা, শ্মশান, ব্যবসা-বাণিজ্য পানির তলে চলে যাবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারংবার স্বারকলিপি প্রদান, অনুরোধ উপরোধ করলেও লুটেরা সিন্ডিকেটের স্বার্থে আমাদের কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। উপরন্তু দুর্গত শত শত নারী পুরুষকে লাঠিপেটা করে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। যে বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা বলে আসছিলাম সে ঘটনাই ঘটে চলেছে।

নেতৃবৃন্দ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে জরুরি কর্মসূচির আওতায় টিআরএম চালু, আমডাঙ্গা খাল দ্রুত সংস্কার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবসহ সিন্ডিকেটের বিচারের দাবি জানান।

উল্লিখিত দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ৫ অক্টোবর ভবদহ দিবসে সারাদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ার দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালী।

বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, অনিল বিশ্বাস, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

আরও উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম কমিটির স্থানীয় সংগঠক শিবপদ বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, সুকৃতি বিশ্বাস,উৎপল বিশ্বাস,শেখর বিশ্বাস,মহির উদ্দিন,রাজু আহমেদ, আজিজুর রহমান প্রমুখ।