বরিশালে শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ২০

শাহ জালাল, বরিশাল
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বরিশালে কোটা বিরোধী শীক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচী নিয়ে আদালত প্রাঙ্গনে যাওয়র পথে পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় তিন সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ বহু সংখ্যক আন্দোলনকারীদের আটক করেছে।

পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির জানিয়েছেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে তাদের পরিচয় জেনে ছেড়ে দেয়া হবে। সাধারন মানুষের ভয়ের কিছু নেই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যাদেরকে দোষী মনে হবে তাদেরকেই আটক করা হবে বলেও জানান তিনি।

গণহত্যার বিচার, গণ গ্রেপ্তার বন্ধ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নয় দফা মেনে নেওয়ার দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ নামক শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাতে সাংবাদিক সহ ১০-১৫ জন আহত হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার পর সড়ক থেকে দুই ছাত্রী সহ ১১ জনকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে। বুধবার সকালে নগরের সদর রোড ও ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকা জুড়ে এ ঘটনা ঘটে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল থেকে পুলিশ বাহিনী বরিশাল নগরের প্রধান সড়কগুলো আটকে রাখে। নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তারা দাবি আদায়ে সুশৃঙ্খলভাবে নগরের ফকিরবাড়ি রোড থেকে সদর রোডে উঠতে চাইলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। এরপরও বাঁধা উপেক্ষা করে তারা অশ্বিনী কুমার হলের সামনে চলে আসলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে তারা আদালত পাড়ার সামনের সড়কে গেলে সেখানেও পুলিশ বাধা দেয় এবং ১০-১১ জনকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা কোনো ধরনের সংঘাতে ছিল না। তারপরও বিনা উস্কানিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং সহপাঠীদের ধরে নিয়ে গেছে।

পুরো নগরী জুড়ে মহানগর পুলিশ, এপিবিএন, রেঞ্জ পুলিশ রন পাহাড়ায় রয়েছে। আন্দোলনের সাথে একাত্মত্তা প্রকাশ করা

বাসদ এর জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, বিরোধী ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা রাস্তা অবরোধ করেছিল। কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এটার সামনেও অবরোধ করেছিল। তারা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের উঠিয়ে দিয়েছি। বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। উপ-পুলিশ কমিশনারের দাবি এখানে বেশ কিছু শিবিরের ছাত্র ছিল। তাদের আটক করা হয়েছে। তারা তবে এতে ভিন্নমত জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর বরিশাল জেলার আহŸায়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছিল। আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা বাসদের জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হামলার শিকার শিক্ষার্থী মৌসুমি জানিয়েছেন, পুলিশ নিজেদের দোষ ঢাকতে জামায়াত শিবিরের তকমা লাগানোর চেষ্টা করছে। পুরুষ পুলিশরা এসে আমাদের সবাইকে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছে। কাউকে বাদ দেয়নি, চুল ধরে লাঠিপেটা করছে। যদিও কোতোয়ালি থানা পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন,ঘটনাস্থলে নারী পুলিশ সদস্যরা ছিল। তারা নারীদের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছে।


প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ী রোড থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। তখন পুলিশ লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনার ছবি ধারণ করতে যাওয়া দৈনিক যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ, যমুনাা টিভির ক্যামেরা পার্সন হৃদয়, তুহিন সহ অন্তত ৬ সাংবাদিক পুলিশি লাঠিপেটার শিকার হন এবং আহত হন।

লাঠিপেটার শিকার সাংবাদিকরা জানান, বিনা উস্কানিতে উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাতের নেতৃত্বে পুলিশ আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। এমনকি পুলিশের ধাওয়ায় সড়কে পরে আহত হওয়া সাংবাদিক শামীম আহমেদও বাদ যায়নি লাঠিপেটা থেকে। ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকরা এর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদও জানালে পুলিশ ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে তাৎক্ষণিক জানানো হয়। তিনি নিজে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানালে সাংবাদিকরা আহতদের নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য চলে যায়।

এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাড়া পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমন্বায়ক হুজাইফা রহমান জানান, ১ জন প্রতিবন্ধী পথচারী সহ পুলিশ ১১ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। ওই প্রতিবন্ধী সহ ৫ জনকে কিছুক্ষণ আগে ছেড়েছে। বাকি ৬ শিক্ষার্থী এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

ঘন্টাখানেক পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে ওই এলাকায় সীমিত যান চলাচল শুরু হয়। পুরো নগরী জুড়ে মহানগর পুলিশ, এপিবিএন, রেঞ্জ পুলিশ রন পাহাড়ায় রয়েছে।

আন্দোলনের সাথে একাত্মত্তা প্রকাশ করা বাসদ এর জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার তানভির আরাফাত বলেন, কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। এমনকি গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। বিশৃংখলা ঠেকাতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয় এবং কয়েকজনকে আটক করার কথাও জানান তিনি।

এদিকে পুরো মহানগরী ও সন্নিহিত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা খুবই দুর্বল । গণমাধ্যম কর্মীরা বার্তা প্রেরনে চরম ভেগান্তির কবলে। বরিশাল মহানগরী ও সন্নিহিত এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বরিশালে শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ২০

সংবাদ প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

বরিশালে কোটা বিরোধী শীক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচী নিয়ে আদালত প্রাঙ্গনে যাওয়র পথে পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় তিন সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ বহু সংখ্যক আন্দোলনকারীদের আটক করেছে।

পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির জানিয়েছেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে যাদের বয়স ১৮ বছরের নীচে তাদের পরিচয় জেনে ছেড়ে দেয়া হবে। সাধারন মানুষের ভয়ের কিছু নেই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যাদেরকে দোষী মনে হবে তাদেরকেই আটক করা হবে বলেও জানান তিনি।

গণহত্যার বিচার, গণ গ্রেপ্তার বন্ধ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নয় দফা মেনে নেওয়ার দাবিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ নামক শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাতে সাংবাদিক সহ ১০-১৫ জন আহত হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার পর সড়ক থেকে দুই ছাত্রী সহ ১১ জনকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে। বুধবার সকালে নগরের সদর রোড ও ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকা জুড়ে এ ঘটনা ঘটে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল থেকে পুলিশ বাহিনী বরিশাল নগরের প্রধান সড়কগুলো আটকে রাখে। নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তারা দাবি আদায়ে সুশৃঙ্খলভাবে নগরের ফকিরবাড়ি রোড থেকে সদর রোডে উঠতে চাইলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। এরপরও বাঁধা উপেক্ষা করে তারা অশ্বিনী কুমার হলের সামনে চলে আসলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে তারা আদালত পাড়ার সামনের সড়কে গেলে সেখানেও পুলিশ বাধা দেয় এবং ১০-১১ জনকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা রাষ্ট্রবিরোধী কিংবা কোনো ধরনের সংঘাতে ছিল না। তারপরও বিনা উস্কানিতে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং সহপাঠীদের ধরে নিয়ে গেছে।

পুরো নগরী জুড়ে মহানগর পুলিশ, এপিবিএন, রেঞ্জ পুলিশ রন পাহাড়ায় রয়েছে। আন্দোলনের সাথে একাত্মত্তা প্রকাশ করা

বাসদ এর জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, বিরোধী ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা রাস্তা অবরোধ করেছিল। কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এটার সামনেও অবরোধ করেছিল। তারা পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের উঠিয়ে দিয়েছি। বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। উপ-পুলিশ কমিশনারের দাবি এখানে বেশ কিছু শিবিরের ছাত্র ছিল। তাদের আটক করা হয়েছে। তারা তবে এতে ভিন্নমত জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর বরিশাল জেলার আহŸায়ক ডা. মনীষা চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছিল। আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা বাসদের জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

হামলার শিকার শিক্ষার্থী মৌসুমি জানিয়েছেন, পুলিশ নিজেদের দোষ ঢাকতে জামায়াত শিবিরের তকমা লাগানোর চেষ্টা করছে। পুরুষ পুলিশরা এসে আমাদের সবাইকে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছে। কাউকে বাদ দেয়নি, চুল ধরে লাঠিপেটা করছে। যদিও কোতোয়ালি থানা পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন,ঘটনাস্থলে নারী পুলিশ সদস্যরা ছিল। তারা নারীদের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করেছে।


প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১১টার দিকে বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ী রোড থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। তখন পুলিশ লাঠিপেটা করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনার ছবি ধারণ করতে যাওয়া দৈনিক যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ, যমুনাা টিভির ক্যামেরা পার্সন হৃদয়, তুহিন সহ অন্তত ৬ সাংবাদিক পুলিশি লাঠিপেটার শিকার হন এবং আহত হন।

লাঠিপেটার শিকার সাংবাদিকরা জানান, বিনা উস্কানিতে উপ-কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাতের নেতৃত্বে পুলিশ আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। এমনকি পুলিশের ধাওয়ায় সড়কে পরে আহত হওয়া সাংবাদিক শামীম আহমেদও বাদ যায়নি লাঠিপেটা থেকে। ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকরা এর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদও জানালে পুলিশ ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে তাৎক্ষণিক জানানো হয়। তিনি নিজে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানালে সাংবাদিকরা আহতদের নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য চলে যায়।

এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাড়া পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমন্বায়ক হুজাইফা রহমান জানান, ১ জন প্রতিবন্ধী পথচারী সহ পুলিশ ১১ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। ওই প্রতিবন্ধী সহ ৫ জনকে কিছুক্ষণ আগে ছেড়েছে। বাকি ৬ শিক্ষার্থী এখনও পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

ঘন্টাখানেক পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে ওই এলাকায় সীমিত যান চলাচল শুরু হয়। পুরো নগরী জুড়ে মহানগর পুলিশ, এপিবিএন, রেঞ্জ পুলিশ রন পাহাড়ায় রয়েছে।

আন্দোলনের সাথে একাত্মত্তা প্রকাশ করা বাসদ এর জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীরা একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বেধড়ক লাঠিচার্জে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার অভিযোগ করে তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেবারও দাবি জানান। আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্র্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরন কোন সময় কাম্য নয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার তানভির আরাফাত বলেন, কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। এমনকি গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। বিশৃংখলা ঠেকাতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয় এবং কয়েকজনকে আটক করার কথাও জানান তিনি।

এদিকে পুরো মহানগরী ও সন্নিহিত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা খুবই দুর্বল । গণমাধ্যম কর্মীরা বার্তা প্রেরনে চরম ভেগান্তির কবলে। বরিশাল মহানগরী ও সন্নিহিত এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল রয়েছে।