পৃথিবীর সব থেকে ছোট চিকিৎসক, জানেন কে তিনি?
- সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৭:০০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
গণেশ বারাইয়া। উচ্চতা তিন ফুট চার ইঞ্চি। উচ্চতার বাধাকে আমলে না নিয়ে ইচ্ছা এবং স্বপ্নকে নিয়ে এগিয়ে যান। সেই স্বপ্নে ভর করে চিকিৎসক হয়েছেন তিনি। পৃথিবীর ‘সব থেকে খর্বকায়’ চিকিৎসক গণেশ বারাইয়া।
গণেশ ভারতের গুজরাতের বাসিন্দা। তার উচ্চতা কম, তাই শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে । শরীরে ৭২ শতাংশে তার প্রভাব পড়েছে। কিন্তু কিছুই আমল দেননি গণেশ।
খর্বকায় হওয়ায় পেশাগত জগও একাধিক বাধা। অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন গণেশ। হয়েছেন বৈষম্যের শিকার। তার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন অনেকে। সব কিছুর মোকাবিলায় করেই আজ সফল গণেশ।
এক সাক্ষাৎকারে গণেশ জানিয়েছিলেন, লোকজনের কটাক্ষই তাকে আারও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তার জেদ বাড়িয়েছে। সব কিছু ভুলে সামনের দিকে সমানতালে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে ৮৮ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করেন গণেশ। ডাক্তারির প্রবেশিকা নিট-এ ২৩৩ নম্বরে ছিলেন তিনি। প্রথমে গুজরাত সরকার তাকে ডাক্তারি পড়ার অনুমতি দেয়নি। গণেশ ভেঙে না পড়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। ২০১৮ সালে সেই মামলা তিনি জেতেন।
২০১৯ সালে ডাক্তারিতে ভর্তি হন গনেশ। চলতি বছর এমবিবিএস পাশ করেছেন। ভাবনগরের একটি হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শুরু করছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গণেশ বলেন, ডাক্তারির প্রবেশিকা নিটও পাশ করে মবিবিএসে ভর্তির আবেদনপত্র জমা করি। কিন্তু আমার উচ্চতা কম হওয়ায় মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া তা খারিজ করে দেয়।
মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তরফ থেকে গণেশকে বলা হয়েছিলো, গুরুতর অসুস্থ কোন রোগী হাসপাতালে এলে, সেই পরিস্থিতি তিনি সামালাতে পারবেন না। এখানে তার উচ্চতাই বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ করবেন, তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তার স্কুল নীলকণ্ঠ বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে।
গণেশ আরও জানান, প্রধানশিক্ষকের পরামর্শ অনুযায়ী জেলাশাসক এবং গুজরাতের শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করেন তিনি। ভাবনগরের জেলাশাসকের পরামর্শে তিনি গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
গণেশের সাথে মামলা করেছিলেন আরও দুই প্রার্থী। তারাও বিশেষভাবে সক্ষম। গুজরাত হাইকোর্টে মামলায় হেরে যান গণেশরা। এরপর দ্বারস্থ হন সুপ্রিম কোর্টে।
এরপর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, এমবিবিএস পড়তে পারবেন তিনি। ততদিনে ওই বছরের জন্য ডাক্তারি ভর্তি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ কারণেই ২০১৯ সালে ভাবনগরের মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়তে ভর্তি হন গণেশ।
গণেশ যখন হাসপাতালের ওয়ার্ডে পরিদর্শনে বের হন অনেক সময় বিস্মিত হন তারা। তখন রোগীরা ভাবেন, কোন শিশু হয়তো চিকিৎসকের পোশাক পরে এসেছেন। পরে গণেশ আশ্বস্ত করলে বিষয়টি বুঝতে পারেন।
গণেশ জানান, প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর রোগীরা তার সঙ্গে ভালভাবে মিশে যান। গল্পগুজবও করেন। তার চিকিৎসায় ভরসাও রাখেন। তবে প্রথম দেখার পর রোগীদের সেই ‘ধাক্কা’ খাওয়া এখন সয়ে গেছে গণেশের। কোন কিছুতে কান না দিয়ে নিজের কাজটাই শুধু করে যান তিনি।