ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি

পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়ম

দেবব্রত দত্ত
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৩২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলা টাইমস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য গণকটুলী সিটি কলোনিতে ফ্ল্যাট-রুম বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কর্মরত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নামে বরাদ্দ না দিয়ে অদৃশ্য ইশারায় চিহ্নিত মাদককারবারি ও মাদক মামলার আসামিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এসব ফ্ল্যাট। যাদের নামে এসব ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তারা কেউই ক্ষতিগ্রস্ত নন। এমনও অভিযোগ রয়েছে অনেক পরিবার কৌশলে দু’টি ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া ও ভোগ-দখলকারীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ নিয়ে সিটি কলোনিতে বেশ কিছুদিন ধরে দু’টি গ্রুপের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জানা যায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার হাজারীবাগের গণকটুলি সিটি কলোনিতে ডিএসসিসিতে কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিটি পরিবারের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিতে বিভিন্ন ফ্ল্যাট ও রুম বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গণকটুলি সিটি কলোনিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বরাদ্দ যে ফ্ল্যাটগুলো দেয়া হয়েছে তাতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সিটি কলোনির ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী স্বপন প্রামাণিক জানান, গণকটুলি সিটি কলোনির রাম মন্দিরের পেছনে যাদেরকে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না, তাদের কারও ঘর ভাঙ্গা হয়নি। তারা হলো- কলোনির চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী ও মাদক মামলার আসামি। তারা ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে একেক ফ্যামিলিতে দুই রুমের ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছে। যাদের ডিএসসিসিতে চাকরি রয়েছে, তাদের ঘর ভাঙা হয়েছে, তারাই মূলত: ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ জন। তারাই ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত।

জানা যায়, গণকটুলি সমাজকল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও ধিরেস চন্দ্র দাস তাদের প্রত্যেকের আগের বিল্ডিংয়ের উপর-নিচেও ঘর বা ফ্ল্যাট রয়েছে। অথচ তারা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে নতুনভাবে গড়ে ওঠা ভবনে একেকজন ৪টা করে ঘর পেয়েছে। ডিএসসিসিতে কাজ না করলেও তাদের আত্মীয়-স্বজনের প্রতিটি পরিবারকে থাকার জন্য ভুয়া নামে তিনটা করে দুইটা করে ঘর বরাদ্দ পাইয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তাদের চাকরি নিয়েও নানা সমস্যা রয়েছে। বহিরাগত ও স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও বনরাজ দাস নতুন করে ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন। তিনি আগের পুরনো বিল্ডিংয়ে দুইটা ঘর পেয়েছেন। ওই বিল্ডিংয়ের নিচেও তার একটা ঘর রয়েছে। রাম মন্দিরের পেছনে গড়ে তোলা ভবনেও নিজের নামে দুটি ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।

গৃহহীন ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জানান, যারা এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত নীরিহ পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ডিএসসিসিতে কর্মরত ও তাদের ঘর ভাঙায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য ফ্ল্যাট বা রুম বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হোক। একই সাথে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে গণকটুলি সমাজ কল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ অন্যান্য পরিবারের যারা একাধিক ফ্ল্যাট বা ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে এবং তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএসসিসি প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন গণকটুলি সিটি কলোনির ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী ও কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি

পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের ফ্ল্যাট বরাদ্দে অনিয়ম

সংবাদ প্রকাশের সময় : ০৪:৩২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

ঢাকা দক্ষিণ সিটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য গণকটুলী সিটি কলোনিতে ফ্ল্যাট-রুম বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কর্মরত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নামে বরাদ্দ না দিয়ে অদৃশ্য ইশারায় চিহ্নিত মাদককারবারি ও মাদক মামলার আসামিদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এসব ফ্ল্যাট। যাদের নামে এসব ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তারা কেউই ক্ষতিগ্রস্ত নন। এমনও অভিযোগ রয়েছে অনেক পরিবার কৌশলে দু’টি ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া ও ভোগ-দখলকারীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ নিয়ে সিটি কলোনিতে বেশ কিছুদিন ধরে দু’টি গ্রুপের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জানা যায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার হাজারীবাগের গণকটুলি সিটি কলোনিতে ডিএসসিসিতে কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিটি পরিবারের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিতে বিভিন্ন ফ্ল্যাট ও রুম বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গণকটুলি সিটি কলোনিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বরাদ্দ যে ফ্ল্যাটগুলো দেয়া হয়েছে তাতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সিটি কলোনির ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী স্বপন প্রামাণিক জানান, গণকটুলি সিটি কলোনির রাম মন্দিরের পেছনে যাদেরকে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না, তাদের কারও ঘর ভাঙ্গা হয়নি। তারা হলো- কলোনির চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী ও মাদক মামলার আসামি। তারা ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করে একেক ফ্যামিলিতে দুই রুমের ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছে। যাদের ডিএসসিসিতে চাকরি রয়েছে, তাদের ঘর ভাঙা হয়েছে, তারাই মূলত: ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ জন। তারাই ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত।

জানা যায়, গণকটুলি সমাজকল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও ধিরেস চন্দ্র দাস তাদের প্রত্যেকের আগের বিল্ডিংয়ের উপর-নিচেও ঘর বা ফ্ল্যাট রয়েছে। অথচ তারা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে নতুনভাবে গড়ে ওঠা ভবনে একেকজন ৪টা করে ঘর পেয়েছে। ডিএসসিসিতে কাজ না করলেও তাদের আত্মীয়-স্বজনের প্রতিটি পরিবারকে থাকার জন্য ভুয়া নামে তিনটা করে দুইটা করে ঘর বরাদ্দ পাইয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তাদের চাকরি নিয়েও নানা সমস্যা রয়েছে। বহিরাগত ও স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও বনরাজ দাস নতুন করে ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন। তিনি আগের পুরনো বিল্ডিংয়ে দুইটা ঘর পেয়েছেন। ওই বিল্ডিংয়ের নিচেও তার একটা ঘর রয়েছে। রাম মন্দিরের পেছনে গড়ে তোলা ভবনেও নিজের নামে দুটি ফ্ল্যাট বাগিয়ে নিয়েছেন।

গৃহহীন ভুক্তভোগী পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জানান, যারা এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত নীরিহ পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ডিএসসিসিতে কর্মরত ও তাদের ঘর ভাঙায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য ফ্ল্যাট বা রুম বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হোক। একই সাথে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে গণকটুলি সমাজ কল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ অন্যান্য পরিবারের যারা একাধিক ফ্ল্যাট বা ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে এবং তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএসসিসি প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন গণকটুলি সিটি কলোনির ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী ও কর্মরত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।